Thikana News
০২ অগাস্ট ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

গাছবলদের কথকতা

এনসিপির জন্মই হয়েছে মুজিববাদের বিরোধিতা করে, তারা কি তাদের সেই জন্মসূত্রকে অস্বীকার করবে গোপালগঞ্জের খাতিরে? যদি করেই, তবে তাদের গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার কী ছিল? জানি, এসব প্রশ্নের উত্তর নেই সেসব ‘গাছবলদ’দের কাছে। এনসিপি দল হিসেবে জন্মের ছয় মাসও পার করেনি। সে হিসেবে তারা শিশু। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে যারা অ্যাক্টিভিজম করছেন, তারা তো সব পাকা পেঁপে হয়ে গিয়েছেন, কিন্তু চিন্তা রয়ে গেছে এখনো বালসুলভ। গাছবলদ মার্কা আরকি।
গাছবলদের কথকতা
‘গাছবলদ’ বলে একটি আঞ্চলিক শব্দ রয়েছে। তার অর্থ হলো বলদের চেয়েও অধিক বলদ। আজকে সামাজিক মাধ্যমে দু-একটি লেখা দেখে শব্দটি মনে পড়ল। বর্তমানের আলোচিত বিষয় হলো এনসিপির ‘রোড মার্চ টু গোপালগঞ্জ’। এ বিষয়ে আমার একটি লেখা বাংলা আউটলুক প্রকাশ করেছে। সেখানে এনসিপির গোপালগঞ্জ কর্মসূচি নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ইচ্ছা করেই কিছু বিষয় সেখানে যুক্ত করিনি। কারণ ‘গাছবলদ’ মার্কা বিষয়ের জন্য ওই লেখাটাকে উপযুক্ত মনে হয়নি।
মূলকথায় আসি। একজন লিখলেন অনেকটা এরকমÑএনসিপি শেখ মুজিবের জন্মস্থানে গিয়ে মুজিববাদ নিপাত যাক বললে সেখানের মানুষের প্রতিক্রিয়া তো মারমুখীই হবে। এই নাবালকসুলভ আলাপচারীরা আবার এনসিপির লোকদের নাবালক বলেন। বলেন, চিলড্রেন পার্টি। নাবালকসুলভ এ প্রশ্নের জবাব এখনকার স্কুলে পড়া একটা বাচ্চাও দিতে পারবে। বলি, শহীদ জিয়ার জন্মভূমিতে কি আওয়ামী লীগ জিয়াকে খুনি বলেনি, বলেছে তো। কুমিল্লায় গিয়ে খোন্দকার মোশতাককে খুনি বলা হয়নি। পাবনায় দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে রাজাকার বলা হয়েছে। সেখানের মানুষের প্রতিক্রিয়া কি গোপালগঞ্জের মতো ছিল?
এনসিপির জন্মই হয়েছে মুজিববাদের বিরোধিতা করে, তারা কি তাদের সেই জন্মসূত্রকে অস্বীকার করবে গোপালগঞ্জের খাতিরে? যদি করেই, তবে তাদের গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার কী ছিল? জানি, এসব প্রশ্নের উত্তর নেই সেসব ‘গাছবলদ’দের কাছে। এনসিপি দল হিসেবে জন্মের ছয় মাসও পার করেনি। সে হিসেবে তারা শিশু। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে যারা অ্যাক্টিভিজম করছেন, তারা তো সব পাকা পেঁপে হয়ে গিয়েছেন, কিন্তু চিন্তা রয়ে গেছে এখনো বালসুলভ। গাছবলদ মার্কা আরকি।
কিছু ‘গাছবলদ’ এনসিপির ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে মৃত্যুকে চব্বিশের জুলাইয়ের সঙ্গে তুলনা করছে। ‘গাছবলদ’দের বলি, চব্বিশের জুলাইয়ে নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা করেছিল ফ্যাসিস্ট রেজিমের বরকন্দাজরা। সেই সশস্ত্র ফ্যাসিস্টদের অ্যাসিস্ট করতে গিয়ে মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে বাহিনীগুলো। আর পঁচিশের জুলাইয়ে সেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের সশস্ত্র বরকন্দাজরা একই কায়দায় নিরস্ত্র এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছিল। কিন্তু এবার বাহিনীগুলোর অবস্থান সঠিক থাকায় তারা সশস্ত্র ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছে, যা তাদের করা উচিত ছিল চব্বিশের জুলাইয়ে। বুঝলেন তো ‘গাছবলদ’গণ।
আসি বিএনপির নেত্রী পাপিয়ার প্রবাসী নিয়ে কথা বিষয়ে। তাদের ভোটার করার ব্যাপারে তার প্রবল আপত্তি। বিএনপিকে ডোবানোর জন্য এমন দু-চারজন পাপিয়াই যথেষ্ট। ফ্যাসিস্ট রেজিমের কর্ণধাররা বুঝেছিলেন প্রবাসীরা কী করতে পারেন। পাপিয়ার কথায় যদি প্রবাসীরা রেমিট্যান্স শাটডাউনের ঘোষণা দেন, তাহলে অবস্থা কী দাঁড়াবে? বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। রাষ্ট্রীয় আয়েরও অন্যতম প্রধান উৎস। প্রবাসীদের বিএনপি-বিরুদ্ধ করে তোলার জন্য পাপিয়ার কথাই মোর দ্যান এনাফ। ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতনে প্রবাসীদের অবদান ভোলার মতো নয়। ফ্যাসিস্ট রেজিমকে অনেকটা অসহায় করে তুলেছিল প্রবাসীদের রেমিট্যান্স শাটডাউন কর্মসূচি। প্রবাসীদের সামর্থ্য সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণাই নেই এসব নেত্রীর। কিংবা থাকলেও তারা বিশেষ কারণে প্রবাসীদের বিএনপি-বিরুদ্ধ করতে চাইছে। এখন বিএনপিরই ভাবতে হবে, পাপিয়ারা তাদের জন্য অ্যাসেট না লায়াবিলিটি।
বিএনপির রাজনৈতিক পরিচিতি হলো ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’। রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান বুঝেছিলেন জাতিবাদী রাজনীতি বিশ্বে অচল। রাজনীতি হতে হবে রাষ্ট্রভিত্তিক। যে কারণে তিনি বিএনপির মূল আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে বিএনপির মৃত্যু ঘটবে।
বিএনপির সহযোগী সংগঠনের এক কেন্দ্রীয় নেতা, বিএনপির সমাবেশে স্লোগান তুললেন, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’। এরা কি বিএনপির রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটাতে চায়? এর পরও বিএনপির মূল নেতৃবৃন্দ চুপ করে আছেন। কেন আছেন, এই প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক। তবে কি বিএনপি তার রাজনৈতিক দর্শন পরিবর্তন করতে চাইছে। এসব নেতার স্লোগান কি তারই টেস্ট কেস?
 

কমেন্ট বক্স