দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা চর্চার প্রশ্নে সরাসরি ‘না’ বললেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মামুনুল হক। তার ভাষ্যমতে, ‘আমি কোনোভাবেই একটি মুসলিম প্রভাবিত দেশে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা মানতে রাজি নই।’
‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ টকশোতে অতিথি ছিলেন তিনি। যেখানে আরো ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব। ১২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ ইউটিউব চ্যানেলে। যা একই সময়ে দেখে গেছে বাংলাদেশের প্রথম সারির খবর-ভিত্তিক বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরেও। বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, ধর্মচর্চার পরিবেশ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা- এমন নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় অনুষ্ঠানে।
রাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল করার দাবিতে সম্প্রতি একটি আলোচনসভায় জোরালো বক্তব্য দেন তাসনীম সিরাজ মাহবুব। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যায়। এ প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসেন টকশোর সঞ্চালক ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন। এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, ‘কোরান ও নবীর সুন্নাহর আলোকে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার একমাত্র মডেল খেলাফত। মুসলিম হিসেবে অন্য কোনো ব্যবস্থা সমর্থন করার সুযোগ নেই।’
বর্তমানে কোন দেশে খেলাফত চর্চা রয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এই মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, এখন বিচ্ছিন্নভাবে খেলাফত কায়েমের চেষ্টা আছে। কিন্তু সবশেষ পূর্ণাঙ্গ খেলাফত ছিল উসমানীয় খেলাফত। ১৯২৪ সালে যার অবসান হয়। ফলে পৃথিবী ১০০ বছর ধরে খেলাফত থেকে বঞ্চিত, এমন মন্তব্য করেন মামুনুল হক।
তবে ধর্মনিরপেক্ষতা না থাকলে সমাজের সব ধর্মের মানুষ, সব মতের মানুষ নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারেন না, বলছেন তাসনীম সিরাজ মাহবুব। “ছোটবেলায় হিন্দুদের সঙ্গে মিশেছি। কোনোদিন কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা হয়নি। যখন স্কুলে পড়ি, তখনও এটা কোনো ইস্যু ছিল না। যখন সংবিধানে বিসমিল্লাহ যোগ করা হয়েছে, তখন কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকালেও তখনো কোনো সমস্যা হয়নি। যখন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম যুক্ত করা হয়েছে, তখন থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় কাজ করতে শুরু করে।” বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষক। তবে তার কাছে আশার বিষয় হচ্ছে, এদেশের বেশিরভাগ মুসলমানই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে।
অন্যদিকে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আমরাও শান্তিপূর্ণভাবেই খেলাফত প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাই। মানুষ যদি চায়, তবে আমাদের সেই সুযোগ দিতে হবে।’