শিখা সেন গুপ্তা
আজি কেবল দ্রাক্ষা কুঞ্জবনে ঝরিছে বিষরস।
সেথায় মেনকার নৃত্য হচ্ছে তালভঙ্গ।
শুধু দুটি অন্ন খুঁটি কেহ না কাড়ে মোর যত দিন বাঁচি।
ছায়ানট রাগে আঘাত এসে হানে নিষ্ঠুর অত্যাচারে।
ভগবান তুমি অক্ষমেরে দাও স্বার্থোদ্ধত সুবিচার।
গীতশূন্য অবসাদপুরে মোর চক্ষে স্বপ্নাবেশ।
মৃত্যুর ভয়ংকর গর্জনে সত্যরে করি ধ্রুবতারা।
মৃত্যুরে করি না শঙ্কা! চাচ্ছি যেতে অভিসারে তারই সাথে।
মরণে হোক কৃতার্থ প্রাণ, রক্তপদ্মসম উপহার।
শত শত অভিমান, অসন্তোষ লভুক নির্বাণ মহাগীতে।
ছাড়ায়ে সংসার সীমা, বাঁশিতে বাজুক অন্তরপ্রদীপখানি।
পথকুকুরের মতো জীবন গ্লানি আর পারিনে সহিতে। সাহসবিস্তৃত বক্ষ মোর ফেটে পড়ে মুখ থুবড়ে, আস্ফালনের গর্জনে।
অন্ধকার বিদীর্ণ করে রাশি রাশি আলো বিকিরণের সে পথে আমারে নাও ফিরিয়ে।
ক্ষীতকায় অপমান অক্ষমের বক্ষ থেকে নাও শুষে চিরতরে।
নাহি নিন্দে দেবতারে স্মরি, আশিস দিয়ে যাব বংশ বংশ ধরি।
পাণ্ডবের যশোবিষের প্রতিবিম্ব হেরি মৃত্যু যে আমারই দ্বারে গো!
আপনার সর্বতেজ করো নির্বাপিত, ঢালো শান্তির ধারা মোর আপনালয়ে। জড়ত্বের কূপে হোক সব নির্বাপিত স্নিগ্ধশান্তরূপে।
পাণ্ডবের গাণ্ডীবটঙ্কারে শঙ্কাশত্রু হোক দূরীভূত। শশাঙ্কের বক্ষ থেকে নিঃশেষ হোক কলঙ্কের ইতিহাস।
প্রায়শ্চিত্ত করি অন্তর নরকানলে, সর্পদংশনের তীব্র নরকে।
মধ্যাহ্নের তপনের দ্বেষ করি উচ্ছেদ পূর্ব উদয়শিখরে।
অচেনার মরীচিকা আকুলিছে ক্ষণিকের শোকে।
না বোঝার প্রদোষ-আলোকে টানো যবনিকা স্বপ্ন যত অবগুণ্ঠনে।