আমি এখন ভাত রাঁধতে জানি।
নারকেলের সন্দেশ
চিড়ার নাড়ু আর মুগতক্তি-
রসে ফেলতে ফেলতে
হাতের আঙুলে কড় গুনে দুইয়ের সাথে দুই যোগ করলে
চারটে মরিচে যে এক গন্ডা হয়; সেও জানি।
আনাজ কাটা শেষে
ঘরে তেল বা নুনের সংকটে
পড়শি বাড়ি থেকে কতক কর্জ এনে
অতিথি নারায়ণে গেরস্থের মান রাখতে হয়, সেটুকুও জানি।
যাত্রাকালে ডাকতে নেই, কালো বেড়াল অশুভ
তিন শালিকের মানে ঝগড়া,
ভোরবেলায় কাক ডাকলে দুঃসংবাদ আর
সন্ধ্যার আহ্নিকে যে খোলা চুল রাখতে বারণ; সেও জানি।
ঢেঁকিঘর আর তুলসীতলাও চিনে গেছে-
আমার আলতারাঙা পা।
ঈপ্সিত কালীবাড়ি পেরিয়ে
চৌমুহনীর ঘাটে সাম্পান ভিড়তেই
বাতাস কতটা উতলা হয়;
কতটা জল কেটে হয় মাঝির ঘরে ফেরা;
বেলা পড়ে আসতেই-
ঠাম্মার ফ্যালফ্যালে চোখ, সেও আমি পড়তে জানি!
আদাব, কদমবুসি-
এমনকি আভূমি সেলাম; কবেই শিখে নিয়েছি!
রাত্তির অনেক বাড়লে
আকাশে যখন গাঢ়-ঘন চাঁদ;
শরীরে শরীর,
নিঃশ্বাসে পুড়ে যায় বড়ো-ভগবান ও পৃথিবী;
রসিকতার ছলে শুনি-
ভরা বর্ষায় পাললিক হয়ে
গিন্নি আমার পাক্কা হিসাবি!
সোয়ামির সেরেস্তাদারি ষোলো আনাই বোঝে!
ঋতু বদলের ভোর,
দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া, যত অনাদর;
না পারার গ্লানি!
সনাতন দা, আমার বিধাতাপুরুষ-
আমি এখন ভাত রাঁধতে জানি।
প্রিয় ফুল প্রিয় পাখি প্রিয় আকাশ
প্রিয় প্রাক্তন-
আমার অবেলার অবহেলা,
কথা কওয়া সেই নতমুখ!
সনাতন দা—
অনিত্য এই সংসারের
মায়া মহামায়ায় তুমি আমার আরাধ্য অসুখ।