পাকিস্তানের ক্ষমতা থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরিফ আগামী মাসের মাঝের দিকে দেশে ফিরতে চলেছেন। মঙ্গলবার নওয়াজ শরিফের পরিবারের সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নওয়াজ শরিফের পরিবারের ওই সূত্র বলেছে, এক মাস পর লন্ডন থেকে পাকিস্তানে যাবেন নওয়াজ। এর অর্থ সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানে ফিরতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
শরিফ পরিবারের আইনজীবী ও রাজনৈতিক সহযোগীরা পিএমএল-এনের এই নেতাকে দুই মাস আগে শুরু হওয়া তার ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করার পর পাকিস্তানে ফেরার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওই সফর শেষে গত সপ্তাহে লন্ডনে পৌঁছেছেন তিনি। পিএমএল-এনের অনেক নেতাও নওয়াজ শরিফকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফেরা ভালো হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। 
নওয়াজ শরিফের দেশে ফেরার আলোচনা ও ব্যবস্থার সাথে জড়িত ওই সূত্র বলেছে, ‘প্রায় চার বছরের নির্বাসন শেষে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তানে ফেরার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং সবকিছু ঠিকভাবেই চলছে।’
পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মরিয়ম নওয়াজের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ।
ওই সূত্র বলেছে, নওয়াজের সাথে দেখা করতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লন্ডনে যাবেন সদ্য পদত্যাগ করা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এছাড়াও পিএমএল-এনের নেতা রানা সানাউল্লাহ, খাজা আসিফ, জাভেদ লতিফ, সাদ রফিক, পারভেজ রশিদ, ইরফান সিদ্দিকী এবং আরও অনেকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। তাদের এই সফরে নওয়াজের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আলোচনা ও পরিকল্পনা হবে।
সূত্রটি বলেছে, দুর্নীতির এক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান নওয়াজ শরিফ। আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও লন্ডনে থেকে যান দেশটির সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। চার বছর পর দেশে ফেরা উপলক্ষ্যে নওয়াজ শরিফকে বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা করছে পিএমএল-এন।
পিএমএল-এনের শীর্ষ সোশ্যাল মিডিয়া কর্মী ও সাবেক প্রাদেশিক আইনপ্রণেতা হিনা পারভেজ বাট বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন এবং সেখানে তিনি নওয়াজের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, দলের সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফ লাহোরে অবতরণ করলে সেখানে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য কয়েক হাজার মানুষের সমাগমের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি বলেছে, রিভিউ অব জাজমেন্টস অ্যান্ড অর্ডারস অ্যাক্ট-২০২৩ এর অধীনে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় নওয়াজের মামলায় কোনও প্রভাব ফেলবে না।
জিও নিউজ বলছে, শরিফ পরিবারের আইনজীবীরা বিভিন্ন মামলায় নওয়াজের সম্পূর্ণ আইনি সুরক্ষা প্রস্তুত করেছেন এবং সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানে অবতরণ করার সাথে সাথেই আইনি ও বিচারিক ব্যস্ততা শুরু হবে।
গত সপ্তাহে শেহবাজ শরিফ জিও নিউজকে বলেছিলেন, তার বড় ভাই সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে আসবেন। আর নওয়াজ শরিফের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের সাথে এর কোনও যোগসূত্র নেই। তিনি বলেন, নওয়াজ শরিফ রাজনীতিতে পাঁচ বছরের অযোগ্যতার সময়কাল পূর্ণ করেছেন। 
শেহবাজ বলেন, বর্তমানে যে আইনটি কার্যকর রয়েছে তাতে অযোগ্যতার সর্বোচ্চ মেয়াদ পাঁচ বছর বলে উল্লেখ করা আছে। নওয়াজ শরিফ ফিরে আসবেন এবং এই রায় এতে কোনও বাধা হবে না। নওয়াজ শরিফ আগামী মাসে পাকিস্তানে ফিরে আসবেন এবং আইনের মুখোমুখি হবেন। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনী প্রচারণায় নেতৃত্ব দেবেন তিনি। 
কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর লন্ডনে যান নওয়াজ শরিফ। সেই সময় তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছিল, ইমরান খানের সরকার ও তার সমর্থকরা নওয়াজ শরিফকে বিষ প্রয়োগের চেষ্টা করেছে। যে কারণে তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে লন্ডনের হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিক ও লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে চার মাস ধরে চিকিৎসা নেন তিনি। সূত্র: জিও নিউজ।
ঠিকানা/এসআর
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                