Thikana News
২৪ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কেন এত ঘোরপ্যাঁচ

কেন এত ঘোরপ্যাঁচ
কী হচ্ছে, কী হতে চলেছে বাংলাদেশে-এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সকাল-বিকাল পরিস্থিতির ওলট-পালট। বাংলাদেশে প্রতিমুহূর্তে রাজনীতির রং পাল্টাচ্ছে-তার কারণ, তার ধরন নিয়ে মাথা ঘামিয়েও কোনো সঠিক বিশ্লেষণ হাজির করতে পারছেন না রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, রাজনীতি বিশ্লেষক, রাজনীতির বড় বড় পণ্ডিতেরা। খবরের ঘনঘটা। প্রতি ঘণ্টায় একেকটা নতুন সংবাদ জন্ম নিচ্ছে। কোনো একটি বিশেষ সংবাদ ব্যাখ্যা করতে না করতেই আরেকটা বিপরীতধর্মী সংবাদ জন্ম দিচ্ছে।
বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে কানাঘুষা-কে যে কোন চাল চালছে, অনুমান করে উঠতে না উঠতেই আরেক চাল, ট্রাম্প, ওভারট্রাম্প। মনে হচ্ছে যেন ‘অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’। সবাই ছুটছে যেন কী এক ঘোরের মধ্যে। ঘোর কেটে গেলেই স্বপ্নভঙ্গ। প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদাস উদাস কথাবার্তা। এক কথার দশ রকম মানে হাজির হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার কথাবার্তার এক রকম ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। হ্যাঁ-না, ইতিবাচক- নেতিবাচক দুদিকেই নেওয়া যায়।
অন্যদিকে নতুন নতুন দলের আবির্ভাব, কে তার হাল ধরবে, কে পাল তুলবে, কে দাঁড় টানবে, কে দড়ি টানবে-তা নিয়েও অস্পষ্টতা। এদিকে ‘আসল নৌকার’ হাল ধরতে আসছেন নাকি সাবেক রাষ্ট্রপতি, পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ হাওরের বাদশাহ আবদুল হামিদ। তরুণদের নিয়ে দল গড়তে যাচ্ছেন উপদেষ্টা পরিষদের তিন তরুণ তুর্কি মাহফুজ, নাহিদ ও আসিফ। তাদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগের কথাবার্তা নাকি বাতাসে ভাসছে। তবে কথায় বলে, ‘যা রটে, তা কিছু বটে।’ বাংলাদেশে চাঁদের আলোয় যা রটনা, সূর্যালোকে তা-ই ঘটনা। আজ যা গুঞ্জন, কাল তা-ই নিরেট বাস্তব। তবে খেলা যে জমে উঠছে, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কথা হলো, এই খেলাটা হবে কার কার মধ্যেÑদ্বিমুখী না ত্রিমুখী। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে। যুদ্ধ কার সঙ্গে কার, তাও স্পষ্ট নয়। 
এক শিরোনামেই দলগুলোর নাম এবং সম্ভাব্য খেলোয়াড়দের পরিচয় পাওয়া যাবে। সংবাদটি ছাপা হয়েছে ঠিকানার গত ২৯ জানুয়ারি সংখ্যায়। সংবাদটির শিরোনাম, ‘মাহফুজ, নাহিদ ও আসিফের পদত্যাগের কানাঘুষা। বিএনপির সুপার গেমে/জামায়াতের ওভারট্রাম্প’। বিশেষ প্রতিনিধির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ‘নির্বাচন নিয়ে সময়ক্ষেপণের মধ্যে ভিন্ন কিছুর আতঙ্কে বিএনপি। যে কারণে আগামী দিনের ক্ষমতার নিশ্চিত উচ্চাকাক্সক্ষার মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও দলটির শীর্ষ পর্যায়ে। একদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে মুখযুদ্ধ, আরেকদিকে জামায়াতের সঙ্গে এত দিনের মিতালিতে ভাটা। অবিশ্বাসও চরমে। এর জেরে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ ওলট-পালট।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়কদের দল গঠনের বিষয় নিয়েও নানা বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা। তার মধ্যেও বিষয়টি এখনো জনগণের সামনে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি বলে তা নিয়েও অনেক ধোঁয়াশা। তবে জামায়াতে ইসলামী নিঃশব্দে পা ফেলে চলাফেরা করায় তাদের নিয়ে গণতান্ত্রিক পক্ষে বেশি সন্দেহ-অবিশ্বাস। এ কথা ঠিক যে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, একাত্তর নিয়ে বিএনপির যে দায়বদ্ধতা, তা আর কারও নেই। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমান নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা। একজন সেক্টর কমান্ডার এবং বীর উত্তম সম্মাননাপ্রাপ্ত। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের বাইরে তাদের পা রাখার কোনো সুযোগ নেই।
তবে ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা জনমনে কী রকম প্রভাব ফেলেÑসেটাও দেখার বিষয়। এটা আওয়ামী লীগের চালাকি হলেও বিএনপি কীভাবে সামাল দেবে-সেটা অবশ্যই দেখার বিষয়। সব মিলেমিশে শেষ পর্যন্ত জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা এবং তাদের মর্যাদাবোধের আকাক্সক্ষা কতটা পূরণ হবে, কে জানে? এই আকাক্সক্ষা নিয়েই তারা একাত্তর থেকে এ-যাবৎকাল জীবন দিয়ে আসছে, কিন্তু তা আর পূরণ হচ্ছে না। এবার দেখা যাক, জনগণের কতটা প্রাপ্তি ঘটে।

 

কমেন্ট বক্স