Thikana News
০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শ্রমিক যায় বিদেশে রেমিট্যান্স যায় কই? 

শ্রমিক যায় বিদেশে রেমিট্যান্স যায় কই? 
ভালো মতো খেলে আর খিদা লাগবে না। কোনো সন্দেহ নেই। যেমন নিশ্চিত শীত পড়লে গরম কমবে। অর্থমন্ত্রীরও সেই দৃষ্টে উপলব্ধি- রেমিটেন্স বাড়লে দেশের চলমান ডলার সংকটসহ অনেক সমস্যা কমবে। সেইসঙ্গে তার প্রশ্নÑ বিদেশে যেভাবে শ্রমিক যাচ্ছে, সেই হারে রেমিট্যান্স আসছে না কেন? এতোক্ষণে অরিন্দমের মতো জানালেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তাকে খতিয়ে দেখতে মানা করেছে কে? আর বিষয়টি কি অজানা? অর্থনীতির কাণ্ডারি, দেশ সেরা সিএ’র জন্য এটা জানা কোনো বিষয়? এমন উপলব্ধিতে এতোদিনই বা লাগলো কেন? 
বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্সও যে অবৈধ পথে বিদেশে পাচার হয়ে যায় বলে আলোচনা পথেঘাটে। প্রবাসী আয়ের খরা আগস্ট থেকে ব্যাপক আলোচিত। গেল আগস্টে গত বছরের আগস্টের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন ব্যাংকাররা। ডলার-সংকট নিয়ে এমনিতেই চাপে আছে বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রতিনিয়ত কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিজার্ভ রাখার শর্ত দিয়েছিল। বর্তমানে তার চেয়ে কম রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংকারদের কাছে হিসাবের আপডেট থাকে। তারা বলছেন, আগের চেয়ে সম্প্রতি ঋণপত্র খোলা বেড়েছে, ফলে আমদানি দায় মেটাতে সামনে আরো বেশি ডলার লাগবে। সামনে সরকারি-বেসরকারি ঋণ পরিশোধও বাড়বে। এতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায়? 
ব্যাংকগুলোতে কী দামে ডলার কেনা-বেচা হচ্ছে, তা যাচাইয়ে আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটি পরিদর্শক দল কিছু ব্যাংক পরিদর্শন করেছে। এ কারণে বেশির ভাগ ব্যাংক বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দরে প্রবাসী আয় কিনতে পারেনি। পরিদর্শক দল যায়নি, এমন ব্যাংকগুলোর কয়েকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। এর কী মানে দাঁড়ায়? 
মানে তো পরিস্কার। বিভিন্ন পথে বিদেশে টাকা পাচার বেড়ে যাওয়া, ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজারে ডলারের মান পার্থক্য বাড়তে থাকলে যা হবার তাই হচ্ছে। আগস্টে ব্যাংকের মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা দেয়া হয়েছে। এর আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনা ধরে হয় সর্বোচ্চ ১১১ টাকা ৭২ পয়সা। কিন্তু, এ সময় হুন্ডির মাধ্যমে আসা প্রতি ডলারে ১১৭-১১৮ টাকা দাম পাওয়া গেছে। লাভ বেশি যেখানে, মানুষতো সেখানেই যাবে। প্রবাসীরা সচরাচর স্বজনের কাছে টাকা পাঠায় ওই সব দেশে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, রিয়া বা ওয়ার্ল্ড রেমিটের মতো প্রতিষ্ঠানে। দেশে স্বজনদের ব্যাংক একাউন্ট থাকলে সেখানে টাকা পাঠানোর আদেশ দিয়ে অর্থ জমা দেন। ব্যাংক একাউন্ট না থাকলে স্বজনদের মোবাইল নম্বর ও পরিচয়পত্রের বিপরীতে টাকা পাঠিয়ে থাকেন। বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সার্ভিসও তাদের পছন্দ। আরো পছন্দ হুন্ডি। ওই হিসাব পাওয়ার কোনো জো আছে? 
মোট কথা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসী আয় জানা বা চিহ্নিত করার উপায় নেই। সেখানে আরো বহু শ্রমিক বিদেশ গেলেই বা কী?  প্রবাসী আয় কমার কোনো কারণ নেই। তারওপর গত ১ বছর ৯ মাসে গড়ে প্রতি মাসে লাখের বেশি কর্মী গেছেন বিভিন্ন দেশে। অথচ এতো কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্স আসছে না। আগের বছরের তুলনায় গত বছর দ্বিগুণ কর্মী গেলেও প্রবাসী আয় কমেছে সাড়ে ৩ শতাংশ। এরপরও বোঝার বাকি থাকে কিছু? তা বুঝতে অর্থনীতিবিদ অথবা সিএ হওয়া লাগবে? 
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা। 

কমেন্ট বক্স