Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

শেখ হাসিনা সরকারের বাংলাওয়াশ, ধবলধোলাই, সাবাস লুঙ্গি বাহিনী, গুগলিম্যান, সময়ের কলিজার সন্তান

শেখ হাসিনা সরকারের বাংলাওয়াশ, ধবলধোলাই, সাবাস লুঙ্গি বাহিনী, গুগলিম্যান, সময়ের কলিজার সন্তান


আমি গত ৩০ বছর যাবৎ ক্রিকেট নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বেশি লেখা করেছি। ৭২-৮২ সময়ে ঢাকায় প্রথম বিভাগ উদিতি ক্লাবের অধিনায়ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগেরও অধিনায়ক ছিলাম। ক্রিকেট আমার জান ও প্রাণ। ১৯৬০ সাল থেকে ঢাকার ৪১ নং সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা, অনেক বন্ধু ও আত্মীয়ের মারফত ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের অনেক সামরিক ক্যুর সরাসরি খবর জানা, স্বাধীনতার জেনুইন মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলা, তাদের আক্রোশ-ঘৃণা, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দাপট, আওয়ামী ছাত্রলীগ ও জাসদের গুন্ডামি-মারামারি-দলাদলিতে নিরীহ ছাত্র খুন খুব কাছ থেকে দেখেছি। ৭৪-এ ঢাকার ভূতের বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিককে ঈদের দিন খুন করে হত্যা, ৭৭ সালে এলিফ্যান্ট রোডের মুক্তিযোদ্ধা লুক্কুকে ছাত্রলীগের নেতা আওরঙ্গ ও তার বাহিনী হাতির পুলের মুরগি মিলনদের দ্বারা হত্যা-আমার এই দুই বন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা-এখনো ভুলতে পারি না। নীরব সাক্ষী ছিলাম। লুক্কুর বড় ভাই ওসমান ডানহাতি ভালো ফাস্ট বোলার ছিল, তখনকার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ ছিল। তার ভাই লুক্কু নিহত হওয়ার পর ভয়ে দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে চলে যায়। বর্তমানে নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে। ফোনে আলাপ হলে তাদের কষ্টের কথা বলে-সেই হত্যার বিচার পায়নি। এত খবর জানা সত্ত্বেও কোনো দিন রাজনীতি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে লিখেনি। প্রায় আট বছর আগে ঠিকানায় পঁচাত্তর টু আওরঙ্গ রংবাজদের নিয়ে লিখেছিলাম। পাঠকেরা প্রশংসা করেছিলেন আন্ডারডগ বিপ্লবী ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা-ডিপেন্ডেবল রাজনীতিবিদ। দালালরা বলে থাকে হাসিনা সরকার বারবার দরকার। ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ এত পুরোনো চৌকস খেলোয়াড় রাজনীতিবিদ নিয়ে কীভাবে ইনিংস ডিফিট খেল, বাংলাওয়াশ ভরাডুবি হলো, তার পোস্টমর্টেম সারা বিশ্ব মিডিয়ায় হচ্ছে। আমি ক্রিকেট ও রাজনীতিকে একটু টুইস্ট করে লিখতে চেষ্টা করছি। ৮৩ বিশ্বকাপ ক্রিকেট আন্ডারডগ ভারতের কপিল দেব বাহিনী দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে কীভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেÑআজও তার তর্ক-বিতর্ক চলছেÑকীভাবে সম্ভব। ৮৩ লর্ডস গ্রাউন্ডে ফাইনালে আমিও তার সাক্ষী।
আল্লাহর মাইরÑআল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না। স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনা-শেখের বেটি বলে যার এত অহংকার, গর্ব, দাপট ছিল, আওয়ামী দালালদের বিশ্বাস ছিল কেউ হাসিনা সরকারকে গদি থেকে নামাতে পারবে না। কারণ গত ১৬ বছর যাবৎ যারা এত দাপটে রাজনীতির ময়দানে ফাঁকা মাঠে খেলে গেছে। বিরোধী দল বিএনপি, জামায়াতসহ আরও অনেক দলকে নির্মমভাবে দমন-পীড়ন করে, গুম-খুনের ভয় দেখিয়ে জেলে পুরে শায়েস্তা করে দল ও দেশকে দাপটে শাসন করেছে। কসমেটিক উন্নয়নের গান গেয়েছে দেশকে সিঙ্গাপুর বানিয়েছেÑএত ক্রেডিট সত্ত্বেও আন্ডারডগ ছাত্র-জনতার কাছে ভরাডুবি। হাসিনা বাহিনী পালিয়েছেÑএটাই আল্লাহর মাইর, এখানে প্লেটো-মার্কসবাদ চলে না। র, সিআইএ-কিছুই না।
