যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে উদযাপিত হয়েছে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট, বাংলাদেশ সোসাইটি এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসব অনুষ্ঠানে একাত্তরের বীর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন : যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্ক-এ মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয় গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার। এতে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। আলোচনা পর্ব শুরুর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গকারী বীর শহীদগণ এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদগণের স্মরণে একমিনিট নিরবতা পালন ও তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে প্রাপ্ত ‘গণমুক্তি অনিবার্য’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রবাসী বাংলাদেশীরা। তাঁরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একযোগে কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট অভ্যুথানের মাধ্যমে যে বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন তারা।
আগত অতিথিদের আলোচনা শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। তার বক্তব্যের শুরুতেই তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের সূর্যসন্তানগণ দেখেছিলেন, যে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁরা অমূল্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, তা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সামঞ্জস্য বর্ণনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য নির্মূলের মাধ্যমে যে বাংলাদেশ সৃষ্টির স্বপ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন সেই একই প্রেরণায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তিনি গণঅভ্যুথানের উত্তাল সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমর্থন এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা গণঅভ্যুত্থানকে বেগবান করতে তাঁদের অবদান স্বরণ করেন এবং তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও তিনি গণঅভ্যুথানের চেতনায় অদম্য বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সকল প্রবাসী বাংলাদেশীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। নানা ধরনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, অর্থনৈতিক যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা মোকাবেলায় ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাফল্য প্রদর্শন করেছে। এ বিষয়ে তিনি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। এই মুহুর্তে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবেলায় সকলের একতাবদ্ধ থাকার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট : যথাযথ মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট। এ উপলক্ষে গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ৭১-এর সকল শহীদ ও ২০২৪ জুলাই-আগস্টে সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং সকল বীরাঙ্গনা, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল স্তরের নেতা-কর্মীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি সকলকে মহান বিজয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
কনসাল জেনারেল বলেন, ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে। ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদ বিরোধী ও বৈষম্য বিরোধী গণঅভ্যুথান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং যারা এই অভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় নিউইয়র্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে তারা তাদের অনুভূতি গ্রহণ করেন এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যুক্তরাষ্ট্র কমান্ড কাউন্সিল মহান বিজয় দিবস উদযাপন করলো। ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত চৌধুরী এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তেলোয়াত, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে দোয়া, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিচালনা করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন কুইন্স ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ এটর্নি মঈন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন এডভোকেট মতিউর রহমান, নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক,আলহাজ এম উদ্দীন,মোল্লাহ এম জামান,আব্দুর রহমান,শামসুল হক ও গিয়াস মজুমদার।
আলোচনায় মঈন চৌধুরী বলেন, প্রবাসে সকলে দলমত নির্বিশেষে একসাথে কাজ করতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। এখানে মতভেদ নয়। আমরা বাংলাদেশকে ভালবাসি। দেশের জন্য কাজ করবো। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র হলে আমরা সবাই এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করবো। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। এখনও আছে। মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুঞ্জয়ী। তাদের জন্য দোয়া কামনা করছি।
