ত্বকে তেলতেলেভাব কারও পছন্দ হয় না। আর যার তৈলাক্ত ত্বক সে বুঝে সমস্যা কতটা। ত্বকের প্রাকৃতিক এই অবস্থাতো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে কিছু নিয়ম মানলে অবস্থা উন্নত রাকা যায়।
পিএইচ ভারসাম্য করে এমন ক্লেঞ্জার ব্যবহার
যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা দিনের রাতে ছাড়াও নানান সময় মুখ ধোয়ার চেষ্টা করেন। তবে বেশি পরিষ্কার করাও ঠিক না, যদি না ঘাম হয়।
মার্কিন রূপসজ্জাকর ইয়ান মাইকেল ক্রাম এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে বলেন, “যদিও তৈলাক্ত ত্বক ধোয়া প্রয়োজনীয়। তবে অতিরিক্ত পরিষ্কার করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন বাড়ে। ফলে আরও তেলতেলে হয় ত্বক।”
এজন্য ঘাম আর মুখ ময়লা না হলে সকালে আর রাতেই মুখ পরিষ্কার করা ভালো। আর ব্যবহার করতে হবে ত্বকের ‘পিএইচ’ বা ক্ষারীয় অবস্থায় যাতে ভারসাম্য বজায় রাখে এমন ক্লেঞ্জার ব্যবহার করা। এগুলো ত্বক আর্দ্র রাখার পাশাপাশি তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
রেটিনল’কে স্বাগতম জানানো
ত্বকে বয়সের ছাপ কমাতে রেটিনয়েডস’য়ের কার্যকর। তবে তৈলাক্ত ও ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্যেও এটা উপকারী।
এই বিষয়ে বস্টন ভিত্তিক ত্বক-বিশেষজ্ঞ ক্যাথরিন ডিজর্জো একই প্রতিবেদনে বলেন, “ট্রিটিনোইন বা রেটিনল ত্বকের কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, লোমকূপ আবদ্ধ হওয়া ঠেকায় ফলে ব্রণের সমস্যা সমাধান হয়।”
আর ব্রণ প্রতিরোধ এবং লোমকূপ আবদ্ধ হওয়া রোধ করা হল, ত্বক তৈলাক্ত না হওয়ার প্রাথমিক প্রথম পদক্ষেপ।
ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে রেটিনল ব্যবহার করতে হবে।
দৈনিক জেলধর্মী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা
মনে হতে পারে ত্বকে এত তেল থাকতে আবার ময়েশ্চারাইজার মাখার কী দরকার। তবে ধারণাটা ভুল।
ক্রাম বলেন, “তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা মনে করেন ময়েশ্চারাইজার আরও আঠালো করে দিতে পারে ত্বক। তবে মনে রাখতে হবে আর্দ্রতা ধরে রাখার ব্যবস্থা না করলে ত্বক আরও বেশি তেল নিঃসরণ করে।”
তাই হায়ালুরনিসক অ্যাসিড বা গ্লিসারিন সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উপকারী।
চার্কল বা ক্লে মাস্ক ব্যবহার
যখন বেশি তৈলাক্ত হওয়া শুরু করে ত্বক তখন কয়লা বা কাদা দিয়ে তৈরি মাস্ক হতে পারে সমাধান। বাজারে এই ধরনের মাস্ক কিনতে পাওয়া যায়। শুধু বেশি ব্যবহার করা যাবে না- এই কথাটা মাথায় রাখতে হবে।
রূপচর্চায় নিয়াসিনামাইড
ভিটামিন বি-থ্রি হিসেবে পরিচিত। এটা শক্তিশালী তবে কোমল একটি উপাদান।
ক্রাম বলেন, “নিয়াসিনামাইড তেল নিঃসরণ কমায়। পাশাপাশি আবরণ তৈরি করে প্রদাহ দূর করে। পাশাপাশি লোমকূপের আকার কমাতেও সাহায্য করে।”
পাঁচ শতাংশ নিয়াসিনামাইড যুক্ত সেরাম ব্যবহার করতে হবে সকালে এবং সন্ধ্যায়।
এঞ্জাইম দিয়ে সপ্তাহে একবার এক্সফলিয়েট
ডিজর্জিও বলেন, “সপ্তাহে দুয়েকবার এক্সফলিয়েট করলে মৃত কোষ দূর হয় আর ‘ব্রেকআউট’য়ের সমস্যা কমে। বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটা উপকারী।”
প্রাকৃতিক রাসায়নিক নির্ভর এই ধরনের ক্লেঞ্জার, মাস্ক বা টোনার পাওয়া যায়। যা রূপচর্চার সাপ্তাহিক রুটিনে যোগ করা উপকারী।
তেলও ব্যবহার করতে হবে
তৈলাক্ত ত্বকে তেল ব্যবহার করাটা পাগলামি মনে হতে পারে, তবে এটা কার্যকর পদ্ধতি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়ো ভিত্তিক ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. হেলেন এম. টরোক এই বিষয়ে বলেন, “ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে, যেমন- জোজোবা বা হেম্প বীজের তেল, ত্বকের তেল নিঃসরণ ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া ব্রণ কমাতেও প্রভাব রাখে।”
হালকা সানস্ক্রিন ব্যবহার
ভারি সানস্ক্রিন ব্যবহারে আঠালোভাব তৈরি হয়। তাই হালকা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
পানি বা জেল ভিত্তিক সানস্ক্রিন ত্বকে ভারী হয়ে বসে থাকে না। ‘নন-কমেডোজেনিক’ লেখা সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে। এগুলো লোমকূপ আবদ্ধ করে না। কিন্তু সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুণি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারে।
ঠিকানা/এসআর