জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর, এটা সব থেকে বড় সংকট। এ সংকট সমাধানের জন্য এনসিপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেছে। ২৭ অক্টোবর (সোমবার) বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ ও প্রথম আলো। গোলটেবিল বৈঠকটি পরিচালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।
আখতার হোসেন বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতে পারে, এই ধারণাই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও ওই অর্থে আমরা অতীতের সময়গুলোতে দেখিনি। এটা দেখেছি যে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা আসলে কীভাবে সামনে আরও দীর্ঘ সময় তাঁদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করে রাখা যায়, সে চেষ্টাই তাঁরা করেছেন। সেই জায়গাতে আমরা একটি ছেদ নিয়ে আসতে চাই।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসছে, সেখানে আমরা কিছু আলাদা প্রস্তাব দিয়েছি। যার মধ্য দিয়ে আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফরমেশন (গঠন), সেটা কীভাবে সব দলের অংশগ্রহণে হতে পারে এবং কীভাবে এটা একদলের; অর্থাৎ যারা ক্ষমতাসীন থাকে, তাদের প্রভাবমুক্ত হতে পারে, সে বিষয়গুলো রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আসলে রাজনীতি হয়নি। বাংলাদেশে একধরনের মাস্তানি, একধরনের গুন্ডামি—সেটাই বাংলাদেশের প্রধানতম রাজনীতি হিসেবে মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্ষমতার হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে হওয়াটা বেশি জরুরি বিষয়। এখন এই জায়গাতেই সব থেকে বড় সংকট। আমরা যখন তরুণদের অংশগ্রহণের কথা বলছি, নারীদের অংশগ্রহণের কথা বলছি নির্বাচনে; সেই সময়ে আসলে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার সঙ্গে এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।'
নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা অনেক দিন এটা নিয়ে বিতর্ক করেছি। কিন্তু শেষে রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একমত হয়েছি যে নারীরা সরাসরি তাঁরা ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে সেটা; সেটা ক্লাস্টার করে হবে, নাকি ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে হবে; এই পদ্ধতির বেড়াজালে গিয়ে আমরা এত সুন্দর একটা প্রস্তাবনাকে বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টিতে তরুণেরা যেমন আছেন, নারীদের একটা বড় ধরনের অংশগ্রহণ আমাদের দলে রয়েছে। আমরা দলের নীতিনির্ধারণী জায়গাতেও নারীদের অংশগ্রহণ আমরা সুনিশ্চিত রাখার চেষ্টা করেছি।’
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম প্রমুখ।
ঠিকানা/এএস


ঠিকানা অনলাইন