শেকড়ের সন্ধানে : দেশের মাটিতে যখন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তখন প্রবাসী বাঙালি শিশুদের নিয়ে আয়োজন করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। নাটক, কবিতা ও গানের মধ্যদিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করলো হাজার হাজার মাইল দূরে থাকা মানুষগুলো।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে শেকড়ের সন্ধানে। ১৫ ডিসেম্বর রোববার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস-এর জুইশ সেন্টারে বিজয় দিবস উপলক্ষে এমন আয়োজন ছিল সংগঠনটির।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানে শুরু হয় স্মৃতিচারণ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। কবিতা, দেশাত্মবোধক গান, নাচসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করেন সবাই।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজনের শুরুতেই শিশুদের মাঝে রঙ-পেন্সিল ও আর্ট পেপার তুলে দেন আয়োজকরা। চার থেকে সাত বছরের শিশুদের দেয়া হয় জাতীয় পতাকা ও স্মৃতিসৌধ অঙ্কনের জন্য। আর আট থেকে এগারো বছরের শিক্ষার্থীদের রঙ-তুলিতে আঁকতে দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার প্রতিকৃতি। এছাড়া বারো থেকে আঠারো বছরের শিক্ষার্থীদের চিত্রাঙ্কনে দেয়া হয় রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরতে।
এদিকে ছড়া ও কবিতা প্রতিযোগিতায় চার থেকে আট বছরের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় বাংলা অথবা ইংরেজিতে ছড়া লিখতে। আর নয় থেকে ষোল বছরের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধের কবিতা লিখতে।
এরপর শিরীন বকুল এর পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের অনেকে অংশ নেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক প্রদর্শনীতে। প্রতিযোগিতা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণে যুক্ত হয় মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম ও অনুপ দাশ ড্যান্স একাডেমি।
শেকড়ের সন্ধানের এই আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল মুক্তধারা নিউইয়র্ক। মুক্তধারার সিইও বিশ্বজিৎ সাহা জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশকে যেন ভুলে না যায় সে লক্ষ্যেই এই আয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি : জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখা নিউইয়র্কে গত ১৫ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস্থ ঢাকা গার্ডেন রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি হাজী আবদুর রহমানের সভাপতিতে, সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী চান্দুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাপার উপদেষ্টা গিয়াস মজুমদার, উপদেষ্টা জসিম চৌধুরী, উপদেষ্টা মোঃ আলী, জাপার সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট হারিস উদ্দিন আহমেদ, সহ সভাপতি ডাঃ মোহাম্মদ সেলিম আহমেদ, সহ সভাপতি শফিউল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল করিম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জাকির, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা জেসমিন আকতার চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ জি,এম ইলিয়াস, প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহিদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভপতি মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন, যুব সম্পাদক আবদুল মোতালেব, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ মুসলিম।
সভার শুরুতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যারা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নিজের জীবন ত্যাগ করেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, তিপ্পান্ন বছরেও স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি। শোষণ, বঞ্চনা, দুর্নীতি ও দুঃ শাসন থেকে মুক্তি পায়নি, দেশের মানুষ, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি মেলেনি, মানুষ গত ১৭ বৎসর গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হয়নি, বেকারত্ব দুর করতে দেশের কোন উদ্যোগ নেই, এতেই প্রমান হয় দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে পারছে না। তাই আগামী প্রজন্ম যেনো স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ ভোগ করতে পারে সেজন্য সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যমত জরুরী। স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই, শুধু পদ্ধতিগত কারণেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হচ্ছে না। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে, নির্বাচনে শুধু মার্কা থাকবে কোন প্রার্থী থাকবে না। জাতীয় পার্টি কোন দিন স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে সর্ম্পক করবে না, বর্তমান সরকার দেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতার স্বাদ পৌঁছে দিবেন।
নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি : বিজয় দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে স্টেট বিএনপির উদ্যোগে ১৫ ডিসেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায়। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ফসল ঘরে উঠানোর মধ্য দিয়ে এবারের বিজয়কে পরিপূর্ণতা দিতে দলমত-নির্বিশেষে সকল প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার উদাত্ত আহ্বান জানান নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিঊল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদের সঞ্চালনায় র্যালিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার দাবি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্টেট বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জসিমউদ্দিন ভিপি, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি পরিষদের সভাপতি শাহাদাত হোসেন রাজু, বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক আনিসুর রহমান, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রইচ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, মোস্তাক আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, স্টেট বিএন পির নেতা আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর, আশরাফ হোসেন, দেওয়ান কাওসার, কাজী আসাদউল্লাহ, এম এ কাইয়ুম, জাহাঙ্গীর হোসেন।