Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

‘সেকেন্ড ফেস’ এ মাইনাস টু!

‘সেকেন্ড ফেস’ এ মাইনাস টু!
বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা বলি আর টেলিভিশনের টকশো আলোচনা বা সামাজিক মাধ্যম বলি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লেখালেখি এবং আলোচনার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন এবং আর্থিক পরিস্থিতি। এখন অবশ্য রাজনীতির আলোচনা মানেই নির্বাচন। আর্থিক বিষয়ের আলোচনায় প্রাধান্য পায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, রিজার্ভ পরিস্থিতি, দুর্নীতি, খেলাপি ঋণ, অর্থ পাচার, ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি ইত্যাকার সব বিষয়। রাজনীতির পরিধি আর্থিক পরিধির চেয়ে আরও বড় এবং বিস্তারিত? 

আগামী নির্বাচন কেমন হবে-সমঝোতার মাধ্যমে নাকি বিরোধী দলের দাবি মোতাবেক হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে হবে, নাকি তত্ত্বাবধায়ক বা ভিন্ন কোনো ফর্মূলা মোতাবেক হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে, বিশেষ করে আমেরিকা, চীন, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক, মার্কিন ভিসার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়েও বিস্তর আলোচনা হচ্ছে।

এসব আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতা, সুশীল ও বুদ্ধিজীবী সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের মানুষেরা, কূটনীতিক, লেখক, শিক্ষক, সাংবাদিক নেতারা। অবশ্য ব্যতিক্রম দু-একজন বাদে সবাই বিভিন্ন দলমুখী। কাউকে কাউকে দলকানাও বলা যায়। দলের প্রেস রিলিজে প্রকাশিত বিবৃতি আর ওই দলকানা নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া মুশকিল। 

আসলে খুঁজতে যাওয়া নিরর্থক, এমনকি সরকারি চাকরিতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যেও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি। তাদের মধ্যে অবশ্যই সরকারমুখী অধিকাংশ, দু-চারজন ব্যতিক্রম।

এসব আলোচনার মধ্যেই নতুন করে আবার একটি পুরোনো বিষয় নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। পুরোনো সেই মইনুদ্দীন-ফখরুদ্দীনের সময়কার ‘মাইনাস টু’র কথা নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষের মনে আছে। সে এক দারুণ দুঃসময়। সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ সমর্থনে ফখরুদ্দীনের বেসামরিক শাসন। রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, ছাত্র-শিক্ষক সবার ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। কে পালিয়ে বাঁচবে, কে ধরা খাবেÑঠিক নেই। সমাজে, রাষ্ট্রে অস্থিরতা। 

কোনো স্থিতি নেই, স্বস্তি নেই। সেই সময় জোর তৎপরতা লক্ষ করা গেল ‘মাইনাস টু’র গুঞ্জন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে ‘মাইনাস’ করে দিতে হবে। এই অশুভ তৎপরতায় দুই নেত্রীর দুই দলের বাঘা বাঘা অনেক নেতাও যোগ দিলেন। দেশের মানুষও আস্তে ধীরে প্রথম দিককার ভীতিকর পরিস্থিতি কাটিয়ে কথা বলতে শুরু করে দিলেন। দেখা গেল, দেশের ৯৮ ভাগ মানুষের মতের এবং সমর্থনের বাইরে এই ‘মাইনাস টু তত্ত্ব’। পরে অবশ্য জনমতের কাছে হার মেনে মাইনাস টু’র কুশীলবরা পিছু হটে যায়।

এখন বাংলাদেশে আবার সেই ‘মাইনাস টু’র কথা। মানুষ প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। মাইনাস টু’র কথায় মানুষের মধ্যে আবার সেই অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ঠিকানার গত ১৪ জুন সংখ্যার দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম ‘মাইনাস টুর সেকেন্ড ফেস’। তার মাথার ওপর আরও রহস্যময় খবর ‘ঢাকার বল এবার জাতিসংঘের কোর্টে, আউটডোরের অপেক্ষায় জামায়াত’। এসবের সারকথা, এখন আর ওয়ান ইলেভেনের মতো মাইনাস টু ঢাকঢোল পিটিয়ে হবে না। এবার কৌশলে নীরবে এই মাইনাস টু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এবার আর সেনাবাহিনী নয়। এর পেছনে এবার আন্তর্জাতিক মহল। এবার পরিকল্পনাতে নাকি কিছু ভিন্নতা আছে। একসঙ্গে দুই নেত্রী নন। এবার আগে-পিছে হবে। যদি খালেদা জিয়া আগে যান, তবে আওয়ামী লীগ খুশি হবে। শেখ হাসিনা পরে গেলে বিএনপি খুশি হবে। ব্রিটিশের সেই ‘ডিভাইডেড অ্যান্ড রুল’ ফর্মূলা।

সত্যি সত্যি যদি বাংলাদেশে আবার এ রকম সময় আসে, তবে বাংলাদেশের ভাগ্যে কী ঘটবেÑকে জানে! কারও কারও সব ‘খাওয়ার লোভে’ বাংলাদেশ যেন সব না হারায়!!

কমেন্ট বক্স