জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘যখন আমরা একটু শান্ত হয়ে যাই, তখন পতিত স্বৈরাচার বিভিন্নভাবে ফিরে আসার চেষ্টা করে। আমরা সে চক্রান্তের গন্ধ পেয়ে যাই। পতিত ফ্যাসিবাদীদের এটা বোঝানোর জন্য হলেও মাঝেমাঝে হুঙ্কার দিতে হয়।’
ক্ষমতার বড় অংশীজন হিসেবে এখন কী ছাত্রলীগের মতোই শোডাউন ও শক্তি দেখাতে চাইছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন? ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ লাইভ টকশোতে এই প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম উপরোক্ত কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন জি-নাইনের সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ।
২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) সরাসরি সম্প্রচারিত এই টশোতে জি-নাইনের সাধারণ সম্পাদক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ বলেন, আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর দল দুটির শীর্ষ পর্যায়ে মাঝেমাঝেই অনৈক্য দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়টি কাঙ্খিত নয়।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী হয়েও যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে কাজ করেছে, তাদের বিষয়ে সদ্যই সহানুভূতিশীল বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির মুখ সারজিস আলম। এর সমালোচনা করে অনেকেই বলছেন, তিনি একসময় ছাত্রলীগ করতেন, তাই ছাত্রলীগের প্রতি অনুকম্পা দেখাচ্ছেন। - এ বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার জন্য প্রথম দুই বছর বাধ্যতামূলকভাবে ছাত্রলীগ করতে হয়েছে। এরপর তিনি আর ছাত্রলীগ করেননি। উল্টো সরকারের সমালোচনা করেছেন সবসময়ই। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ আবার ফিরবে কি না, তা মাঠছাড়া হওয়া এ দলটির ওপর নির্ভর করে না বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফেরা না ফেরা নির্ভর করে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সব শক্তির ঐক্য-অনৈক্য কিংবা সফলতা-ব্যর্থতার ওপর। ছাত্র-জনতার আকাঙ্খার যে বাংলাদেশ, সবাই যদি সে পথে চলতে পারে, তবে আওয়ামী লীগের ফেরার কোনো সুযোগ নেই। তারা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে, অপ্রাসঙ্গিক হয়েই থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকার কত দিন রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকবে, তা এখনো ঘোষিত হয়নি। এক্ষেত্রে সংস্কার শেষে কবে নাগাদ নির্বাচন হওয়া উচিৎ- জানতে চাওয়া হলে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডা. সায়ন্থ বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব। তবে দ্রব্যমূল্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্বস্তি না পেলে জনগণ এই সরকারকে দেড় বছর সময় নাও দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দিন’ টকশোটি চ্যানেল টোয়িন্টিফোর টিভিতেও সরাসরি সম্প্রচার হয়।