বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মো. জাভেদ নামের এক কয়েদির মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমানের আদালতে নিহতের খালাতো ভাই শিকদার লিটন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
শুনানি শেষে আদালত আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে জাভেদ মারা গেছেন কি না ও এ ঘটনায় ইতিপূর্বে কোনো মামলা দায়ের হয়েছে কি না তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কেরানীগঞ্জ মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহমুদুল আলম শাহীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
অপর আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, দিলীপ বড়ুয়া, মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল), নসরুল হামিদ বিপু, শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক, এনটিএমসির সাবেক ডিজি জিয়াউল আহসান, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ, বিপ্লব কুমার, জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ, ডেপুটি জেলার মোমিনুল ইসলাম, জেলার নাসির আহমেদ, ডেপুটি জেলার তানজিল হোসেন ও সৈয়দ হাসান আলী, প্রধান কারারক্ষী শামীম হোসেন, সহকারী কারারক্ষী হানিফ সিকদার, কারারক্ষী আবুল কালাম ও শের আলী কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, কৃষক লীগের সহসভাপতি আরিফুর রহমান দোলন, সাজ্জাদ হোসেন খান বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল প্রমুখ।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা কয়েদিরা আন্দোলন শুরু করে। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সারা দেশের মতো দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে কয়েদিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিবর্ষণে অনেক কয়েদি আহত এবং মো. জাভেদ নামে একজন কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মামলার বাদী শিকদার লিটনের পরিচয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি একজন সাংবাদিক। কৃষক লীগের সহসভাপতি সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে তিনি সংবাদ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় আরিফুর রহমান দোলন তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। ঘটনার দিন কারাগারে থাকা অবস্থায় সিকদার লিটন গুলিবিদ্ধ হন। আর তার খালাতো ভাই জাভেদ নিহত হন।
ঠিকানা/এএস