এই বিপ্লবী ছাত্ররা কারা? গুঁতা মারার সংঘ/ক্লাব, সময়ের সাহসী সন্তান, আমি ভালোবেসে এদেরকে ডাকি গুগলিম্যান বলে। Man For Crisis Silent Killer, Match Maker. ক্রিকেট ইতিহাসে লাখো ক্রিকেটারের মাঝে ভালো জাতের ডানহাতি লেগ স্পিনারদের আবির্ভাব হয়েছে যুগ যুগ ধরে। এটা করা অনেক কঠিন কাজ, চাইলেই গুগলিম্যান হওয়া যায় না। এরা জন্মগত জিনিয়াস। এই উপমহাদেশকে বলা হয় স্পিনারদের কারখানা, অথচ জাত ডানহাতি লেগ স্পিনারদের দেখা বিরল। গুগলিম্যানরা মার খেতে খেতে হঠাৎ এমনভাবে শত্রুর বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ান, প্রতিশোধ-প্রতিরোধ গড়ে তুলে অল্প সময়েই বিপক্ষ দলকে পরাস্ত, ভরাডুবি, বেইজ্জতি করে পরাজিত করেন, মাটিতে মিশিয়ে দেন। দর্শকেরাও গ্যালারিতে বসে বা টিভিতে দেখেও টের পান না কীভাবে গুগলিম্যানরা জয় পেলেন। গুগলিম্যানরা হাতের ম্যাজিক, সাহস, কলিজার খেলায় কখন কী করে বসবেন-এরা প্লেটো-মার্কসবাদ, কোনো থিওরি বা দার্শনিক বা রাজনীতিবিদদের ফলো করে না। এদের কোনো নেতা বা নেত্রী নেই। গুগলিম্যানরা বিশ্বাস করে-আল্লাহ ভরসা, আল্লাহর মাইর শেষ মাইর, Lets Do or Die. মরতে এসেছি মরব গদি থেকে নামাব, গুগলিম্যানরা বারবার জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রমাণ দিয়েছেন-সময়ের সাহসী সন্তান হিসেবে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে। মুক্তিযোদ্ধারা অলরাউন্ডার, বিপ্লবী সন্তান নিয়ে জাতি গর্বিত, যদিও আমাদের ক্রিকেটাররা এখনো কাগজের বাঘ হিসেবে পরিচিত-হঠাৎ জয় পান আর ফুর্তি করেন। বাংলাদেশ-ভারত, বিশ্ব মিডিয়ার পণ্ডিতরা, রাজনীতিবিদরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন এবং কেন পালিয়ে গেলেন-কেউই টের পাননি। পণ্ডিতদের ভবিষ্যদ্বাণী ফর্মুলা পুরো ফেল-তারা সবাই এখন জারি গান এই কী হলো, কেন হলো, কী যে হলো, শুরু হলো, শেষ হলো, হাসিনা পালাল-বুঝতে পারলাম না তো। বাংলাদেশের পণ্ডিতদের, টকশো কর্তাদের শেখ হাসিনার ওপর ওভার কনফিডেন্স ছিল তার গুম-খুন পারফরম্যান্সের ওপর। গত ১৫ বছরে শক্তিশালী বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা, জামায়াতের নেতাকর্মীরাও অনেক হুংকার দিয়ে, ঘোষণা দিয়েও হাসিনা বাহিনীকে পরাজিত করতে পারেননি, গদি থেকে নামাতে পারেননি। শেখ হাসিনার কাছে এই ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সময়ের ব্যাপারÑকিছুই না দমন করতে। কারণ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার লাশ নিয়ে রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা অনেক। পাকিস্তান আমলে ২৪ বছরে হরতাল হয়েছে মাত্র ২১ দিন। শেখ হাসিনার আমলে হরতাল হয়েছে ১৬০ দিন। পাকিস্তান আমলে ২৩ বছরেÑ৭১ বাদেÑআন্দোলনে মানুষ মারা গেছে প্রায় ৮৭ জন। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ এই কদিনে গণ+ছাত্র আন্দোলনে নারী-শিশুসহ মানুষ মারা গেছে প্রায় ১৫৮১ জন। আর আহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি। বাঙালি হয়ে নিজের দেশের হাজার হাজার মানুষ মারার রেকর্ড একমাত্র শেখ হাসিনার। হাসিনা সব আর্মি সরকারের রেকর্ড ভেঙেছেন স্বৈরাচারী হিসেবে।
হাসিনা কেন এই গুগলিম্যানদের কাছে ধরা
যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশিদের নিয়ে দুনিয়ার দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, সৈনিক, টকশোর পণ্ডিত, পাকিদের পণ্ডিতেরা সব সময়ই উপহাস-অবহেলা করতেন বাঙালিদের নিয়ে। বলতেনÑবাংলাদেশিরা দেখতে ছোটখাটো, শারীরিক গঠন দুর্বল, শক্তি নেই, সাহস নেই, মুরগি মার্কা বডি লেঙ্গুয়েজ, কেরানির চাকরি করলেও বসের ভাব দেখায়, অফিসে মি. লেট হিসেবে পরিচিত। একটু দালালি, স্বার্থপর ভাব আছে। কিন্তু এই ছোটখাটো বাংলাদেশিদের মধ্যে বুদ্ধি, জেদ, আক্রোশ, প্রতিবাদ, প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা অন্যান্য জাতির থেকে বেশি, এটা পণ্ডিতেরা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশিরা বিদেশি দর্শন, মন্ত্রতন্ত্র বেশি পছন্দ করে না, ফলো করে না। নিজেরাই নিজেদের স্টাইলে ফর্মুলা তৈরি করে নেয় স্বৈরাচারীকে পতন করার জন্য-এটাই সারা বিশ্বকে অবাক করেছে?
