ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে আসছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এর আগে শেখ হাসিনা একটানা ১৭ বার জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সরকার প্রধান হিসাবে ভাষণ দেবেন নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। আর এ কারণে সারা বিশ্বের প্রবাসী বাংলাদেশিদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি।
গত ১৬ বছর একটানা ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। প্রতিবার তাকে নিউইয়র্কে লাখ লাখ ডলার ব্যয় করে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশিদের কোনো দাবি-দাওয়া পূরণ করেননি তিনি। বরং নিউইয়র্কে এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী দিয়ে আবৃত্ত থাকতেন তিনি। নিউইয়র্ক-ঢাকা রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালুসহ প্রবাসীদের কোনো দাবিই পূরণ হয়নি। প্রবাসীরা তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মনের কথাগুলো কখনো বলতে পারেননি। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের শত আকুতি। এজন্য নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টাকে সার্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমব্রেলা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি। একইভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক সমাজ। কিন্তু শেষমেষ জানা গেল- নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনা হচ্ছে না। সফরসূচি সংক্ষিপ্ত করায় সংবর্ধনার ব্যাপারে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু তারপরও প্রবাসীদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারটি দৃষ্টিগোচর হবে তার। ইতিমধ্যে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানির বদলে বিশেষ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই খবরে প্রবাসীরা দারুণ খুশী।
এদিকে, বাংলাদেশ সোসাইটি এবং প্রবাসী নাগরিক সমাজের উদ্যোগে সাড়া না পাওয়া এবং শেষ পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে সংবর্ধনা বাতিল হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা হতাশ হলেও সাধারণ প্রবাসীদের আস্থায় রয়েছেন ড. ইউনূস। তারা বলছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে প্রবাসীরাও সুযোগ দিতে চান নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে। তিনি সংক্ষিপ্ত সফরে নিউইয়র্কে আসছেন। প্রবাসীদের দাবিগুলো সম্পর্কে তিনি অবগত। তারপরও প্রবাসীদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো স্থায়ী মিশন বা কনস্যুলেটের মাধ্যমে তুলে ধরা যেতে পারে। বিমানবন্দরে যেহেতু পরিবর্তন এসেছে, নিশ্চয় একে একে অন্যান্য পরিবতনও আসবে।
এদিকে সংবর্ধনা দিতে একাধিক সংগঠনের দৌড়ঝাঁপকে ভালোভাবে নেননি সাধারণ প্রবাসীরা। অনেকের মতে, এই টানাহেঁচড়ার কারণে হয়তো প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা বাতিল হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রবাসী বলেছেন, আমরা বিভক্ত জাতি। অতএব, কমিউনিটিও বিভক্ত। তাই একজন নোবেল জয়ী সরকার প্রধানকে আমরা সংবর্ধনা দিতে গিয়েও বিভক্ত হয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সংবর্ধনার আয়োজন এবং দৌড়ঝাঁপ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন- ‘হায়! এখন উহাদের কি হইবে ??! অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিউইয়র্কের নাগরিক সংবর্ধনা বতিল করা হয়েছে। এই নাগরিক সংবর্ধনা নিয়ে কিছু মানুষ বেশ আন্তরিক ছিলেন, তবে তাদের ছাপিয়ে কিছু সুবিধাভোগী ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন! কেউ কেউ নতুন স্যুট বানিয়েছেন- কিন্তু ডেলিভারি পাওয়ার আগেই ঠাডা পড়ল! এক পণ্ডিত তো বাংলাদেশ থেকে ড. ইউনুসের মতো পাঞ্জাবি-কোটি অর্ডার করেছেন কয়েক সেট-যা হয়তো ডিএইচএল-এর ডেলিভারির অপেক্ষায়। একজন ড. ইউনুসের সঙ্গে ঝকঝকে হাসি দিয়ে ছবি তুলতে পাঁচশ ডলার খরচ করে দাঁত হোয়াইটেনিং করেছিলেন!
এসব ক্ষেত্র ‘ননকমিশন্ড’ এক কথিত সাংবাদিক এক টেলিভিশন মালিক ছিলেন একধাপ এগিয়ে। প্রচার করে বেড়াচ্ছেন ড. ইউনুস নাকি দোস্তের মতো ঘনিষ্ঠ! সম্বর্ধনায় এবং প্রেস কনফারেন্স এ তার ক্যামেরা ছাড়া অন্য কোন ক্যামেরা রেকর্ড করতে পারবেনা।তিনিই সব!
আবার বাণিজ্য ও শুরু হয়েছিল- পাশে বসলে দশ হাজার, দাঁড়িয়ে ছবি তুললে পাঁচ হাজার, ড. ইউনুস হাত মিলালে পনের হাজার, আর কান্ধে হাত রাখলে বিশ হাজার ডলার!! হা হা হা
এখন এইসব কালিয়ার কি হবে? টাকা কি ফেরত দিবে?
খুব সূক্ষ্ন ভাবে সবকিছু নজরে রাখা হচ্ছে .. সময়মতো নাম পরিচয় সহ বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।