Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে কথার শেষ নেই। সবই যে প্রশংসাসূচক, তা নয়। বিরুদ্ধেও অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। তবে বর্তমানে যত না বাংলাদেশকে নিয়ে, তার চেয়েও অধিক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শেখ হাসিনা আজ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘চোখের বালি’ হয়ে গেলেন, তার পেছনের রহস্য কী?

যুক্তরাষ্ট্রের কথাবার্তায়, আচার-আচরণে এ কথা স্পষ্ট হয়ে উঠেছেÑবাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রিয় এবং কাম্য হলেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যেন আর কিছুতেই তারা মেনে নিতে পারছে না। শেখ হাসিনাকে তারা যেন আর ক্ষমতায় দেখতে চাচ্ছে না। এর পেছনে কারণ কী? কারণ অনেক কিছুই মনে হতে পারে। এর ব্যাখ্যা বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন রকম হতে পারে। 

বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান। সমুদ্রের নিচে এর বিপুল সম্পদ। এর তেল-গ্যাস সম্পদ। তবে বেশিটা মনে হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর অবস্থানগত গুরুত্ব। বাংলাদেশ পক্ষে থাকলে একদিকে ভারত, আরেকদিকে চীনকে যেমন বাগে রাখা সহজ হয়, তেমনি বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে তার জলে-স্থলে-অন্তরিক্ষে শক্তির ভারসাম্য এনে অনেকটা স্বস্তি লাভের পথ করে নিতে পারে।

অন্যদিকে অনেকের বিশ্লেষণে এও ধরা দেয়, বাংলাদেশকে পক্ষে পেতে যুক্তরাষ্ট্র মরিয়া হয়ে ওঠে, যেহেতু ওয়াশিংটনের ধারণা হয়ে গেছে, ঢাকার ওপর বেইজিংয়ের প্রভাব অকল্পনীয়। চীনের এই প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে বের করে নিয়ে আসতেই হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশকে আস্থায় না আনতে পারছে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রের স্বস্তি নেই। এরই প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একটি মনস্তাত্ত্বিক চাপ লক্ষ করা যাচ্ছে।

বহির্বিশ্বে আমেরিকার এখনো যে ভাবমূর্তি রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এখনো তারা চাপ দিয়ে নিজেদের ইচ্ছা পূরণ করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আমেরিকার এই ক্ষমতাকে অস্বীকার করা যাবে না। বৈশ্বিক পরিবেশ এখন অবশ্যই প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে নেই। একক পরাশক্তির দাপট আগের মতো নেই। সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই। 

বিশ্বজুড়ে শক্তির ভারসাম্যও এলোমেলো হয়ে গেছে। চীন এখন শক্তির ভারসাম্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। তবু সমর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামরিক শক্তিতে আমেরিকার সমকক্ষ এখনো কেউ হয়ে ওঠেনি। অনেক বিশেষজ্ঞই বিশ্বাস করেন, আমেরিকার অস্ত্রভান্ডারে যেসব ধ্বংসাত্মক অস্ত্র মজুদ আছে, তা অনেক সমরবিদের ধারণাতেও নেই।

বিশ্ব সমরশক্তির ভারসাম্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন অনেক আগে থেকেই ছিটকে পড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক বছর পার করে এসেছে। এখনো সিদ্ধান্তসূচক কিছু দেখাতে পারেনি রাশিয়া। অনেকেই মনে করেন, এই যুদ্ধে আমেরিকা থাকলে সে যুদ্ধ ইতিমধ্যেই একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে যেত। 

সম্প্রতি আমেরিকার এই ক্ষমতা বিশ্ব দেখতে পেয়েছে ৯/১১-এর পর আফগানিস্তান ও ইরাকে। তাই আমেরিকার শক্তিকে অবমূল্যায়ন করার কোনো কারণ নেই। শক্তির ভারসাম্য এখন আমেরিকা নিজেই। আমেরিকার নিজের অস্ত্রভান্ডার তার নিজের জন্যই হুমকি। এই হুমকিই যদি আমেরিকাকে সেই সব চরম ধ্বংসাত্মক অস্ত্র ব্যবহারে বিরত রাখে।

তাই এখন কোনো হটকারী সিদ্ধান্তে না গিয়ে কূটনৈতিক পথেই সব সংকটের সমাধান খুঁজে নেওয়া আজকের সময়ে জরুরি। ক্ষমতা দেখিয়ে সমাধানের সন্ধান কেবল ধ্বংসই ডেকে আনবে।

কমেন্ট বক্স