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস গুগলিম্যানদের
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস গুগলিম্যানদের। ১৯৭০ সালের ইলেকশনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৬০ সিটে জয়লাভ করলেও শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। একাত্তরের ৭ মার্চ ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগানো ভাষণ টনিক ‘আর যদি একটা গুলি চলে, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ’... কিন্তু স্বাধীতার কথা বলেননি। ঘোষণা দেননি। বেনিফিট অব ডাউট শেখ মুজিব পেয়েছেন। ৭১-এর ২৬ মার্চ রেডিওতে আমি মেজর জিয়া বলছি-We Revolt, মেজর জিয়াই প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এখন আওয়ামী দালাল সুবিধাবাদী পণ্ডিতদের কথা অনুযায়ী, ৪০০ টাকার বেতনের জিয়ার ঘোষণা দেওয়ার কথা নয়, এটা সত্য। কিন্তু দালাল আওয়ামী পণ্ডিতরা এটা বলেন না শেখ মুজিবুর রহমান কেন সাহস করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না-এর জবাব নেই। তখন আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা বা বড় মাপের ছাত্রনেতারা, খলিফারা এত সুযোগ পেয়েও স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তাদের সেই সাহস ছিল না। স্বাধীনতার ঘোষণা আর সংগ্রাম করা এক জিনিস নয়, তা মেজর জিয়া এবং ইস্ট বেঙ্গলের অন্য অফিসার-সৈনিকেরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখানেই আওয়ামীদের পুরো ব্যর্থতা-পুরো ফেল। আমি একাত্তরের ২৭-৩০ মার্চ বাঁচার জন্য ঢাকা থেকে পালিয়ে প্রথমে জিঞ্জিরার আঁটিবাজারে, পরে নরসিংদী হয়ে সাত দিন হেঁটে সিলেটে পৌঁছাই। যাওয়ার পথে আওয়ামী নেতা এবং অনেক ছাত্রকে দেখেছিÑদিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আশ্রয় খুঁজছেন বাঁচার জন্য। নরসিংদী বাজারের কাছে দেখলামÑবাঙালি সৈনিক ইপিআর কিছু জনগণসহ পাকিদের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন-আমরাও যতটুকু পেরেছি, তাদের সঙ্গে সহায়তা করেছি। হঠাৎ করে পাকি সেভার জেট বিমান থেকে বোম্বিং ফায়ার করে পুরো নরসিংদী বাজার জ্বালিয়ে দেয়, অনেকে আহত হন-আমরা অনেকেই বেঁচে যাই। সেদিন বিকেলের দিকে আবার মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে পাই-সবাই জয় বাংলা বলে, ভরসা পায়, এখন একটা কিছু করতে হবে, যুদ্ধে যেতে হবে, দেশকে স্বাধীন করতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষণাই ছিল মেজর জিয়ার টনিক রেড বুল। এই ৪০০ টাকার মেজর জিয়াই হচ্ছেন Do or Die আবিষ্কারক। ক্রিকেট ইতিহাসে কিছু ব্যাটার আছেন, তারা ডেব্যু টেস্টেই সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি করে সারা বিশ্বকে জানান দেন আমি বর্ণ জিনিয়াস, ড্যাশিং-কাউকে পাত্তা দিই না। ৭৫-এর ৭ নভেম্বর জিয়াকে আবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে হলো জাসদের ইনু এবং কর্নেল তাহের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। ক্রাইসিস মুহূর্তে জিয়া আবার দেশকে বাঁচালেন। জনগণ তাকে ভালোবেসে 3 In One ডাকে। মুক্তিযোদ্ধা+আর্মি চিফ+প্রেসিডেন্ট। অনেকটা ম্যান অব দ্য সিরিজের মতো।
৭৫-এর ১৫ আগস্ট রেডিওতে শুনি, আমি মেজর ডালিম বলছি, স্বৈরাচারী শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। আশ্চর্য হলাম, কয়েকজন Sacked বরখাস্ত আর্মি অফিসার গোলাবারুদ ছাড়া ছয়টা ট্যাংক নিয়ে ৬ দফার হিরোকে হত্যা করে ক্যু সাকসেস। আমি ৩২ নম্বর রোডের পাশেই Ok Sports এর বারান্দায় দাঁড়িয়ে সকালে অনেক কিছু দেখেছি, শেখ জামাল বেঁচে আছে কি না জানার জন্য। সেদিনও আওয়ামী ও ছাত্রনেতারা পালিয়ে জান বাঁচিয়েছেন-এটাই সবচেয়ে বড় দুঃখ। এই বেস্ট Do or Die গুগলিম্যান মুক্তিযোদ্ধারা হচ্ছেন। সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৪ জন বীর উত্তম, প্রায় ২০০ জন বীর বিক্রম এবং ৪০০ জন বীর প্রতীক। এই বীরদের সম্মান দেওয়া হয়েছে ৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের সময়Ñপরের সরকাররা আরও কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানিত করেছে। একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বীর উত্তম এবং সিএসপি অফিসার তৌফিক এলাহি বীর বিক্রম পেেেছন। