কিছুদিন আগের ঘটনা। একটি ফোন পেলাম। আশপাশেই আগুনের শিখা। ছুটে গেলাম। ফায়ার ব্রিগেডের অনেক গাড়ি। মেয়েটি কাঁদছে। ধরে বসলাম। প্রতিবেশী অনেকেই উপস্থিত। কান্না থামাতে পারছি না। বাচ্চা দুটোকে অন্য প্রতিবেশী নিয়ে গেল। স্বামী খবর পেয়ে ছুটে এলেন। সৃষ্টিকর্তাকে শুকরিয়া জানালেন। বউ-বাচ্চা অক্ষত আছে। সুস্থ আছে। আরও দু-চারটি বাড়ি পুড়েছে। মেয়েটির কান্না থামছে না। মানসিক অবস্থা খারাপ।
-আমার সব শেষ হয়ে গেল।
-তুমি সুস্থ আছ। বাচ্চা সুস্থ আছে।
-আপা, আমার সাজানো-গোছানো সংসার। আমার সব নতুন করে করতে হবে। আপা, আমি কী করব?
-এ দেশে বাড়ির Insurance আছে। সব ঠিক হয়ে যাবে। মন খারাপ করো না।
-আপা। এক দিনে কি আর সংসার গোছানো যায়। কত প্রয়োজনীয় কাগজ। এসব কোথায় পাব? এসব কি ফিরে পাব?
এবার কোনো কথা বলি না। অকাট্য সত্য। সংসার তো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। যার যারটা সে বোঝে। একটি সংসার। কিন্তু আমরা সান্ত্বনা দিচ্ছি-অনেক মানুষ।
সাম্প্রতিক সচিবালয়ে আগুন। আমার কারণ জানা নেই। একজনের হৃৎপিণ্ড ক্ষত হয়-ডাক্তার রোগীর পাঁজরের ইতিহাস খুঁজে বের করেন।
Heard Transplant করা যেতে পারে, যেখানে দেশের হৃৎপিণ্ড পোড়ে, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কী করে এই ক্ষতিপূরণ হবে? যারা সাধারণ মানুষ, অনেক কিছুই বোঝে না, তারাও কষ্ট পাচ্ছে। দেশবাসী নিশ্চুপ।
মেয়েটি কাঁদছে। সংসার এক দিনে গড়ে ওঠেনি। আবার নতুন করে সাজাতে হবে। অনেক কষ্ট, অনেক শ্রম, অনেক টাকা-পয়সা।
সচিবালয়ের আগুনে ফায়ার ব্রিগেডের একজন কর্মী মারা যান। খুবই কম বয়স। সবে জীবন শুরু করেন। পরিবার ভাষাহীন। সৃষ্টিকর্তা তাকে জান্নাতের ছায়ায় রাখুন।
মহাকাশের কথা আমরা জানি না। মহাকাশ রহস্যময়। কাল্পনিক অর্থে বলছি। যদি পুড়ে যায়Ñমহান স্রষ্টাকেই ডাকব। সবাই প্রার্থনায় নামবে।
সচিবালয়। দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা-ভরসার কেন্দ্রস্থল। আমার ভাষায়Ñএই ক্ষতি দেশবাসীর বেদনা! করুণাময় আমাদের রক্ষা করুন। দয়া করুন। হেফাজতে রাখুন এবং হেদায়েত করুন। এ জাতির মঙ্গল করুন।
কাঁদো দেশবাসী কাঁদো
লেখক : ফরমার অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলাদেশ, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।