Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

সাম্প্রদায়িকতার বিষ্পাপ ও সরকার গঠনে নরেন্দ্র মোদির হ্যাটট্রিক

সাম্প্রদায়িকতার বিষ্পাপ ও সরকার গঠনে নরেন্দ্র মোদির হ্যাটট্রিক


সম্প্রতি ভারতের লোকসভা/জাতীয় নির্বাচন হয়ে গেল। ইতিমধ্যে লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনের সবগুলোর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ২৪০ আসনে জয় পেয়েছে। ৯৯টি আসনে জয়ী হয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) ৮টি ও শিবসেনা (এসএইচএস) ৭টি আসনে জয়লাভ করেছে।
তবে সবকিছুকে উতরে ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী দল কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছর মোদি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট রাজনীতির দুঃসহ নিপীড়নের শিকার হয়ে নেহেরু-ইন্দিরা পরিবার চরম গ্লানিকর অবস্থায় জর্জরিত হয়েছিল। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও সোনিয়া-তনয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং ছেলে রাহুল গান্ধীর গণমানুষের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ার ঘটনায় ভারতের রাজনীতির মোড় ঘুওে গেছে। রাজীব-তনয় রাহুল গান্ধী (৫৩) বিরোধীদের সকল সমালোচনা, কটাক্ষের অপ্রত্যাশিত অভিযোগসমূহকে পাত্তা না দিয়ে সমগ্র ভারতবর্ষ চষে বেড়িয়েছেন। প্রায় এক বছরব্যাপী হাজার হাজার কিলোমিটার অহিংস আন্দোলন পদব্রজের মাধ্যমে ভারতের সর্বস্তরের জনগণের মন জয় করেছেন। তিনি যে বর্তমান রাজনীতিতে বেশ সরব হয়েছেন, জনমনে সেটি আশার আলো ফুটিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনীতিতে রাহুলের সাহসী ভূমিকা এবং বিগত বছরগুলোতে কংগ্রেস নেত্রী সোনীয়া গান্ধী এবং অন্যান্য নেতার নিরলস আন্দোলনের ফসল এবারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পাওয়ার মূল কারণ। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমানে কংগ্রেস ভারতে তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসার পথ নতুনভাবে উন্মোচিত হলো।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল এবারও বিজেপিকে হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অধিকাংশ আসনে জয়ী হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, রাজনীতিতে সম্পৃক্তি ও সাফল্য এবং বিপুল জনপ্রিয়তার জন্য মমতাকে ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিন বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তির একজন হিসেবে অভিহিত করেছিল।
যাই হোক, শেষ পর্যন্ত বিজেপি জোট নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোয়ালিশন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি, আয়বৈষম্য ধনিক শ্রেণির সপক্ষে বিভিন্ন আইন প্রণয়নের। আরও অভিযোগ আছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ্ব দমনে ব্যর্থতা। দরিদ্র ও সমাজের অবহেলিত অংশের প্রতি রাজ্য সরকারগুলোর বিভিন্ন কল্যাণকর কর্মসূচিতে যথাযথ সহযোগিতা না করার অভিযোগও বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে।
ভারতের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দলের কট্টর মৌলবাদী গোষ্ঠীর একতরফা নীতি ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ নিম্ন বর্ণের সাধারণ হিন্দুদের চরম দুর্ভোগে ফেলেছে। মুসলমানদের প্রতি নিপীড়ন-নির্যাতন, সন্ত্রাসী হামলা ও নানা রকম হত্যাকাণ্ড ভারতের জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
প্রকাশ থাকে যে, দীর্ঘদিনের বিজেপির ভোটপ্রাপ্তির হাতিয়ার রামমন্দির যে স্থান থেকে নির্মিত হয়েছে, সেই অযোধ্যায়ও বিজেপির ব্যাপক ভরাডুবি হয়েছে। ফলাফলে জোটের সমীকরণ কাজ করেনি।
অনেক জাতপাত, ধর্ম, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ে বিভক্ত ভারতকে জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর পর নরেন্দ্র মোদি দৃঢ়তার সঙ্গে সামনের দিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন, কিন্তু তার মৌলবাদী নীতির ফলে তিনি সেটিকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এবারের নির্বাচনের ফলাফল তা-ই বলে দিচ্ছে।
