যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন কেমন হবে তা আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি এখন পর্যন্ত যাদেরকে বেছে নিয়েছেন, তার অনেককে নিয়েই আছে বিতর্ক। বলা হচ্ছে, অনেকে অতিমাত্রায় ইসরাইলপন্থি। এর মধ্যে এটর্নি জেনারেল হিসেবে তিনি বাছাই করেছেন ম্যাট গায়েটজকে। আগামী বছরের শুরুর দিকে তার এসব নিয়োগকে নিশ্চিত করার জন্য সিনেটরদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন সোমবার বলছে, তারা জানতে পেরেছে এটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে নেয়া ম্যাট গায়েটজ-এর বিষয়ে যৌনতার অভিযোগ আছে। কম বয়সী একজনের সঙ্গে এই সম্পর্কের অভিযোগ থাকলেও তা অস্বীকার করেছেন ম্যাট গায়েটজ। এ জন্য হাউস এথিকস কমিটির রিপোর্ট দেখতে চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীন দল রিপাবলিকান অনেক সিনেটর। তাদের মধ্যে এ বিষয়ে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফ্লোরিডার রিপাবলিকান ম্যাট গায়েটজ। কমিটির সামনে দু’জন নারীর একজন আইনজীবী যখন যৌনতার অভিযোগ নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তখন বিতর্ক ভিন্নখাতে মোড় নিয়েছে। হাউস এথিকস কমিটিতে ওই আইনজীবী উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ‘যৌন সুবিধার’ বিনিময়ে তাদেরকে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন ম্যাট গায়েটজ। ওই দুই নারীর আইনজীবী জোয়েল লিপার্ড। তিনি সিএনএনের সাংবাদিক আইরিন বার্নেটকে বলেছেন, ওই দুই নারীর একজন কমিটিকে বলেছেন- ২০১৭ সালে নিজের অপ্রাপ্ত বয়সী এক বান্ধবীর সঙ্গে ম্যাট গায়েটজ’কে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে দেখেছেন তিনি। এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ম্যাট গায়েটজ। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব তদন্তের পর কোনো অভিযোগ চাপায়নি।
এথিকস কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তা দ্রুততার সঙ্গেই নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন সরকারের জন্য প্রথম বড় রকম একটি সঙ্কট হিসেবে সামনে এসেছে। এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এই সিনেটে অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন রিপাবলিকানদের। তাদের মধ্য থেকে অল্প সংখ্যক সিনেটর যদি বেঁকে বসেন, তাহলে ম্যাট গায়েটজ-এর মনোনয়ন আটকে দেয়া যেতে পারে। এমন অবস্থায় বুধবার এথিকস কমিটির মিটিং হওয়ার শিডিউল আছে। তার আগে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, ম্যাট গায়েটজ যেহেতু গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন, ফলে তিনি এখন এর কংগ্রেসের সদস্য নন। এ জন্য এথিকস কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা উচিত হবে না। উত্তেজনা সৃষ্টিকারী এই নাটকীয়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। তা হলো- ম্যাট গায়েটজ-এর ক্যারেকটার এবং পদে তার যোগ্যতার বিষয়ে অনেকের মধ্যে গভীর রিজার্ভেশন আছে। তা সত্ত্বেও নিজের পছন্দকে সমর্থন করার জন্য রিপাবলিকান সিনেটরদের কতটা চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নর্থ ডাকোটার সিনেটর কেভিন ক্র্যামার চান যে, এথিকস কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হোক। তিনি ঠিক এ ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন সোমবার। একই সঙ্গে গায়েটজের মতো ব্যক্তিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিপুল রাজনৈতিক পুঁজি ব্যবহারের প্রজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারপরও যদি ট্রাম্প তার বাছাইয়ের পক্ষে অটল থাকেন তাহলে রিপাবলিকান সিনেটররা মনে করে ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ মুভমেন্টের চাপ কয়েক সপ্তা ধরে থাকবে। ম্যাট গায়েটজকে সমর্থন করার চাপ থাকবে। এতে তারা একটি কঠিন অবস্থায় পড়তে পারেন।
ঠিকানা/এসআর