আশরাফ হাসান
ঘুমমৃত্যুর শহরে হেঁটেছিলাম বহুদূর
দুই ধারে সাদা কাশফুল
আর ঘন সবুজ বৃক্ষলতার বুনন ছাউনিতে
জাফলংয়ের স্ফটিক জলের মতো হাঁটুজল ঝরনা
চায়নিজ রেস্তোরাঁর ন্যায় বাতিগুলো জ্বলছিল
যেন ক্লান্ত হয়ে পড়া কোনো ডিমহলুদ সূর্য ॥
ত্রস্ততার পায়চারিতে ঊর্ধ্বশ্বাস ভাব
যেন তড়িঘড়ি পার হতে হবে কোনো পুলসিরাত
পেছনে ডানা ঝেড়ে ওড়ে স্মৃতির শঙ্খচিল
কখনো ঘাসজলে পা ডোবানোর মতো ভেজা গন্ধ
কখনো-বা প্রখর রোদে কৈশোর দুপুর
পরিত্যক্ত হালখাতার পাতারা ওড়ে যায় ॥
সাদা বেড কভারের ওপর নীল পোশাক পরিহিত
অভিযাত্রী দেখে ঘুমমৃত্যুর শহর
দুধসাদা অ্যাপ্রন গায়ে পাহারা দেয় দেহরক্ষী
কখনো মমতাহীন কাটে কোষ, চালায় হাতুড়ি শাবল
স্থিত শরীর অথচ দূরযাত্রায় হাঁটে
যেন হাজার মাইল পথ শেষে জীবনের তাঁবু ফেলে
মঞ্জিলাভিমুখী মরু বেদুইন ॥
আবছা আলোয় ধেয়ে আসা ঝড়ের মতো
অবচেতন অন্ধকারে জ্বলে অতি চৈতন্য
ঘামের নোনাজলে নেয়ে আসে দুঃসময় ॥
ঘুমমৃত্যুর শহর থেকে বেরোনোর সময়
আধখোলা চোখে দেখি
মাউন্ট সাইনাইর পোস্ট অপারেটিভ রুমে
নবজাতক শিশুর মতো শুয়ে আছি
আর আমার মুখে বিরামহীন উচ্চারিত হচ্ছে
আদি ও অন্তিম কালেমার দীপ্ত শব্দভঙ্গি ॥