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের হাতে গোনা কয়েকজন বীর প্রতীক পেয়েছেনÑড্যাশিং ছাত্রনেতারা, খলিফারা কেউ কোনো পদক পাননি। কারণ এরা কেউ সরাসরি যুদ্ধ করেননি, আর যুদ্ধ করলেও খেতাব পাওয়ার মতো ক্রেডিট নেই। গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন স্যাক্রিফাইস বেসিস। তার পরও আমাদের সব মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান। ২০১০ সালে ক্রিকেট ইনফো ১০০ বছরের সারা বিশ্বের লাখো ক্রিকেটারদের মধ্যে বেস্ট অব বেস্ট বেছে নিয়েছে দর্শকদের ভোটাভুটির মাধ্যমে। বেস্ট অব দ্য বেস্ট ১১ জন ক্রিকেটার গ্রেটেস্ট অব অলটাইম স্যার ব্রাডম্যান, গিলক্রিস্ট, লিলি, শেন ওয়ার্নÑঅস্ট্রেলিয়া; স্যার গ্যারি সোবার্স, ম্যালকম মার্শাল, ভিভ রিচার্ড, ব্রায়ান লারাÑওয়েস্ট ইন্ডিজ; জ্যাক হবসÑইংল্যান্ড; শচীন টেন্ডুলকারÑভারত; ওয়াসিম আকরামÑপাকিস্তান। এবার বোঝেন, সেরা একাদশে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চারজন করে থাকলেও ইংল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানের কেবল একজন করে। নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, দ. আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ের কোনো ক্রিকেটারের নাম না দেখে অবাক হলাম। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। এখন বোঝেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবস্থান কোথায়? হিরো হওয়া যায়, কিন্তু গ্রেটেস্ট হওয়া অনেক কঠিন, রেকর্ডই বলে দেয়। অনেক ক্রিকেটার দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েও বেস্ট অব বেস্ট লিস্টে নাম লেখাতে পারেননি, যেমন ভারতের কপিল দেব, পাকিস্তানের ইমরান খান, শ্রীলঙ্কার মুরালিধরন, ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম, তবে এরা ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে বেস্ট গ্রেট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অন্য কয়েকটি দলের কিছু রাজনীতিবিদ, কিছু আমলা, সাংঘাতিক দালাল বাহিনী নিজেদের স্বার্থের জন্য প্রমোশন, টাকা বানানোর জন্য ৭১ জেনুইন হিরোদের রাজাকার বা ডিমোশন দিয়ে জিরো বানাতে চাচ্ছেন। এটা আর কোনো দিন সম্ভব হবে না। কারণ ৭১ জেনুইন হিরোদের নাম কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে সোনার অক্ষরে লেখা হয়ে গেছেÑকোনো দিন শত চেষ্টা করেও তা মোছা যাবে না। আজকালকার ইয়ং জেনারেশন ভালোই করে জানে, কারা আসল, কারা নকল বা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।
একাত্তরের ওরা ১২ জন-আমরা তোমাদের ভুলব না
১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-অধিনায়ক, গুগলিম্যান।
২। তাজউদ্দীন আহমদ-সহ-অধিনায়ক, উইকেটকিপার।
৩। ক্যাপ্টেন মনসুর আলী-সলিড, ডিপ্লেডব্যাল, রাজনীতিবিদ।
৪। মওলানা ভাসানী-খামোশ, গুগলিম্যান।
৫। ছাত্রনেতারা, খলিফারা-সলিড, আপসহীন, রাজনীতিবিদ।
৬। মেজর জিয়া-অ্যাটাকিং, স্বাধীনতার ঘোষক, জেড ফোর্স।
৭। মেজর সফিউল্লাহ বীর উত্তম-এস ফোর্স, সব মুক্তিযোদ্ধা।
৮। মেজর খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম-সুইং, কাটার মাস্টার।
৯। মেজর মঞ্জুর বীর উত্তম-পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে হিরো।
১০। কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম-গুগলিম্যান, সব কাদেরিয়া বাহিনী।
১১। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব কলাকুশলী।
