আবু সেলিম রেজা
গোছানো হয়নি পুরো স্যুটকেস; দূরের যাত্রা কবে-
কোন প্রত্যুষে; দ্বিপ্রহরে-নাকি সন্ধ্যায় শুরু হবে-
সেই ভাবনায়। আমি নিজে; একা চলে যাব চুপিচুপি,
পাশে যারা ছিল; তারা জানবে না আমার জামা ও টুপি-
কখনো কাহারো দৃষ্টি কাড়েনি; আমার উপস্থিতি-
সেই মত ছিল নীরবে নীরবে-সচল ছায়ার গতি।
এইখানে ছিল ঘর বসবাস; মনে সুদূরের ডাক,
দুই চোখে ছিল অজানা পথের লুকানো হাজার বাঁক।
সে ডাক আসার ক্ষণ গুনি একা-বাক্স বগলে বসে,
জীবনের যত সোনালি সময়; সঞ্চয় হতে খসে-
টুপটাপ পড়ে; শিশিরের মতোÑযাকে বলি উপভোগ,
হারানোর নেশা; বেপরোয়া জাগেÑএ যেন সুখের রোগ!
দুঃখ আমার চিরসাথি; তাই তাহারে করি না ভয়,
তাকে সাথে নিয়ে; নিশীথে ঘুমাই, ভোরের সূর্যোদয়-
সোনালি থালায় থরে থরে আনে; উপাদেয় দুঃখ যত,
সুবেশী; শোভন, নোনা প্রলোভন-মোহ কাম উদ্গত-
হয় তার সাথে; জীবনের স্রোতেÑপ্রতি পদে প্রতি কূলে,
একা একা লড়ি; নিজ সাথে নিজে-ভুলে ভরা ফুলে ফুলে।
ভরসা এটুকু; এই বুকে আছে সাহস ও হিম্মত,
ধপাস পড়েও ঠিক খুঁজে নিই আমার চলার পথ।
আমি চলে গেলে; পুরো চলে যাই-পিছে থাকে কিছু স্মৃতি,
মহাকালে তার কতটা ব্যাপ্তি-কতটা অবস্থিতি,
অতলান্তের জল উচ্ছ্বাসে-একটি বিন্দু মতো,
সাহারা মরুর এক বালুকণা-তার বিস্তার যত
তারও চেয়ে কম; তবুও সত্য, আমি আছি-আমি থাকি,
যুগে যুগে কালে; মরণথাবাকে অবহেলে-দিয়ে ফাঁকি।
এক জীবনের; এক মরণের-মাঝামাঝি চলি বয়ে,
কিছু ফেলে পিছে; কিছু সাথে নিয়ে-বাক্সটি হাতে লয়ে।




