Thikana News
০৬ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

অনির্দিষ্ট গন্তব্যে দেশের রাজনীতি

অনির্দিষ্ট গন্তব্যে দেশের রাজনীতি



 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন ঝড়ো হাওয়া বয়ে চলেছে। এই ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে পড়ে সকল পক্ষই দিশেহারা আর জনগণের জীবন বিপর্যস্ত। রাজনীতির এই টালমাটাল অবস্থায় কোন পক্ষ জিতবে আর কোন পক্ষ হারবে সেটা এখন বড় প্রশ্ন নয়। এখন যেটা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সেটা হচ্ছে, এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রিয় দেশটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

বাংলাদেশটি কেবল সকলের কাছে প্রিয়, তা নয়, দেশটি স্বাধীন করার জন্য বহু মানুষকে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে হয়েছে। স্বাধীনতার ইতিহাসে কোনো দেশের মানুষকে এমন ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি।

রাজনৈতিক হানাহানিতে সেই দেশটির এমন অবস্থা, দেশের সাধারণ মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। কিন্তু এমন অবস্থা যে, সাধারণ মানুষের করার কিছুই নেই। তারা ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত রাজনৈতিক দলের কাছে জিম্মি। বলা হয়ে থাকে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। জনগণই দেশের মালিক। কার্যক্ষেত্রে জনগণ দেশের কোনো বিষয়েই সংশ্লিষ্ট নয়। রাজনীতিবিদদের দাবি অনুযায়ী প্রত্যেক বড় দলেরই সমর্থক ১৬-১৭ কোটি মানুষ। জনগণের কোনো স্বাধীন স্বত্ত্বা বলে কিছু নেই। তারা দলের হয়ে উঠেন-বসেন। জিন্দাবাদ মুরদাবাদ বলেন। ভাঙচুর করেন। রাষ্ট্রের সম্পদ জ্বালান-পোড়ান। মারা যান। মাথা ফাটান। জেল খাটেন। শেষ পর্যন্ত সুবিধা ভোগ করেন নেতারা। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যত লড়াই আন্দোলন হয়েছে, তার নিট ফলাফল এটাই। দেশের মানুষের অবস্থা এখন ঘর পোড়াগরুর মতো। সিদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। তাই যেভাবে একটার পর একটা অবরোধ আসছে, তাতে দেশের মানুষের অবস্থা নিয়ে সত্যি ভাবনা হয় বটে।

এদিকে সরকার নিজেকে যতই দুর্নীতিমুক্ত দেশের দাবি তুলুক, খুবই যে দুর্নীতিমুক্ত সে দাবি ধোপে ঠিকবে না। সরকার নিয়ে মানুষের যে অভিযোগ তার মধ্যে এক নম্বর বলা যায় দুর্নীতি। সে কারণে জনগণ দেখতে পায়, ‘দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সংসদকে হাইকোর্টের ১৬ পরামর্শ’। দেশের হাইকোর্টকে পরামর্শ দিতে হয় জাতীয় সংসদকে। কোনো রাজনৈতিক দলকে নয়। এটা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লজ্জার কিনা, জানা নেই। দলকে পরামর্শ দেয়ার কথা বলছে না হাইকোর্ট, বলছে সংসদকে। হাইকোর্ট মনে করছে, দেশের মধ্যে এতটাই দুর্নীতি হচ্ছে যে, এখনই তাতে লাগাম টানা দরকার। কিন্তু দেশের সরকারকে বলে কোনো লাভ নেই। কোনো রাজনৈতিক দলকে বলেও কোনো ফায়দা হবে না। সে কারণে কোনো দলকে কিছু বলে কোনো ফল হবে না। তাই তো সংসদকে বলা।

সংবাদটিতে বলা হয়েছে, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে জাতীয় সংসদকে ১৬টি পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। রায়ে আদালত আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, জাতীয় সংসদ পরামর্শসমূহ গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশ আগামী ১০ বছরের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরকারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। গত ৭ নভেম্বর বিচারপতি আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৬টি পরামর্শ দিয়ে ৭৭ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করেছেন। এই রায়ের ১৬টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে, যে ১৬টি পরামর্শ কার্যকর করলে দেশ অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
আসলে সকল দেশপ্রেমিক সুশীল সমাজই বিশ্বাস করেন যে, দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাধি দুর্নীতি। তাই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে পেতে হলে হাইকোর্টের এই ১৬টি পরামর্শ মেনে চলা উচিত। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো গভীরভাবে ভেবে দেখতে পারেন।

কমেন্ট বক্স