১২। লন্ডনে ৭১ মুক্তিযুদ্ধের কূটনৈতিক ফ্রন্টে মাত্র ৩৫ জন বাঙালি অফিসার ডিপ্লম্যাট। অনেক ডিপ্লম্যাট সুযোগ পেয়ে ইউরোপে থেকেও ডিফেক্ট বা চাকরি ছাড়েননি। স্বাধীন হওয়ার পর এরাই আবার দালালি করে প্রমোশন নিয়েছেন, বস হয়েছেন। কী লজ্জা।
আমার বড় ভাই মহিউদ্দিন আহমদ জায়গীরদার নাইজেরিয়ার লাগোস থেকে পাকিস্তান এমবাসি মাড়ানোর সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে সাহস করে পরিবারের তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে এসে লন্ডনে মুক্তিযুদ্ধের কূটনৈতিক ফ্রন্টে যোগ দেন। তিনি বিচারপতি আবু সায়ীদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেন। বড় ভাইয়ের ডিফেক্ট খবর তখন বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, কলকাতা রেডিওতে প্রচারিত হয়। তার পর থেকেই ঢাকার ৪১ সেন্ট্রাল রোডের বাসায় আমরা জোয়ান চার ভাই ও বাবা-মা ভয়ে দিনরাত কাটাতাম। একদিন হঠাৎ এক পাকিস্তানি মেজর সঙ্গে দুই সিপাই নিয়ে আমাদের বাসায় হাজির। বাবার সঙ্গে মেজরের অনেক তর্কতর্কি হলো। বাবা বললেন, তুমি কোথাকার? উত্তরে সে বলল, লাহোর থেকে এসেছে। বাবা বললেন, তোমার বাবা কি জানেন, তুমি এখন আমার বাসায় কী করছ? যাওয়ার সময় মেজর বলে গেল, প্রয়োজনে বাবাকে মোহাম্মদপুর টর্চার সেলে যেতে হবে। এই টেনশনে বাবাসহ আমরা শেষ। কয়েক দিন পর বিহারি রাজাকার আজিজ আমাকে ধরে নিয়ে গেল সায়েন্স ল্যাবরেটরি টর্চার সেল অফিসে। সেখানে একটা আর্মি জিপে ওঠার সময় আল্লাহর মেহেরবানিতে সাহস করে দৌড়ে পালিয়ে বেঁচে আসি। দেশ স্বাধীন হওয়ায় আমরা সবাই বেঁচে যাই। আমাদের সেসব দিনের টেনশনের কথা এখন লিখে বোঝাতে পারব না। বিচারপতি কালা মানিক লন্ডনে বসে খালি স্টুডেন্ট ফ্রন্ট করেই বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন। ৭১ সালে লন্ডনে হাজার সিলেটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী অনেক সাহায্য করেও এখন অবহেলিত।
৭১-এর জাতীয় কোচ কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী : উপমহাদেশে কর্নেল ওসমানীর যুদ্ধজয় করার কৌশল, অভিজ্ঞতা, সাহস, টেকনিকের রেকর্ড এখনো অনেক আর্মি কলেজে পড়ানো হয়। ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত প্রায় ৩০০ ট্যাংক ও সৈন্য নিয়ে রাতে হঠাৎ পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন সেক্টরে আক্রমণ চালায়। ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ইচ্ছা ছিল যুদ্ধে জয় করে তিনি লাহোরের শামার গার্ডেনে বসে চা খাবেন, বিজয় দেখবেন। কিন্তু এই জয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ান কিছু বাঙালি অফিসার, যেমন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানসহ আরও অনেক বাঙালি সৈনিক। কর্নেল ওসমানীর সামরিক পরিকল্পনায় ১৭ দিনের যুদ্ধে পাকিরা কিছু জায়গায় জয় পায়। সেই যুদ্ধের পর সৈনিক বাঙালিদের সম্মান দিতে শুরু করে পাকিরা। ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট পিন্ডিতে বিজয় দিবসে কর্নেল ওসমানীকে পাক আর্মি ও জনগণ সম্মান, স্যালুট দিয়েছে, তা আমি দেখেছি। কর্নেল ওসমানীর রণকৌশলের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার বিপদে ভারতের সেভেন সিস্টার এবং চিকেন নেক কীভাবে সহজে দখল করা যায়, যার কারণেই স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের কোনো জেনারেলই ভারতকে ভয় পেতেন না। এখন জেনারেলরা ভারতের ভয়ে, বিশেষ করে বিডিআরের ৫৭ জন অফিসারকে হত্যার পর ভারতের প্রেসক্রিপশনেই চলছেন। কেউ কেউ ভারতের দালাল বনে গেছেন। আওয়ামী দালাল পণ্ডিত, টকশো কর্তা, তাদের ইতিহাসবিদেরা বই লিখছেনÑআমি বিজয় দেখেছি, কিন্তু তারা ওসমানীকে দেখেননি। মনে হচ্ছে জেনারেল ওসমানী এখন সিলেটের দয়ামির ও আমার থানা বালাগঞ্জের ইতিহাসে বন্দী। সেলুকাস... কী বলব?
