সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান কি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন? এমন কথা জোরেশোরে ফজলুর রহমানই কি সামনে এসেছে যখন তিনি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনায় সভপতিত্ব করেছেন। সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে না দিয়ে কেন তাকে সভাপতিত্ব করার সুযোগ দেওয়া হলো তা নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না।
নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজক ছিল নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ। রেওয়াজ অনুযায়ী সভায় সভাপতিত্ব করার কথা আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রফিকুর রহমানের। কিন্তু সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান। একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মী ঠিকানাকে জানান, এবার অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনার নেপথ্যে শক্তি হিসাবে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি। তার সঙ্গে সিদ্দিকুর রহমানের আগেই থেকেই ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল। সেই লড়াইয়ের কিছুটা পিছিয়ে আছেন সিদ্দিকুর রহমান। এরই প্রভাব পড়েছিল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে এবারই প্রথম মহানগর আওয়ামী লীগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ সংবর্ধনার ভেন্যু হিসাবে ম্যানহাটনের ম্যারিয়ট মার্কি হোটেলের সুবিশাল বলরুম বুকিং দিয়েছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। যদিও সংবর্ধনার খরচের বড় একটি অংশ অনুদান এসেছে বাংলাদেশ থেকে। এছাড়া বাংলাদেশে একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, যিনি নিউইয়র্ক প্রবাসী ও যুক্তরাষ্্রট আওয়ামী লীগের নেতা, তিনিও মোটা অংকের অনুদান দিয়েছেন। তারপরও নানা কারণে মঞ্চে ঠাঁই হয়নি এই দাতার। প্রবাসের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও অনুদান নেওয়া হয়েছে। সংবর্ধনার খরচ মিটিয়ে বাড়তি অর্থও আয়োজকদের কাছে গচ্ছিত আছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে অন্য একটি সূত্র বলছে- ফ্লোরিডা প্রবাসী ফজলুর রহমানও সভাপতিত্ব করার জন্য মোটা অংকের অনুদান দিয়েছেন। অবশ্য এই অর্থ তিনি অনুদান দিয়েছেন সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করার জন্য নয়, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি হবার জন্য। ঢাকায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সঙ্গেও তার সখ্যতা রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব বিবেচনায় ফজলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতির দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন।
এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজক হলেও রফিকুর রহমানকে রেওয়াজ অনুযায়ী কেন সভাপতিত্ব করার সুযোগ দেওয়া হয়নি তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি হয়তো এসব খবর জানেন না। অনেকে বলছেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোন্দলের সুযোগ নিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু এসব কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নেতা-কর্মীদের অসম্মান করা হয়েছে।