মহাসাগরের ওপার হতে
অতি অকস্মাৎ একদিন
চোখে মুখে কণ্ঠে সাগরের মতো বিপুল গভীরতায়
বললে, ভালোবাসি।
খুশিতে খলবল করে উঠল সাগর,
নেচে উঠল জলধি,
গেয়ে উঠল মেঘ আর বাতাস।
অভিভূত বিমূঢ় হলো আমার তনুমন।
ভাষা হারিয়ে গেল মুখের
চোখ হলো ছলছল।
বললে-আজ নিলাম তোমার হাত
আমার হাতে,
ছাড়ব না কোনো দিন জীবনে আর।
ঘুমায়ে রবে আমার বাহুতে তুমি
আমি নির্ঘুম অপলক তাকায়ে রবো
ঘুমন্ত তোমার মুখপানে
হাজার হাজার রাত।
বললে-হৃদয় আর নিজেরে দিয়ে দিলাম তোমায়,
আপাদমস্তক আমি তোমারই তোমার,
জনম জনম জনম ভালোবাসব শুধু তোমায়,
শুধু তোমারেই ভালোবাসিতে যেন
আমি বারে বার জন্মাই।
জোছনা আরো অপরূপ হলো
বেলি ফুলের সুবাস আরো বেড়ে গেল
পাখিদের গান আরো মধুর হলো
নক্ষত্রেরা আরো চঞ্চল হলো
ঘাসেরা আরো সবুজ হলো
মধুযামিনী সুমধুর হলো
আমার ব্যাকুল হৃদয় আরো ব্যাকুল হলো
অধর হলো অস্থির
অস্তরাগের আভায় ভরে গেল কপোল।
সেই মহাসাগরের ওপার হতেই
আরেক দিন বললে-বিদায়!
সাগরের হাহাকার করে উঠল
ঢেউয়েরা কেঁদে উঠল
নক্ষত্রেরা স্থির হয়ে গেল
জোছনা মলিন হয়ে গেল
আমার হৃদয়ের দু’কূল ভেঙে গেল।
আমার গতকাল, বর্তমান কাল, আগামীকাল
জগতের মহাকাল সব কাল একীভূত হয়ে
কেবল একটি কালে রূপায়িত হলো-
মহাকাল-মানে মহামৃত্যু!