বদলে গেছে পুরো বাংলার চেনা শহর বন্দর,
চারিদিকে উত্তাল আনন্দ উচ্ছ্বাস-
জয়জয়কার ছাত্র-জনতার।
এখন শাসিত কথা বলে শাসকের বিরুদ্ধে।
শাসকের কণ্ঠ রুদ্ধ।
এমন এক বৈরী পটভূমিতে শরৎ এল,
নিয়মের হাত ধরে চলে প্রকৃতি নিজস্ব।
বসন্ত ঋতুরাজ, শরৎ রূপের রানি, কন্যা কুমারী।
শরৎ আসে রূপের ডালা সাজিয়ে, মনভোলানো সাজে।
স্বচ্ছ সুনীল আকাশে পেজা মেঘের ভেলা উড়ে উড়ে বেড়ায়।
সাদা বকের সারি দূরদিগন্তে পথ হারায়।
মনের সুখে নাচে-প্রজাপতি, ফড়িং, ফিঙেÑ
শরতের ফুল বেলি, শালুক, পদ্ম, জুঁই, দোলন, চাঁপা, বকুলÑমাধবী, মল্লিকাÑ
মালতির পরে।
শারত প্রভাতে শিউলির মৌমাত ঘ্রাণ কাতান মদির করে।
শরতের আরও কিছু আছে বৈশিষ্ট্য।
কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুল এখনো আছে কিছু অবশিষ্ট।
ভাদ্রের দাবদাহে তাল পাকে।
মা, মাসিরা তালের পিঠের আয়োজনে মাতে।
ধানখেতে, পাকা সোনাঝরা শিষ নুয়ে নুয়ে হাসে।
বাতাসে মৃদঙ্গ বাজে। কৃষকের মনে আশা জাগে।
শরতে ইলিশে-গুঁড়ি বৃষ্টিতে ইলিশ মারার ধুম পড়ে-
বাজার ভরে ইলিশ মাছে।
ভাদরের ভরা নদীর দু’ধারের সাদা কাশফুল-
লাজে কাপে, হেসে হেসে, দুলে দুলে ফিসফিসিয়ে-
চুপি চুপি কথা বলে-
রাতের জোছনা স্মাত ঝিকিমিকি জলে।
আশ্বিনে মা-দুর্গা আসে উৎসবের ঢাক বাজে।
প্রকৃতি হালকা কুয়াশার চাদরে সাজে।
দিন ছোট হতে থাকে, রাত তাড়াতাড়ি নামে।
হালকা হিমেল হাওয়া জানিয়ে দেয় শরতের বিদায়;
হেমন্তের আগমনী।
সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারের জানালায়-
শেষবারের মতো বাংলার শরৎ দেখে;
কে জানে আবার শরৎ আসে কোন বেশে।