মায়ের আদর কেমন ছিল, শুনবি দাদু তুই
তখন আমি ছোট্ট শিশু, মায়ের সাথে শুই
যখন তখন শি শি দিয়ে, ভিজিয়ে দিলে কাপড়
দেয়নি বকা যায়নি রেগে, দেয়নি কোনো থাপড়।
বদলে কাপড় মা জননী, শুকনা পিরান দিয়ে
অনেক অনেক আদর দিত, বুকের মাঝে নিয়ে
কিশোরবেলায় খেলতে গিয়ে, লাগলে কাদা গায়
নিজের হাতে ধুয়ে দিত, আমার প্রিয় মায়।
রাত্রে গায়ে জ্বর উঠলে, পানি দিত মাথায়
নিজের হাতে সাবান দিত, করলে বমি কাঁথায়
রাত্রি জেগে দেখত চেয়ে, জ্বর ছেড়েছে নাকি
রাত পোহাতে আজান দিতে, আর কতক্ষণ বাকি।
ভার্সিটিতে পড়ার সময়, ছুটি যখন পেতাম
গ্রামের বাড়ি দূর পাড়াগাঁয়, দ্রুতই চলে যেতাম
চৈত্র মাসের ভরদুপুরে, গিয়ে বাড়ির কাছে
দেখতে পেতাম পথের ধারে, মা দাঁড়িয়ে আছে।
আঁচল দিয়ে মুখটা মুছে, মাথায় দিয়ে হাত
বলত আমায় সোনামণি, খাসনি কদিন ভাত
মুখখানা তোর শুকিয়ে গেছে, জলদি নেয়ে আয়
খাওয়ার কালে তাল পাখার, বাতাস দিত মায়।
রঙিন বাতির এই শহরে, অনেক কিছুই আছে
তবু আমার মনটা ছোটে, গায়ে মায়ের কাছে
ছোট্টবেলায় টানত বুকে, আজো আমায় টানে
মায়ের স্নেহ-ভালোবাসা, পাই না কোনোখানে।
দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াই, শহর গ্রামে যাই
মাথার ওপর মায়ের হাতটা, আর খুঁজে না পাই
মায়ের হাসি ভালোবাসা, কেমনে ভুলি ভাই
ইচ্ছা করে কিশোর হয়ে, মায়ের হাতে খাই।