Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

পৃথিবী গোল-সেই সূত্র ধরে আবার ‘গণভোট’

পৃথিবী গোল-সেই সূত্র ধরে আবার ‘গণভোট’
পৃথিবী গোলাকার-এ বিদ্যা বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা স্কুলে থাকতেই অর্জন করেছে। বলা হয়, যেখান থেকে মানুষ যাত্রা শুরু করুক, বিশ্ব ভ্রমণ শেষে তার যাত্রার সমাপ্তি ঘটবে ঠিক সেই যাত্রা শুরুর বিন্দুতেই। এটা তো উপমা মাত্র। কিন্তু বাস্তবেও সে রকম ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় সে রকম ঘটনা ঘটতে। একসময় বেলবটম, একসময় স্কিনটাইট। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে আবার সেই সাবেকি স্টাইল।
আবার ‘গণভোট’। গণভোট মানে দেশের ১৮ বছর থেকে ঊর্ধ্ব বয়সী সব নাগরিকের হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে কোনো অ্যাজেন্ডার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা নিজ হাতে নিয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক থেকে রাষ্ট্রপতি হন জিয়াউর রহমান। পরবর্তী সময়ে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও রেফারেন্ডাম বা হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করে দেশ শাসনের পথ বেছে নিয়েছিলেন। হয়েছেন রাষ্ট্রপতি। জিয়া ও এরশাদ হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্র শাসনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করেন।
রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে নিয়ে সবাই বলতেন, বেসামরিক শাসকেরা ওয়াদা ভঙ্গকারী। তারা জনগণকে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও সে প্রতিশ্রুতি ‘শোনার পাথর বাটি’ হয়েই থেকেছে। জনতার স্বপ্ন বা প্রত্যাশা আজ অবধি পূরণ হয়নি। সমালোচকেরা বলেন, অতীতের সব শাসকই গণতন্ত্রের সব রকম শৃঙ্খলমুক্তির কথা বলে একনায়ক শাসনব্যবস্থাই কায়েম করেছেন। দেশে সব সময়ই এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হয়েছে। মানুষ স্বাধীন বাংলাদেশে জীবন দিয়েও সামান্য স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের রক্ত, জীবন, ত্যাগ কোনো ফল এনে দেয়নি। তাদের পর্ন কুটির, ছিন্ন বস্ত্র, অনাহার, অশিক্ষা, চিকিৎসাহীন-পুষ্টিহীন জীবন, খরায়-বন্যায় দুর্ভোগÑসীমাহীন দুর্ভোগের জীবন। ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, রাহাজানি, লুটপাট করে ফল খেয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ শুধু এক আমলের কাহিনি নয়। তিন আমলের কথা। ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং চলমান ২০২৪। সবই এক চেহারারÑকেউ দীর্ঘ সংগ্রাম, কেউ সশস্ত্র লড়াই করে, কেউবা ছাত্র-জনতার নামে। দিন বদলেছে, শাসক বদলেছে, কিন্তু তাদের চরিত্র বদলায়নি। সাধারণ মানুষের অবস্থা পাল্টায়নি। তিন আমলেই কারখানার শ্রমিক, মাঠের কৃষক, কামার, কুমোর, তাঁতি, অতি নিম্ন বর্ণের মানুষ জীবন দিয়েছে। স্বপ্ন দেখেছে একটু সচ্ছল জীবনের। কিন্তু তাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকেছে। ধনীরা আরও ধনী হয়েছে। আর গরিব ও শোষিত শ্রেণি স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট নিয়ে আবার জীবনসংগ্রামে নেমে পড়েছে।
হ্যাঁ-না ভোটের কথা বলতে গিয়ে কত কথা এসে গেল। এবার সেটা হবে কি না, কে জানে। তবে ‘যা রটে, তার কিছুটা তো বটে’। আজ না হলে কাল হয়তো ঘটতেও পারে। গোলাকার পৃথিবীর পথ ধরে বর্তমান ক্ষমতাসীনেরাও ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের ব্যবস্থা করে নিজেদের শাসনক্ষমতাকে হালাল করে নিলে আশ্চর্যের কিছু হবে না। তবে আমাদের দৃঢ়বিশ্বাস, অনেক রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারকে হটিয়ে ছাত্র-জনতা যাদের হাতে দেশের আমানত (শাসনভার) তুলে দিয়েছে, তারা এর খিয়ানত করবেন না। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার করে দেশবাসীকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিয়ে তারা সসম্মানে প্রস্থান করবেন। মানুষ আশাবাদী। জীবনে আশাভঙ্গের শত বেদনা সয়েও আবার আশায় বুক বাঁধে-এবার হয়তো হবে। আমাদেরও প্রার্থনা, কতবার আর মানুষের স্বপ্নভঙ্গ হবেÑএবার তাদের স্বপ্ন যেন পূরণ হয়।
 

কমেন্ট বক্স