বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থনের’ কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানকালে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এমনটি জানিয়েছেন জো বাইডেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস বাইডেনকে অবহিত করেন কীভাবে শিক্ষার্থীরা বিগত সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের এমন সুযোগ তৈরি করতে তাদের অনেকের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। যেহেতু তিনি জোর দিয়েছিলেন যে তার সরকারকে অবশ্যই দেশ পুনর্গঠনে সফল হতে হবে এবং এতে যক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে। এ সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে কোনো সাহায্যে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি দেশের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, তাহলে তাদেরও (যুক্তরাষ্ট্র সরকার) পূর্ণ সহযোগিতা করা উচিত।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই বিপ্লব চলাকালীন ও এরপরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবি-সংবলিত ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উপহার দেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় রাত ১১টায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশন শুরু হয়েছে। প্রথমদিন এই অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। অধিবেশনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। গত ২৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো সরকার প্রধানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বৈঠক হলো। তাই এই বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন কূটনীতিকরা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম বৈঠক।
জাস্টিন ট্রুডোকে ‘দ্য আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ উপহার : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৪ সেপ্টেম্বর কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার দেয়ালে শিক্ষার্থীদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ড. ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্ট বইটি হস্তান্তর করেন।
বইটিতে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্রদের নেতৃত্বে চলাকালে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর ও নগরের দেয়ালে তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা সেরা কিছু শিল্পকর্মের ছবি স্থান পেয়েছে। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের এই আর্টবুক প্রকাশের নির্দেশ দেন।
তরুণ চিত্রশিল্পীদের আঁকা-লেখায় ঢাকা সারা দুনিয়ার গ্রাফিতি রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পায়। দেয়ালগুলো পরিণত হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিশাল ক্যানভাসে। সরকারকে নানা শক্তিশালী বার্তা দিতে তারা বিভিন্ন সৃজনশীল ও হৃদয়গ্রাহী শ্লোগান ও কবিতা লিখেছে। এসব বার্তা যেন বিপ্লবের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাক্সক্ষার শিল্পিত প্রতিফলন। ছাত্ররা দেশবাসীর সমর্থন আদায়ে শিল্পকর্মের মাধ্যমে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল।
ছাত্রদের মনের মাধুরী মিশিয়ে দেয়ালে-দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা স্বপ্ন-বাসনার এসব নান্দনিক ও নজর-কাড়া চারুকলা গোটা ঢাকা শহরের চেহারা পাল্টে দেয়। এর মধ্যে অনেক গ্রাফিতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। প্রশংসা কুড়ায় সর্বস্তরের মানুষের।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকেও এই আর্টবুক উপহার দিয়েছিলেন। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের হাতে এ উপহার তুলে দিয়েছিলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের কাছে গ্রাফিতির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেছিলেন, ‘এসব গ্রাফিতিতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পাশবিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নৃশংস এক বাহিনীর মুখোমুখি আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও যুবকদের দাবি-দাওয়া, আবেগ-অনুভূতি, আশা-আকাক্সক্ষা চিত্রিত হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিদিলকে উদ্দেশ্য ঢাকার দেয়ালগুলো একবার ঘুরে দেখার অনুরোধ করে অধ্যাপক ইউনূস তখন বলেছিলেন, ‘এসব গ্রাফিতি এখনো রাজধানীর দেয়ালে-দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এগুলো শুধু বিপ্লবের পরই নয়, আন্দোলন চলাকালেও শিক্ষার্থীরা সরকারি বাহিনীকে অমান্য করে এসব গ্রাফিতি আঁকেন।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের সংবর্ধনায় ড. ইউনূস : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়, যেখানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগদানকারী বিশ্ব নেতাদের স্বাগত জানান সংস্থাটির মহাসচিব।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনুস ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বিরাজ সিং রূপন এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সম্পর্কিত হাই কমিশনার ভলকার টুর্কসহ অন্যান্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছান। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি সংস্থাটির ৭৯তম অধিবেশনে যোগদান করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক ২৬ সেপ্টেম্বর : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাথে বৈঠক করবেন। প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে জাতিসংঘ সচিবালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ২৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা এবং ২৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইয়েন, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এলডিসি, এলএলডিসি ও সিআইডিএস-এর উচ্চ প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবো, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, ইউএনডিপি প্রশাসক আখিম স্টেইনার এবং ইউএসএআইডি প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইউএনজিএ’র ৭৯তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে নিউইয়র্কের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে ফ্লাইটটি ভোর বাংলাদেশ সময় ৫টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০ টায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এদিনই তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ছেড়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী ও আইএমএফের এমডির সঙ্গে বৈঠক : জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে তাদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নানা বিষয়ে আলোচনার পর তিনি তাদের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রাজধানী ঢাকার দেয়ালে শিক্ষার্থীদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিল ক্লিনটনের সঙ্গে ড. ইউনূসের কুশল বিনিময় : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অনুষ্ঠানে তাদের সাক্ষাৎ হলে কুশল বিনিময় করেন তারা।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা জুলাই বিপ্লব চলাকালীন ও এরপরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবি সংবলিত ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক বিল ক্লিনটনকে উপহার দেন। পরে ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভে বক্তব্য দেন ড. ইউনূস।
‘রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের অপেক্ষায় আছি’ : অন্তর্ববর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা জনগণের মর্যাদা ও নিরাপত্তা এবং অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি আমার সরকারের পূর্ণ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের অপেক্ষায় আছি।’
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন এবং বৈঠকে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এ বৈঠক হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
বৈঠকে মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বিশ্ব এই বিষয়ে কম সচেতন যে বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক শিশু এই জনসংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হয়। গত দুই মাসে আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা সত্ত্বেও, একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত ব্যয়ের ক্ষেত্রে এত বেশি খরচ হয়ে চলেছে। এগুলো আমাদের জন্য প্রথাগত ও অপ্রথাগত নিরাপত্তাঝুঁকি। আমাদের নিজস্ব উন্নয়ন অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্পষ্টতই বাংলাদেশ তার ধৈর্যসীমায় পৌঁছেছে।
বৈঠকে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব : এক. জাতিসংঘের মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে একটি সব স্টেকহোল্ডারকে সম্মেলন আহ্বান করতে পারেন। সম্মেলনের সংকটের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা উচিত এবং উদ্ভাবনী ও অগ্রসর উপায়ে পরামর্শ দেওয়া উচিত।
দুই. ইউএন সিস্টেম ও বাংলাদেশ যৌথভাবে পরিচালিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান, শক্তিশালী করা দরকার। স্লাইডিং ফান্ডিং পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রিসোর্স বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে আরও রাজনৈতিক চাপ দিতে হবে।
তিন. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যামূলক অপরাধ মোকাবিলায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ব্যবস্থাকে গুরুত্বসহকারে সমর্থন করা। আমি আইসিসিতে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রসিকিউটর করিম খানের কাছ থেকে শুনানির অপেক্ষায় আছি। সামরিক জান্তা দ্বারা সংঘটিত অন্যায়ের প্রতিকার মিয়ানমার দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও নিরাপত্তার চাবিকাঠি।