বিদেশি কোচ : ভারতের লে. জে. জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিদের জে. নিয়াজি সারেন্ডার করলে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল এই সারেন্ডারের সময় ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থেকে দেখার। সারেন্ডারের ঠিক আগমুহূর্তে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে রাজাকার আজিজকে ধরতে গেলে ভারতীয় সৈনিক ও পাকিদের মধ্যে একপশলা যুদ্ধ হয়। এ সময় অনেক নাগরিক আহত হন। বিদেশি জার্নালিস্ট, ভারতীয় সাংবাদিকদের আমরা রক্ষা করি। পরে তাদেরকে গাইড করে রমনা পার্কে নিয়ে যাই। জে. ওসমানী কেন সারেন্ডারের সময় অনুপস্থিত ছিলেন-এটা মিলিয়ন ডলারের কোয়েশ্চন। আজকের সাহসী পণ্ডিত DRS নিয়ে জনগণের সাহায্যে সত্য ইতিহাস তুলে ধরেন। আওয়ামী দালালরা ৭১-এ তাদের ব্যর্থতার কারণে জয়ের পুরো ক্রেডিট ভারতকে দিয়ে বাঁচতে চায়।
৭১ ফিজিও : আরচার ব্লাড ঢাকায় আমেরিকান কনস্যুলেট ছিলেন। তিনিই প্রথম সাহস করে পূর্ব পাকিস্তানে জেনোসাইড হচ্ছে বলে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও বিশ্ব মিডিয়ায় খবর পাঠান। এ কারণে হেনরি কিসিঞ্জার আরচারকে FIRE করে দেয়। ৭১ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও তার সরকার পুরোপুরি মার্ডারার পাকিদের পক্ষে ছিল। তার পরও নিক্সন সরকার ভারতের বাঙালি শরণার্থীদের দুর্ভিক্ষ ও বিপদে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং কয়েকটা প্লেন সি-১৩০ দিয়ে বাঙালি কলেরা রোগীদের সাহায্য করেছে। এই খবর ভারতের কোনো পণ্ডিত বা বাংলাদেশের কোনো ইতিহাসবিদ দেননি। পণ্ডিতেরা এ নিয়ে কখনো লেখেননি। স্বীকার করেননি। দালাল পণ্ডিত, আওয়ামী লীগাররা এখনা আমেরিকাকে দালাল বলে যাচ্ছেন, শত্রু বানাচ্ছেন। অথচ এই সুবিধাবাদীদের ছেলেমেয়েরা আসছেন আমেরিকার গ্রিন কার্ড পেতে। এটা বন্ধ করতে হবে।
স্বৈরাচারী হাসিনার বেস্ট অব দ্য বেস্ট দালাল বাহিনী : গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা শুধু দেশ ও বিএনপির অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন, গুম, খুন, লুট করে ক্ষান্ত ছিলেন না। একনায়কতন্ত্র মনমানসিকতার কারণে নিজের দল আওয়ামী লীগেরও তেরোটা বাজিয়েছেন, শেষ করেছেন। স্বৈরাচারী হাসিনা সৎ-যোগ্য নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে যত দুই নম্বরি অযোগ্য লোক, তার নিজের পছন্দের লোক, গুন্ডা, হেলমেট বাহিনী, ব্যাংক লুটেরার দল, লোভী ব্যবসায়ী দালাল, যারা হাসিনাকে বেশি তোষামোদ করতে পারে, ইয়েস আপা ইয়েস স্যার বলতে পারে, এমন দালালদের তিনি মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বানিয়েছেন। হাসিনা গ্রামের কর্মকর্তা, লুঙ্গি বাহিনী, দলের সিনিয়র নেতা কারও কথা শুনতেন না, সম্মান দিতেন না, পাত্তাই দিতেন না। স্বৈরাচারী হাসিনা নিজে অধিনায়ক এবং তিনিই কোচ হিসেবে দল চালাতেন। হাসিনা ছিলেন সবজান্তা অলরাউন্ডার। তার কোচ ও ফিজিও ছিল একমাত্র ভারত ও মোদি। ইদানীং স্বৈরাচারী হাসিনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, মন-মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছিল। তিনি জেনুইন আওয়ামী লীগারদের বাদ দিয়ে মডার্ন জিন্স প্যান্ট, শার্ট পরা ছেলেমেয়েদের, যারা ঠুসঠাস ইংরেজি কথা বলতে পারে, মডার্ন ভাব কিন্তু সাহস নেইÑএসব বহিরাগতকে দলে ভিড়িয়ে বড় বড় পদে বসিয়েছেন। আমরা জানি, খেপের (হায়ার) খেলোয়াড়দের দলের প্রতি, দেশের প্রতি কমিটমেন্ট থাকে কম। এরা পালানোর দল, এরা ভয় পায়। আইপিএল এবং বিপিএলে কিছু বিদেশি খেলোয়াড়ের বেলায় দেখেছি, জয়-পরাজয়ে এদের কোনো টেনশন নেই। খেপের খেলোয়াড়দের নজর ডলারের দিকে।
কাপুরুষ বা ভীরুরা পালায় : জেনুইন রাজনীতিবিদেরা পালায় না-লুটেরা ও খুনিরা পালায়। প্রকৃত রাজনীতিবিদেরা জেলে যেতে চান, শাস্তি পেলেও গর্বিত হন, পরে রাজনীতি করার সুযোগ পান এবং অনেকেই মন্ত্রী-এমপি হয়ে পুরস্কার পান, রেকর্ড সৃষ্টি করেন। যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা ভাসানী এবং অনেক ছাত্রনেতা-খলিফাদের জীবনকাহিনি পড়ে আমরা জেনেছি। কিন্তু স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা কাপুরুষের মতো বোন রেহানাকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন। পরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে গ্রামের মেম্বার এমনকি বায়তুল