আগামী সাফে সাবিনারাই কোচের দায়িত্ব পালন করতে চান। চাইলে আগামী সাফে কোচ ছাড়াও খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দলের জন্য কোনো কোচের প্রয়োজন নেই বলে সাত নারী ফুটবলার বিশেষ কমিটির কাছে জানিয়েছেন। তাদের মতে বাংলাদেশ যে পর্যায়ে রয়েছে আগামী সাফে কোচ ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন হবে। খেলোয়াড়রা নিজেরাই অনুশীলন করে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে। বাফুফের বিশেষ কমিটির মুখোমুখি হওয়া রোববার প্রথম সভায় সাত নারী খেলোয়াড় এ সব তথ্য জানিয়েছেন কমিটির কর্মকর্তাদের কাছে।
সানজিদা আক্তার, মাতসুসিমা সুমাইয়া, অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, শিউলী আজীম সাথি বিশ্বাস, সাগরিকা বিশেষ কমিটির কাছে তাদের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। কমিটি সূত্রে জানা যায়, খেলোয়াড়রা দাবি করেছেন আগামী সাফে কোচ ছাড়াও তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন। তারা ফুটবল খেলে এমন একটি পর্যায়ে চলে গেছেন যে, সাফে চ্যাম্পিয়ন হতে এখন আর কোচের কোনো ভূমিকা নেই। নিজেরা নিজেরা অনুশীলন করেই সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব।
তবে সবার কণ্ঠে দাবি একটাই ছিল ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে বাদ দিতে হবে। বিশেষ কমিটি জানতে চেয়েছিল বাফুফের সভাপতি যদি কোচকে রেখে একটা সমাধান করে দেন? নারী ফুটবলাররা কঠিন জবাবে জানিয়েছেন তারা কারো কথাই মানবেন না। শুনবেন না। পিটারকে সরিয়ে দিতে হবে।
কমিটি সূত্র জানায়, প্রথমে জুনিয়রদের ডাকা হয়েছিল। ছোটরা কোমলমতি। এ সব ভেবে সাথী বিশ্বাস এবং সাগরিকাকে ডেকে কথা শুনে পিলে চমকে গিয়েছে বিশেষ কমিটির কর্তাদের। কথার ধার শুনে চোখ কপালে উঠে যায়। সভাপতির কাছে চিঠি কে লিখে দিয়েছে? এমন প্রশ্নে জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসিসুমা সুমাইয়া বিশেষ কমিটিকে জানিয়েছেন-তার ভাই লিখে দিয়েছে।'
বিশেষ কমিটির কারো কারো কাছে মনে হচ্ছে ভাই লিখলেও চিঠির মধ্যে ফুটবলের টেকনিক্যাল বিষয়টি সাধারণ মানুষ, সবার বোঝারও কথা না। কোচরা বুঝবেন। তা ছাড়া সভাপতিকে ইংরেজিতে চিঠি লেখার প্রয়োজনীয়তা কেন অনুভব করলেন তারা। সুমাইয়ার ভাইকে দিয়ে কেন লিখিয়ে আনতে হবে। নাকি চিঠির পুরো ড্রাফ অন্য কেউ লিখে দিয়েছেন সেটাও আমলে রাখছেন কর্মকর্তারা।
সুমাইয়া কমিটির কাছে দাবি করেছেন তিনি কিছুই জানতেন না। খেলোয়াড়রা ব্রিটিশ কোচের কাছে অনুশীলন করবেন না, কোচ বাদ দিতে হবে। সেটি নাকি তার জানা ছিল না। চিঠিতে পরিষ্কার লেখা রয়েছে কথাগুলো এবং সেখানেই সুমাইয়া স্বাক্ষর করেছেন।
সুমাইয়ার মা জাপানি, বাংলাদেশি বাবা। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উন্নতি দেখে জাপান থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। কিন্তু তার পারফরম্যান্স কোনো ভাবেই ভালো না। সুমাইয়ার চেয়ে ভালো খেলা একাধিক ফুটবলার দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়ে বাড়ি চলে গেছেন।
কিন্তু তাদের তুলনায় নিম্নমানের পারফরম্যান্সের পরও সুমাইয়া বাফুফের ক্যাম্পে রয়েছেন, বেতন ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, নিয়মিত জাতীয় দলে রয়েছেন এবং বসুন্ধরা যখন দল গঠন করেছিল সেখানেও সুমাইয়া দলভুক্ত হয়েছিলেন। কোথাও নিয়মিত খেলার সুযোগ পাননি। জাতীয় দলে একাদশে সুমাইয়া কয়টি ম্যাচ খেলেছেন সেটি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বিশেষ কমিটি হতাশ। ক্যাম্পের অন্যান্য খেলোয়াড়দের দাবি 'সাবিনা আপু সুমাইয়াকে সব জায়গায় রাখেন। সাবিনা আপুর জন্যই সুমাইয়া জাতীয় দলে থাকেন। সাবিনা আপুই সুমাইয়ার অভিভাবক।'
ঠিকানা/এসআর