গণমানুষের নাগরিক অধিকার রক্ষা হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। গণতান্ত্রিক সৌন্দর্যের অন্যতম শক্তি হলো জনগণ। রাষ্ট্রপুঞ্জের মৌলিক শক্তির উৎস হচ্ছে জনগণ এবং গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের ভিত্তিতে উপরিউক্ত দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্যের ওপরই রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিচালক তথা প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদ ও পরিচালনা পরিষদ নির্বাচিত হতে হয়। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনরায়ের ওপর যে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা, তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা হয়। কিন্তু গণতন্ত্রের পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে কোনো রাষ্ট্রপুঞ্জ যদি সাম্প্রদায়িকতা ও বৈষম্য প্রতিষ্ঠার অপপ্রয়াস চালায়, সেটি অগণতন্ত্রিক এবং মৌলবাদ। বিশ্বের অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ইতিহাসে নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে সাম্প্রদায়িকতার বিষ্পাপ ছড়িয়ে যে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে, স্বাধীনতার পর আর কোনো শাসক এতটা প্রশ্নবিদ্ধ করেননি! শুধু সাম্প্রদায়িকতাই নয়, মি. মোদির বিরুদ্ধে ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার ধ্বংস এবং ভারতের সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে।
মৌলবাদ (Fundamentalism) হচ্ছে গোঁড়া ধর্মীয় মতবাদসমূহের কঠোর মতবাদ। যা সাধারণত উদার ও স্বাভাবিক ধর্মবোধ ও ধর্মতত্ত্বের বিরুদ্ধে একধরনের উগ্র প্রতিক্রিয়া। মৌলবাদীরা ধর্মকে হাতিয়াররূপে গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু সেটি অন্যদের ওপর জোরপূর্বক চাপানোর প্রচেষ্টাই মূলত গর্হিত কাজ। পৃথিবীর অনেক দেশে বিভিন্নভাবে মৌলবাদের ক্ষতিকর দিকটি দেখা যায়।
ইতিহাসের পাতায় মৌলবাদ ((Fundamentalism) শব্দটি সর্বপ্রথম ১৯২২ সালে আমেরিকায় ব্যবহৃত হয়। খ্রিষ্টান মৌলবাদীরা প্রচণ্ডভাবে আধুনিক নব্য প্রবর্তিত রীতিনীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে সাধারণ্যের ধর্মবোধের বিরোধিতা করেন এবং আধুনিকপন্থীদের ধর্মীয় বিশ্বাসে যে বাইবেলের বিশ্বস্ততা ও সঠিক দিকটি রয়েছে, সেটির বিপক্ষে মৌলবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস চালান। পরবর্তী সময়ে এই মৌলবাদী তত্ত্ব পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের ওপর চড়াও হওয়ার সুযোগ পায়। আবার কোনো কোনো দেশে মৌলবাদী রাজনীতির ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রনৈতিক ক্ষমতা দখল ও স্বৈরশাসনের প্রচলন শুরু হয়। মৌলবাদী ধ্যান-ধারণা অনুশীলনের ক্ষেত্রে ইহুদিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং তারা সবচেয়ে বেশি জঙ্গি মনোভাবাসম্পন্ন।
ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইহুদিবাদকে সবচেয়ে জঙ্গি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইহুদিবাদীরা তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ তোরা ও তালমুদ-এ উল্লিখিত ধর্মীয় আইন ও নৈতিক নির্দেশনাকে কঠোরভাবে মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাদের নির্দেশ অমান্যকারীকে সমাজচ্যুত করা হয়। বর্তমান ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় নীতিতে ফ্যাসিজম মৌলবাদী উগ্রতারই বহিঃপ্রকাশ বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন। ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইসরায়েলের মানববিধ্বংসী বর্বরতা ফ্যাসিজমেরই অংশ।
পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ, গণবিরোধী কার্যক্রম এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থানচ্যুতির প্রেক্ষাপটের বিরুদ্ধে ‘শুদ্ধি’ নামে এক ধরনের উগ্রতা ও হিন্দু মৌলবাদী আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে ভারতকে মোদি সরকার সংবিধানের নীতি-বহির্ভূত কট্টর হিন্দু মৌলবাদী নীতিসমূহ ভারতের জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী উগ্র মৌলবাদের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে ভারতীয় রাজনীতিতে বিষ্পাপ ছড়িয়ে দিয়েছে। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বহুধর্ম, বহুবর্ণের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবর্তে মৌলবাদী হিংস্রতা, ধর্মীয় বিদ্বেষ ও বৈষম্য ছড়িয়ে মুসলিম নিধন কর্মযজ্ঞ চালানোসহ অনেক অভিযোগ উঠেছে।
