Thikana News
১৪ মার্চ ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমেরিকার আশঙ্কাই সত্যি হলো

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমেরিকার আশঙ্কাই সত্যি হলো সংগৃহীত
জুলাই-আগস্টের বাংলাদেশের বিপ্লবের পর পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস তিন দিন পর আমেরিকা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা করেছিল, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের সিভিল আনরেস্টের পর থেকে সহিংস সংঘর্ষ মূলত শেষ হয়ে গেছে, তবে পরিস্থিতি স্বল্প সময়ের নোটিশে পরিবর্তিত হতে পারে। মার্কিন নাগরিকদের সকল সমাবেশ, এমনকি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এড়িয়ে চলার জন্য স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা সামান্য বা কোনো সতর্কতা ছাড়াই সহিংস হয়ে উঠতে পারে। আরও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিল, সন্ত্রাসী হামলা খুব কম বা কোনো সতর্কতা ছাড়াই ঘটতে পারে। সন্ত্রাসীরা পর্যটন স্থান, পরিবহন কেন্দ্র, বাজার/শপিংমল, রেস্তোরাঁ, উপাসনালয়, স্কুল ক্যাম্পাস এবং সরকারি স্থাপনার মতো জনসাধারণের এলাকাগুলোকে লক্ষ্য করে।
আমেরিকার সেই আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যেখানে সেখানে মিছিল সমাবেশ, ধর্মঘট, রাস্তা বন্ধ হওয়া, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, খুনসহ নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বাংলাদেশে। অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য। তবে এখনো সন্তোষজনকভাবে তা উন্নতি করতে পারছে না। এর পেছনে নানা কারণ কাজ করছে। যে কারণে এখনো বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য সেপ্টেম্বরের অ্যালার্ট জারি রয়েছে।
এদিকে আর কয়েক দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই উৎসব উদ্্যাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেকেই বাংলাদেশে যাচ্ছেন। যারা বাংলাদেশে যাবেন, তারা দেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই ট্রাভেল অ্যালার্ট দেখে যাবেন ও তাদের দেওয়া নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলে সমস্যা হলে তা মোকাবিলা করা ও এড়ানো সহজ হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট থেকে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ভ্রমণের বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, হঠাৎই পরিবর্তন হতে পারে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। সেখানে কী ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে, এর একটি চিত্রও তুলে ধরা হয়েছিল। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য তারা ৪ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করেছিল। বর্তমানে ৩ নম্বর সতর্ক অবস্থা জারি রয়েছে। আমেরিকানরা, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এবং বাংলাদেশি আমেরিকানরা এই সতর্কসংকেত যাতে মানেন, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ভ্রমণের বিষয়ে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ দেওয়া সতর্কতার স্তরে বলা হয়েছিল :
সিভিল আনরেস্ট, অপরাধ এবং সন্ত্রাসবাদের কারণে বাংলাদেশে ভ্রমণ পুনর্বিবেচনা করুন। কিছু এলাকায় ঝুঁকি বেড়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ না করার জন্য বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ এবং অন্যান্য নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা (সম্মিলিতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে পরিচিত)।
দেশের সারাংশ বিবেচনা করে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট থেকে আরও বলা হয়, ভ্রমণকারীদের জনাকীর্ণ এলাকায় পকেটমারের মতো ছোটখাটো অপরাধ সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে ছিনতাই, ডাকাতি, হামলা এবং অবৈধ মাদক পাচারের মতো অপরাধ বেশির ভাগ অপরাধমূলক কার্যকলাপ, তবে বিদেশিদের তাদের জাতীয়তার কারণে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, এমন কোনো ইঙ্গিত নেই। সময় এবং অবস্থানের ওপর নির্ভর করে এই অপরাধগুলো পরিস্থিতিগতভাবে ঘটে। নিরাপত্তার কারণে বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের কিছু ভ্রমণ বিধিনিষেধ রয়েছে। এই ভ্রমণ বিধিনিষেধ, অবকাঠামোর অভাব এবং সীমিত হোস্ট সরকারের জরুরি প্রতিক্রিয়া সংস্থানের কারণে বাংলাদেশে, বিশেষ করে ঢাকার বাইরে মার্কিন নাগরিকদের জরুরি পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের সীমিত ক্ষমতা থাকতে পারে।
আরও বলা হয়, ফেসবুক বা এক্সে স্টেট ডিপার্টমেন্ট অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশের জন্য দেশীয় নিরাপত্তা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করতে হবে। আপনার ভ্রমণ সম্পর্কিত সর্বশেষ ভ্রমণ স্বাস্থ্য তথ্যের জন্য সিডিসি পৃষ্ঠাটি দেখতে হবে। জরুরি পরিস্থিতির জন্য আকস্মিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করুন। অনুগ্রহ করে ভ্রমণকারীদের চেকলিস্ট পর্যালোচনা করতে হবে। যারা বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন ও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবেন, তাদের পাসপোর্টের বৈধতা থাকতে হবে। কমপক্ষে ছয় মাস। পাসপোর্টে অবশ্যই একটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে। বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রয়োজন প্রযোজ্য ক্ষেত্রে। তবে যারা বাংলাদেশি কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডধারী বা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তাদের জন্য নো ভিসা রিকয়ার্ড সিল থাকতে হবে। সর্বশেষ তথ্যের জন্য বাংলাদেশি দূতাবাসের ওয়েবসাইট দেখতে হবে।
এ ছাড়া বলা হয়, বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে মুদ্রা বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আছে, তা মানতে হবে। প্রবেশের জন্য মুদ্রার নিষেধাজ্ঞা হলো কারও কাছে যদি ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা তার বেশি থাকে, তাহলে তা ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফেরার সময় সেখান থেকে বাংলাদেশি পাঁচ হাজারের বেশি টাকা আনা যাবে না। প্রবেশের সময় ঘোষিত মার্কিন ডলারের বেশি নিয়ে যাত্রা করা যাবে না। ঘোষণা ছাড়া বাংলাদেশি পাঁচ হাজার টাকার (প্রায় ৫৮.৮২ মার্কিন ডলার) বেশি বাংলাদেশ থেকে কেউ নিতে পারবেন না। কেউ যদি মুদ্রা বহনের ক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে।

কমেন্ট বক্স