শুধু কথা হয়নি বলে
কত সম্পর্ক ভেঙেছে অবলীলায়,
শুধু আঙুলের ভাঁজে জড়ায়নি আঙুল
তাই কখনো হয়নি ঘরের আগল তুলে
জিজ্ঞাসু নেত্রে উতলা হয়ে;
এলিই তবে এই শেষ বিকেল করে!
শুধু কথা হয়নি বলেই কি তবে!
হাসপাতালের পঞ্চম তলার
একাকী বিমর্ষ বারান্দায় দাঁড়িয়ে
কোনো এক ঝোড়ো বিমূর্ত বিকেলে
কীর্তনখোলার মতো বিষণ্ন হয়ে
ঠিক বারোটা বছর পর,
তুই আমায় অকপটে অনড় দৃষ্টি দিয়ে শুধিয়েছিলি;-
হ্যাঁ রে লীলা!
আমি কি এতটাই অপাঙক্তেয়ই ছিলাম,
তোর নজরেই এলাম না কখনো?
শুধু কথার আদান-প্রদান হয়নি বলে
কলমের সাথেও যে হয়নি সখ্য
কখনো আমাদের।
সাদা কাগজের আর রঙিন খামের,
দু’কলম লিখিসনি কখনো,
না তুই এবং আমিও অবশ্যই
সে হিসাবমতে দুজনেই দহনে দোষী।
আমরা হারিয়েছি কালের আবর্তের
এক নিমজ্জিত জাগতিক বেদনায়
দু’মুখী দু’মেরুর সংসার জীবনে।
এখন কথা বলি সারা দিনমান অহর্নিশ
বিড়বিড় করে অজস্র কথা,
আঁতিপাঁতি করে তোকে খুঁজে ফিরি
শোকাহত পরেশ সাগর, শ্মশানঘাট,
ফুড গোডাউন, সাহেবের গোরস্থানে,
সিঅ্যান্ডবি রোড, রয়েলের চায়ের চুমুকে
কাকলীর মোড় বা সোনালি হলের চত্বরে,
চৌমাথার কলেজের মাঠে;
জীবন গোধূলির এই সায়াহ্নে এসে!
এতটা অভিমান তবে চেপে রেখেছিলি
শুধু কোনো কথা কখনো হয়নি বলে?