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন রহিমুল ইসলাম প্রিন্স, শহিদুল্লাহ রানা আলমগীর, মোকতাদীর হোসেন, ফারুক আহমেদ, সোয়েব আহমেদ, সাহিদা আক্তার অপু, মিনারা রহমান, হাফিজুর রহমান পিন্টু ও তারেক সাইফুল ইসলাম অপু প্রমুখ।
নিউজার্সি স্টেট (নর্থ) বিএনপি : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নিউজার্সি স্টেট (নর্থ) ইউএসএ’র উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৪ ডিসেম্বর প্যাটারসনের বেঙ্গল ইন্সুরেন্সের হল রুমে নিউজার্সি বিএনপির সভাপতি সৈয়দ জুবায়ের আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হোসেন পাঠান বাচ্চু। সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়াল শুভেচ্ছা জানান বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, রাশিয়া, ইউরোপের সাংগঠনিক সমন্নয়ক আনোয়ার হোসেন খোকন। দুই পর্বের সভায় প্রথম পর্বে ছিল নিউজার্সি বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা, এবিসি চ্যানেলের চেয়ারম্যান আলাউর খনকার ও নিউজার্সি বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, এবিসি টিভি চ্যানালের সিও মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ গমন উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা। দ্বিতীয় পর্বে ছিল মহান বিজয় দিবসের আলোচনা। শুরুতে কালামে পাক থেকে তিলাওত করেন নিউজার্সি বিএনপি সহ সভাপতি সৈয়দ খালিদ আলী। বক্তব্য রাখেন নিউজার্সি বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা আলাউর খন্দকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী নিপন, সহ-সভাপতি মোঃ খলিল, কামরান হাদি, সৈয়দ খালিদ আলী, এবাদ চৌধুরী, এনাম চৌধুরী, তারেক খান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন, যগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম, মাসুম চৌধুরী, জুয়েল আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নুল হক, প্রচার সম্পাদক রাহাদুল হাসান রুহেল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জাকিরুল চৌধুরী হিমেল, বিএনপি নেতা রেজোয়ান আহমেদ, হিরা মিয়া, রহমত হোসেন রকিব প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন : নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ৫৫তম বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর রোববার জ্যাকসস হাইটসের শেফ মহল পার্টি হলে এ বিজয় সমাবেশের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখা। এসময় প্রবাসে বসবাসরত অন্তত ৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে লাল-সবুজের উত্তরীয় পরিয়ে বিপুল করতালির মধ্যে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
বিজয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাদের মিয়া সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেও বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছেন বলেই আজকের বিজয় সমাবেশ সফল হলো।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রাশেদা হক কনিকা, জেনোসাইড একাত্তর ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ কর, ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. ফজলুল হক, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চৌধুরী লিটন, হাজী জাফরউল্লাহ, চট্টগ্রাম সমিতির সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আরিফ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা মতিউর রহমান, নিউজার্সি স্টেট আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক রহমান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুল ইসলাম কলিন্স, ম্যানহাটান আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবুল কাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল হক চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা তারিকুল ইসলাম মাসুম প্রমুখ।
সমাবেশে অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হাসান, মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, নাজমুল হক, গোলাম মোস্তফা খান মিরাজের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কাইয়্যুম।
ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিঠুর পরিচালনায় বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে ছিলেন লাবলু আনসার, আবুল বাশার চুন্নু, আব্দুর রহমান, গুলজার হোসেন, আশরাফুল হক চৌধুরী, আশরাফ আলী, এম এ হাসান, মোহাম্মদ আলী, নাসির উদ্দিন, ইমদাদুল হক, মোজাম্মেল হক, প্রাণ গোপাল কুন্ডু, হেলাল মজিদ, নূরল ইসলাম মিয়া, জাহিদ হোসেন, হাসান মাহমুদ, আবুল বাশার ভূইয়া, ড. প্রদীপ কর।
বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সবিতা দাস, ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক উইলি নন্দি এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাকিলা রুনার সম্মিলিত নেতৃত্বে বিজয়ের গান পরিবেশনের আগে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।