মোকারম মসজিদের খতিব পর্যন্ত পালিয়ে গিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। হাসিনা ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগকে রেলিগেশন টিম বানিয়েছেন। আবার কবে, কত বছর পরে এই আওয়ামী লীগ বি টিম চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে, সরকার গঠন করতে পারবে, এখন তা দেখার বিষয়। অধিনায়ক হাসিনা এবং তার পরিবারকে বাদ দিয়ে নতুন, ইয়াং, সাহসী অধিনায়ক/লিডার পেলে হয়তো-বা সুযোগ আসতেও পারে? স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দালালরা আমেরিকার হলুদ কার্ড ভিসা স্যাংশন পেয়েও নিজেদের শুধরাননি। তারা শুধু ষড়যন্ত্র খুঁজতেন-আমেরিকা সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায়! বাজে কথা। পাকিদের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জে. আইয়ুব খান সেন্টমার্টিন আমেরিকাকে দিয়ে দিলে তো আরও অনেক বছর শোষণ করতে পারত, বাংলাদেশ হতো না। কিন্তু পাঠান প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান সেন্টমার্টিন দ্বীপ কাউকে দেয়নি-বাঙালি মুসলমানদের সম্মান দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং আওয়ামী নেতাদের উচিত প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে ধন্যবাদ দেওয়া বা তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। পূর্ব পাকিস্তানে তারা আমেরিকার আগ্রাসন চায়নি। এতে মুসলমানদের বেইজ্জতি হতো বেশি। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পাঠান ছিলেন। তিনি কলকাতা, বার্মা এবং পরে পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ছিলেন। এই অঞ্চলের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, সংস্কৃতি, ধর্ম, ব্যক্তিত্ব সবই তার জানা ছিল। পাঠানদের মনমানসিকতা, সাহস, চরিত্র, উদারতা, বন্ধুপ্রীতির প্রমাণ পেয়েছি রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা এবং সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশ-বিদেশ বইতে। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতন ছেড়ে অনেক বছর আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ছিলেন। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পাঠান হওয়ায় তার কিছু উদারতার কারণে পূর্ব পাকিস্তানে গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগ এবং ছাত্ররা মিছিল-মিটিং করতে পেরেছে। সেই সময় যদি পাঞ্জাবি জে. জিয়াউল হক প্রেসিডেন্ট হতেন, তাহলে আগরতলা ষড়যন্ত্রের কারণে শেখ মুজিবসহ আরও অনেক নেতাকে ফাঁসি দিয়ে দিত। কারণ পাঞ্জাবিদের চরিত্র এটা। প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক তার নিজের নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রমাণ করেছে, সে খাস পাঞ্জাব। দুনিয়ার কোনো দেশকে পাত্তা দেয়নি। পাকিস্তানে জেনারেলরাই শুধু ক্যু করতে পারে, কোনো মেজর বা কর্নেলদের সাহস নেই চেইন অব কমান্ড ভেঙে ক্যু করার। যার কারণেই পাকিদের নিউক্লিয়ার পাওয়ার এখনো টিকে আছে-এটা ভারত-আমেরিকা ভালো করেই জানে। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জে. আজম খান ঢাকা থেকে বদলি হয়ে লাহোরে চলে যাওয়ার সময় বাঙালিরা নাকি তার জন্য কেঁদেছেন, আফসোস করেছেন-এ রকম ভালো মানুষ, ভালো গভর্নর আর আসবে না।
স্বৈরাচারী হাসিনার বেস্ট অব দ্য বেস্ট দালাল বাহিনী ওরা ১১ জন
১। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা-অধিনায়ক ও কোচ, সবজান্তা।
২। ওবায়দুল কাদের-উইকেটকিপার, মালকট রাজনীতিবিদ।
৩। কামাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-হায়ার প্লেয়ার, ফালতু টাকা বানানোর মেশিন।
৪। আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী-ঘিঠু মিঞা, ষড়যন্ত্র খোঁজার ভাইরাস।
৫। পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা-সবাই ভারতের হানিট্র্যাপে ভয় পেত।
৬। পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাব-এরা উজঝ কন্ট্রোল করত, ইচ্ছামতো খেলত।
৭। কিছু বিচারপতি-হিজড়াদেরও সম্মান আছে, এদের তা-ও নেই।
৮। দরবেশ কাহিনি-বিশ্ব বেহায়া, এদের ফাঁসি হওয়া উচিত।
৯। ইনু-মেনন, জি এম কাদের-মাগিদের কিছু চরিত্র আছে, এদের তা-ও নেই।
১০। সাংঘাতিক-আরাফাত, নাঈমুল ইসলাম, সুভাষ সিং, এরা ছিল ম্যাচ ফিক্সিং গ্রুপ, সুবিধাবাদী, বিয়ার গরম করে খায়।
