আসছে রোজা কাঁচাবাজার সরগরম,
চলছে রোজার প্রস্তুতি।
সেই সাথে বাড়ছে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি।
দোকান-পাটে হচ্ছে বোঝাই খেজুর-সেমাই-লাচ্ছা।
সরবতে রুহ-আফজা।
ব্যস্ততা বাড়ছে কুলি-মিন্তি-মজুরের,
ধূম পড়েছে কেনাকাটায় উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তের-
সাহেব, বেগমদের।
ত্রস্ত হাতে টুকরিতে বোঝার উপর বোঝা চাপায়-
কুলি ছেলেটার,
ঘাড় গুজো হয়ে যায়, তবু কায়ক্লেশে-
ভারী বোঝা বয়ে আনে গাড়ির কাছে,
ভালো কিছু পাবার আশে।
ড্রাইভার গাড়ির দরজা খলে দিয়ে এসে-
পিছনে কুলির সামান সাজায়
বেগম সাহেব গাড়িতে উঠে।
কুলি ছেলেটা গাড়ির জানালায় যায় ছুটে-
‘বেগম সাব আমার পাওনাটা’।
বেগম সাহেব যেনো অনেক করুণা করে-
একটা নোট দেয় ওর হাতে।
একি মাত্র দশ টাকা!
বিশ হাজার টাকার বাজার করলেন!
বেগম সাহেব উঠে তেড়ে-
‘যা দিয়েছি খুশি থাক তাতে।
বাজারের জিনিসের দাম গেছে সীমা ছেড়ে।
সেই সাথে তোদের বায়নাও গেছে বেড়ে’।
বাজারের চড়া দামটা যেনো কুলিকে দিয়েই নেবে পুষিয়ে।
ফেরার তাড়ায় ড্রাইভার গাড়ি ছাড়ে।
অসহায় কুলির দু’ চোখ জলে ভাসে।
ওদের চোখের জলের ভাষা কেউ বোঝে না।
বেগম সাহেবরা জানে না এটা- ওদের জীবিকা
এদিয়ে ওদের করতে হয় অন্ন-বস্ত্র-খানাপিনা।
কেউ সুধায় না স্নেহভরে-
কেমনে ওদের দিন যায়, রাত কাটে পথের পরে।
কি খায়, নাকি খিদে নিয়েই ঘুমায়?
আদর করে কেউ ডাকে না-
আয় খোকা আয়, আমার কাছে আয়।
কেউ বোঝে না ওরা বেঁচে আছে-
কত কষ্টে, কত আশা নিয়ে।
ওদেরও সাধ হয়, ঈদে-পার্বনে
নতুন জামা পরে আনন্দ করে মসজিদে যেতে-
পোলাউ, কোর্মা, ফিরনি সেমাই খেতে!