তবে এ কথা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, মৌলবাদের কট্টর পন্থায় কোনো কোনো অঞ্চলে মুসলিম নামধারী একশ্রেণির লোকের ধর্মীয় উন্মাদনায় বিভিন্ন দেশে ইসলামের শান্তিময় নীতির পরিপন্থী কার্যক্রম প্রচলিত আছে। কোথাও কোথাও কট্টর সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামের নাম দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের (১৯৭৮-৭৯) পর আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইরান সরকারকে ইসলামি মৌলবাদী রাষ্ট্ররূপে আখ্যা দিতেও কুণ্ঠিত হননি।
ইরানের ইসলামি বিপ্লব যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত রেজা শাহ পাহলভিকে (১৯১৯-৮০) ক্ষমতাচ্যুত করে এবং তার সকল আধুনিক সেক্যুলারিজমের বিলোপ সাধন করে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ইসলামের মূলনীতি ও বিদেশি প্রভাবমুক্ত ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ইরানের বিপ্লব ছিল ইরান থেকে আমেরিকার আধিপত্যবাদমুক্ত হওয়া। বিগত কয়েক দশক ইরান যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়েও টিকে আছে। কিন্তু অনেকাংশে ইরান সরকারের কট্টর নীতিবোধ থেকে সরে আসেনি।
এ ছাড়া বিশে^ আলোড়ন সৃষ্টিকারী ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলায় নিউইয়র্কের ‘টুইন টাওয়ার’ ঘটনা (১১ সেপ্টেম্বর ২০০১) মুসলমানদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হয়। অনেকের অভিযোগ, ওসামা বিন লাদেন প্রতিষ্ঠিত আল-কায়েদা ও আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের কর্মকাণ্ড বিশে^র সন্ত্রাসী সংগঠনের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এ দুটি অজুহাতসন্ধানী ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসবাদের মদদদাতাদের পাশ কাটিয়ে ইসলামি পুনরুজ্জীবন সম্পর্কেও অনেক লেখালেখি শুরু হয়। ফলে পাশ্চাত্যে তথাকথিত ইসলামি মৌলবাদী ধারণা জন্মলাভ করে এবং বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।
যাই হোক, আগের প্রসঙ্গে ফিরে যাই। ভারতের রাজনীতির চমক ও উল্লেখ করার দিকটি হচ্ছে, রাহুল গান্ধীর রাজনীতিতে সরব হওয়া। ৫৩ বছর বয়সী রাহুল গান্ধী ২০০৪ সালে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি কখনো কোনো সাংবিধানিক পদ গ্রহণ করেননি। এমনকি তার দল ক্ষমতায় থাকার সময়ও নয়।
গত বছর রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ আনে বিজেপি। এরপর রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় লোকসভায় তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি তার সদস্যপদ ফিরে পান।
ভারতের ৫৪৩ আসনের এবারের লোকসভার নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৩ আসন। এর মধ্যে বিজেপির আসন ২৪০। সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭২ আসন।
কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩ আসন। তাই বিজেপিকে সরকার গঠন করতে হলো প্রধান দুই জোট শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) ও চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সমর্থন নিয়ে।
ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির বিষয়টিকে দেশটির যে কোটি কোটি নাগরিক অন্তরে লালন করে আসছেন, তাদের কাছে কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটির নির্বাচনী ফল ঘোষণা একটি শঙ্কার মুহূর্ত হিসেবে দেখা দিয়েছিল। এর মূল কারণ হলো, ভারতের ভিত্তি হিসেবে পরিচিত মৌলিক মূল্যবোধ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং সামাজিক শিষ্টাচারগুলোর ওপর আঘাত হেনে সমাজে চরম ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদ গেড়ে দেওয়া নরেন্দ্র মোদি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেনÑভোটের দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলাকালে এটি প্রায় অনিবার্য হিসেবে সবার কাছে প্রতিভাত হয়েছিল। মোদির বিজেপি এবারের নির্বাচনে আরও বড় জয়ের বিষয়ে এতটাই নিশ্চিত ছিল যে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তারা ‘আগলি বার, চার শ পার’ স্লোগান দিয়ে বিরোধীদের টিটকারি পর্যন্ত করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে সেই গনেশ উল্টে গেছে। বিজেপির জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়ে নির্বাচনে ফলাফল বিজেপি আগের চেয়ে কম আসন পেয়েছে।
 

কমেন্ট বক্স