ফিরোজ হুমায়ুন
আমি একজন বুদ্ধিজীবী বুদ্ধি বেচে খাই,
আমি একজন পরজীবী, আমার নিজের কিছু নাই।
বিবেককে রেখেছি বাক্সবন্দী,
তাতে তোমরা যতই করো গালমন্দ।
তাতে আমার করার কিছুই নাই,
বড় গাড়ি বড় বাড়ি, চাই আমার চাই।
দু’দলেই তাল মারি, ভাব দেখাই আমি নিরপেক্ষ,
দিনের আলোয় ভাব দেখাই, আমি নই কোনো পক্ষ।
তবে রাতের আঁধারে হাজিরা দিই নেতার দরবারে,
তা না হলে জুটবে না পদ ও পয়সা এই কারবারে।
এসবে আমার লজ্জা-শরম নাই,
কারণ আমি তো জেনেশুনেই বুদ্ধি বেচেই খাই।
আমি নাকি বুদ্ধি বেশ্যা দুষ্টু লোকে বলে,
পুরোনো ওসব নীতি নিয়ে পড়ে থাকলে কি চলে?
ওসব একটু শুনতেই হয় বুদ্ধিজীবী হলে।
ন্যায়নীতি অনেক করেছি, ওসবের ধার ধারি না আর,
ওসব এখন করে যারা, ভাত জোটে না তার।
তেল মারো, মাখন মারো,
ন্যায়নীতির গুল্লি মারো,
মানবতার খ্যাতা পোড়ো,
উপরে ওঠার মই ধরো।
এখানে নেতার ইচ্ছামাফিক চলতে হবে,
হাওয়া দেখে কথা বলতে হবে,
আকাশ দেখে রং বদলাতে হবে,
তৈল মর্দন করতে হবে,
প্রয়োজনে জুতাও চাটতে হবে।
নেতা যা বলে তাকেই ভালো বলতে হবে,
মিথ্যাকেও সত্যি বলতে হবে,
রাতদিন নেতার গুণগান করতে হবে,
নেতাকে ফেরেশতা মাফিক মানতে হবে।
চিবিয়ে চিবিয়ে কথা হবে,
নিউট্রাল নিউট্রাল ভাব দেখাতে হবে,
মাঝেমধ্যে নেতার নামে উল্টাপাল্টা বলতে হবে,
ওসব নাটক নেতার প্ল্যানমাফিক করতে হবে।
আর কত দিন করবে জনগণের মতকে অসম্মান?
আর কত দিন থাকবে তুমি শিরদাঁড়াহীন এক বেইমান?
আর কত দিন থাকবে মুখোশের আড়ালে,
পেয়েছ ঠিকই বাড়ি গাড়ি, কিন্তু বাকি সব তো হারালে ॥