Thikana News
২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রবাসী প্রার্থীরা উপেক্ষিত

দেশে উন্নয়ন, বিনিয়োগ - সব অবদানই অস্বীকার * প্রবাসীবান্ধব সরকার- রেমিট্যান্সযোদ্ধা-সবই কথার
প্রবাসী প্রার্থীরা উপেক্ষিত
দেশে উন্নয়ন ও বিনিয়োগে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে। প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্সযোদ্ধা। সরকার নিজেকে দাবি করেন প্রবাসীবান্ধব। বহু যোগ্য প্রবাসী রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার মত।   বাংলাদেশে  বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবদান কারো চেয়ে কম নয়। কিন্তু এবারের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের উপেক্ষা করা হয়েছে। কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়নি সরকারি দল আওয়ামী লীগ। 
বাংলাদেশের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশায় ডজনখানেক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান (বগুড়া-১), সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ আজাদ (জামালপুর-৪), যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান (সিরাজগঞ্জ-২), বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল কাদের মিয়া (চট্টগ্রম-৩), জেবিবিএর প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদক ড. মাহাবুবুর রহমান টুকু (বরগুনা-২), বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের নেতা মোর্শেদা জামান (জামালপুর-৪), বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা খোরশেদ খন্দকার  (চট্টগ্রাম-৮), মহানগর আওয়ামী লীগের মাহফুজুল হক হায়দার (কিশোরগঞ্জ-৩) প্রমুখ। 
ভার্জিনিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিআই রাসেল, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য শেখ জামাল হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা এইচ এম রহিমুজ্জামান সুমন, আতাউর রহমান শামীম ও মোহাম্মদ জাবেদ (মিশিগান) আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিন শেষে তারা কেউই নৌকার মাঝি হতে পারেননি। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তাদের মনোনয়ন দেননি।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নামে তার একজন আত্মীয় মনোনয়নপত্র কিনে তা জমা দিয়েছিলেন। সিদ্দিকুর রহমান এ কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি) আসন থেকে নির্বাচন করতাম। তবে তার সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রইলো। এখানে উল্লেখ্য, বগুড়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তার শ্যালিকা সাহাদারা মান্নান। ভায়রা আব্দুল মান্নানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নান এই আসনের উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। 
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপষ্টো ডা. মাসুদুল হাসান সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসেই অনলাইনে মনোনয়নপত্র কেনেন ও জমা দেন। তিনি বলেন, নেত্রী তাকে নিউইয়র্কে দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশেই আমি চলবো। মনোনয়ন না পাওয়ায় অখুশি নই। 
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ জামালপুর-৪ আসন থেকে লড়তে চেয়েছিলেন। কাজ শুরু করেছিলেন অনেক দিন থেকে। এলাকায় গণসংযোগ করেছেন নিয়মিত। কিন্তু দলীয় টিকেট তার কপালে জোটেনি। 
যুবলীগ নেতা শেখ জামাল হোসেন হঠাৎ করেই দলের মনোনয়ন চেয়েছিলন হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে। যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা এইচ এম রহিমুজ্জামান সুমন কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আতাউর রহমান শামীম। কিন্তু তাদের কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। 
এদিকে দেশে আত্মীয়স্বজনের নির্বাচন উপলক্ষে অনেকেই বাংলাদেশে গিয়েছেন। নিউইয়র্ক মহনগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদ চৌধুরী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তার ভাই আলমগীর চৌধুরী হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। 
প্রবাসী মনোনয়নবঞ্চিতরা বলেন, প্রবাসে থাকলেও দেশের রাজনীতিতে তারা গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তারা নিজেদের অবস্থানস্থলে পছন্দের দলের জন্য কাজ করছেন। নিজ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখার মানসিকতা থেকেই তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার একজন প্রবাসীকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। 
এদিকে যুক্তরাজ্য থেকেও একাধিক প্রবাসী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের হতাশ করেছে দলটি। কানাডা প্রবাসী সারোয়ার চৌধুরীকেও মনোনয়ন দেননি আওয়ামী লীগ। 
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রবাসে থেকে দেশের রাজনীতি করি দেশকে ভালোবেসে। দেশে উন্নয়ন কমকাণ্ডে প্রবাসীদের ভূমিকা রয়েছে। প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্সযোদ্ধা। আসলে এসবই কথার কথা। এবারের নির্বাচনে প্রবাসীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। প্রবাসীদের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবাসী রাজনীতিক বলেন, প্রায় দুই কোটি প্রবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে হলেও জাতীয় সংসদে অন্তত ৩৫টি আসন প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষণ করা উচিত। অথচ রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ। 
 

কমেন্ট বক্স