১১। দীপু মনি, তারানা হালিম-রূপকান-আরা-চিয়ার গার্ল, আইটেম গার্ল।
৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে নায়িকা কবরীর যে অবদান, সিনেমাজগতে সুইট করার কবরীভাব রাজ্জাকের অভাব-এত জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার কোনো দিন তাকে মন্ত্রী বানায়নি। এই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আওয়ামী স্টাইল। চেতনা মানি, সত্য কথা বলব না। এমনকি কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমকেও মন্ত্রী বানায়নি, দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। টাইট বোলিং, টাইট ফিল্ডিং দিলে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়, তার প্রমাণ পেয়েছি। বিপ্লবী ছাত্র-জনতার টাইট নজরের কারণে হাসিনার ৩০০ জন এমপি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, এটাই বিশ্ব রেকর্ড।
প্রফেসর ইউনূস-Free Hit-New Start : স্যার, আজ সমগ্র জাতি দেশের ক্রাইসিস মুহূর্তে আপনাকে ঋৎবব ঐরঃ দিয়েছে। আপনি সাহস করে, আপনার বুদ্ধি-ধৈর্য-টেকনিক দিয়ে আপনার মতো, আপনার স্টাইলে খেলে দেশকে বাঁচান। অনেক বিশ্ববীর, সৈনিক, মেজর, নেতা, অধিনায়করা আন্ডারডগ দেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছেন। আমাদের সবার বিশ্বাস, আপনিও পারবেন, আপনার তো ট্রিপল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড। পৃথিবীর খুব কম দেশের ভাগ্যে কোনো নোবেল লরিয়েট প্রেসিডেন্ট বা নেতা হয়েছেন, আল্লাহর দয়ায় বাংলাদেশ সেই রেকর্ড করেছে আপনাকে পেয়ে। ইনশা আল্লাহ, আপনারা পারবেন বাংলাদেশকে সুবিচার ও নতুন একটা সিস্টেম দিতে। প্রথমে বিচার, পরে নির্বাচন। তাহলেই ছাত্র-জনতার বিপ্লবী বীর আবু সাঈদদের অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা বৃথা যাবে না। বাংলাদেশ আগেও অনেক সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলÑরাজনীতি, পারিবারিক দলাদলি, গুম-খুন চেতনার রাজনীতির কারণে দেশ আজ পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে। তারা এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই ছিল তাদের কাপুরুষের খেলার ধরন।
১৯৮০ সালে আপনার ছোট ভাই মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ছিলেন জনপ্রিয় সাংবাদিক। বিটিভিতে অনুষ্ঠান করতেন। থাকতেন ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে আমাদের বাসার পাশেই। তখন একবার আপনার সঙ্গে দেখা। ৯৭ সালে হঠাৎ করে ম্যানহাটনে আমার বোম্বে মাসালা রেস্টুরেন্টে আপনার সঙ্গে দেখা। আপনি নোবেল লরিয়েট পাওয়ার আগে এবং পরেও অনেকবার এসেছেন। এমনকি আপনার মেয়ে মনিকা, অপেরা শিল্পী, সে-ও এসেছিল। তার প্রিয় খাবার ছিল চিকেন টিক্কা মাসালা। আপনার প্রিয় ছিল মিক্সসড ভেজি কারি, তারক্কা ডাল নান। আপনি খুব কম খেতে পছন্দ করতেন। খাবার নষ্ট করতেন না। খাবার টেবিলে আপনার সঙ্গে আমার অনেক কথা হতো। ব্যবসা, বিশ্ব মিডিয়া এবং ক্রিকেট। আপনি বলেছিলেন, ছোটবেলায় চিটাগাং থাকতে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতেন। ভয়ও পেতেন ব্যাটিং করার সময়। এত বড় মাপের মানুষ, কিন্তু আপনার কথাবার্তায় অহংকারী, ঘৃণাভাব দেখিনি। বড় সিম্পল মানুষ, সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাইতেন। আমার অনেক ওয়েটার ও শেফরা এখনো আপনাকে স্মরণ করে, সম্মান করে। দুঃখ লাগে, স্বৈরাচারী হাসিনা এবং খুনি, লুটেরা দালাল বাহিনী আপনাকে কত-না বেইজ্জতি করেছে, মানসিক কষ্ট দিয়েছে। শেষ ওভারে স্বৈরাচারী হাসিনা বাহিনী ধরা খাইছেÑজিরো আপনি হিরো। আল্লাহর মাইর তার দয়া।
প্রবাসীদের কিছু দাবি/অনুরোধ
১। দেশে Provashi Discount center (PDC)। প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা দেশে Tex Free/Discount Courd দিয়ে সস্তায় জিনিস কিনতে পারলে খুশি হবেন।
২। প্রবাসী পরিবারের জন্য সস্তায় Health card।
৩। প্রবাসী পরিবারের জন্য Flat/Apartment, জমি নয়।
৪। প্রবাসী পরিবারের জন্য Small business loan, জব বাড়বে।
৫। দেশের পানি ভালো নয়, আর্সেনিকযুক্ত। সস্তায় Energy/Dring বা ট্যাবলেট তৈরি করুন, শুধু গরিবদের জন্য।
৬। খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করুন, বিশেষ করে ভালো তেল চাই।
৭। বিদেশি Investor ডাকুন, ওরা আপনাকে বিশ্বাস করবে।
৮। শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে Stamp বের করুন, সবাই স্মরণ করবে।

কমেন্ট বক্স