তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে দেশে আনার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। দণ্ডিত হওয়ায় এবং কারাভোগের শঙ্কা থাকায় তাকে দেশে আনার চিন্তাভাবনা থেকে সরে এসেছে দলটি। চিন্তা করা হচ্ছে তাদের সন্তান ব্যারিস্টার জাইমাকে দেশে আনার। সরকারবিরোধী আন্দোলন চূড়ান্ত তারেক রহমানকে ফেরত পরিণতিতে নেওয়ার লক্ষ্য অর্জনে জাইমাকে শেষ মুহূর্তে রাজনৈতিক ময়দানে শামিল করার পরিকল্পনা তাদের।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। দুর্নীতির দায়ে তিনি দণ্ডিত। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন কারাভোগের দণ্ডে দণ্ডিত। ব্যাপক প্রচারণা ছিল, সরকারের পতন ঘটানোর আন্দোলনের শেষ ধাপে তারেক রহমান ‘মহানায়ক’ হয়ে দেশে ফিরবেন। এখন তার লন্ডনে পলাতক জীবন কাটানোও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সরকারের কাছে তারেক রহমানকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে। লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে তারেক রহমান মানি লন্ডারিং মামলায় দণ্ডিত হওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে দণ্ডিত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলা ও আদালতের রায়ের কপিও পাঠানো হয়েছে। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ও আদালতে দণ্ডিত হওয়া সংক্রান্ত রায়ের কপিও পাঠানো হয়েছে। ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কাছেও এসব ডকুমেন্ট সরবরাহ করে তাদের সরকারকে এদের দেশে ফেরত পাঠাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করা হয়েছে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, নয়াদিল্লিতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকেও তারেককে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে তারেক রহমানের ব্যাপারে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। কিন্তু ব্রিটেন সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পায়নি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ২১ আগস্টের ভয়াবহ নৃশংস গ্রেনেড হামলা এবং এতে ২৪ জনের নির্মম প্রাণহানির ঘটনার উল্লেখ করে আদালতের রায় অনুযায়ী তারেক রহমান এই ঘটনার পরিকল্পক ও নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করার কথা বিশেষভাবে জানানো হয়। ব্রিটেন সরকারের উচ্চতর পর্যায়ে অনুরোধ করা হলেও বিষয়টি সহজসাধ্য না-ও হতে পারে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষে দেশটির ব্যাপক জনগণ নাও থাকতে পারে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার দেশে বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসার ঘটনাটি ব্রিটেনে সমালোচিত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারেক রহমানকে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া সঠিক হবে কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে কূটনৈতিক সূত্র মনে করছে। তবে নির্বাচনের আগে না হলেও নির্বাচনের পর ব্রিটিশ সরকার একটা সিদ্ধান্তে আসবে বলে জানানো হয়। সরকার অবশ্য নির্বাচনের আগেই তাকে দেশে এনে রায় কার্যকর করার পক্ষে। তাতে বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন বলেই সরকারি মহল মনে করে।


ঠিকানা রিপোর্ট


