Thikana News
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর

বাংলাদেশ সোসাইটি সংবর্ধনা দিতে চায় * প্রস্তুতি নিচ্ছে নাগরিক সমাজ * বিক্ষোভ করবে আওয়ামী লীগ
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর


নিউইয়র্ক-ঢাকা রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট  চালুসহ প্রবাসীদের কোনো দাবিই পূরণ করেনি রাজনৈতিক সরকারগুলো। তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মনের কথাগুলো সহজে বলতে চান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। এজন্য চলতি মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে তাকে সার্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনা দিতে চায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমব্রেলা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি। ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের এলমহার্স্টে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রব মিয়া এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকার প্রধান যোগ দেন। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ননে ব্যস্ত থাকায় প্রবাসীরা তাদের দাবি দাওয়া কখনোই সরকার প্রধানের সামনে তুলে ধরতে পারেননি। ফলে সেগুলোর সমাধানও বছরের পর বছর হয়নি। তিনি বলেন, অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২২ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। তাঁর এই সফর অন্যান্য সরকার প্রধানের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। নির্দলীয় এই সরকারের প্রধানের কাছে সকল প্রবাসী তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মনের কথাগুলো সহজে বলার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ সোসাইটিও সকল প্রবাসীর পক্ষ থেকে সেই সুযোগটি গ্রহণ করতে চায়। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, এবার নিউইয়র্কে সরকার প্রধানের জন্য সার্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করতে আগ্রহী বাংলাদেশ সোসাইটি। এর মাধ্যমে প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া এবং রাষ্ট্র সংস্কারে বিভিন্ন বিষয় সরাসরি সরকার প্রধানের সামনে তুলে ধরতে চায় সংগঠনটি। রাষ্ট্র সংস্কারের যে উদ্যোগ অন্তবর্তী সরকার নিয়েছে তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কিছু প্রস্তাবনাসহ একটি স্মারকলিপিও প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করতে চান প্রবাসীরা। 

নিউ ইয়র্ক : প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে আগ্রহী বাংলাদেশ সোসাইটি। এ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখছেন সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া। পাশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার এবং প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ। আরো উপস্থিত ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন। 

প্রস্তুতি নিচ্ছে নাগরিক সমাজ 
প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক সমাজের ব্যানারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কুইন্সের অভিজাত এস্টোরিয়া ম্যানর-এ হলরুম বুক দেওয়া হয়েছে। আয়োজকরা এ লক্ষ্যে ঢাকায়, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেটে আলোচনা করছেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 
বৈষম্যবিরোধী প্রবাসী সচেতন নাগরিক সমাজ ও প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক সমাজের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টাকে সংবর্ধনা, তাকে বিমানবন্দর ও জাতিসংঘে ভাষণদানকালে স্বাগত জানানোর বিষয়াদি স্থান পায়। 

নিউ ইয়র্ক : প্রবাসী নাগরিক সমাজের মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ।

সভায় আলোচনা হয়, সরকার প্রধান ড. ইউনূস ৫ দিনের সফরে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রোববার নিউইয়র্কে আসছেন। তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দেবেন। সাবেক সরকারের সমর্থকেরা যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার ওপর গুরুত্ব দেন আলোচকরা। 
সবংর্ধনা অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা প্রফেসর ড. শওকত আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি, সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ তারেক ও টাইম টিভির আবু সিইও আবু তাহের প্রাথমিকভাবে আলোচনা করে সংবর্ধনার চিন্তা করেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বড় পরিসরে আলোচনার তাগিদ থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহায়ক শক্তিগুলোর সাথে বসা হচ্ছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট থেকে কোন সবুজ সংকেত পাননি উদ্যোক্তারা।
সভায় বক্তারা বলেন, দূতাবাস, মিশন ও কনস্যুলেটে স্বৈরাচারি হাসিনা সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট অফিসাররা এখনও অবস্থান করছে। তারা সংবর্ধনার আয়োজন করলে আমরা সেখানে যেতে পারি না। তারা পুরো অনুষ্ঠানকে স্যাবোটাজ করতে পারে। এ সময় শওকত আলী বলেন, সরকার যদি তাদের ওপর আস্থা রেখে অনুষ্ঠান করতে চায় সেক্ষেত্রে আমাদের কি করার আছে? তবে আমরা উদ্বেগের কথা যথাযথ জায়গায় জানাতে পারি। কোনভাবেই যেন ড. ইউনূসের সন্মান হানি না হয় সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখতে হবে। 
অনুষ্ঠানে ৫০ জন প্রবাসী তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। তাদের অধিকাংশই প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক সমাজের ব্যানারে সবংর্ধনা আয়োজনের পক্ষে কথা বলেন। এ জন্য একটি সমন্বয়ক কমিটি গঠনেরও দাবি জানান। সমাপনী বক্তব্যে ড. শওকত আলী বলেন, আমি, আবু তাহের ও সাইয়িদ তারেক বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু এখনই চূড়ান্ত ঘোষণার পরিস্থিতি তৈরি হয় নি। আমরা যোগাযোগ রাখছি। নজর রাখছি। কোনভাবেই ড. ইউনূসকে অসন্মান করা যাবে না। মিশন ও কনস্যুলেটও আমাদের কংক্রিট কিছু বলে নি। তাই আজ কোন কমিটি নয়। আরও দু একদিন যাক। সবকিছু দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজনে আমরা আবার বসবো। 
মতবিনিময় সভা সঞ্চালক ছিলেন আহমেদ সোহেল। আলোচনায় অংশ নেন রীতা রহমান, সাঈদ তারেক, মোশাররফ হোসেন সবুজ, আব্দুস সবুর, অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন জনি, পারভেজ সাজ্জাদ, রাসিক মালিক, মোম্মদ সেলিম, কামরুল হাসান, শাহ আলম, মির্জা আলী আজম, এম রহমান মাসুম, মাজহারুল ইসলাম মিরন,মোহাম্মদ জসিম, মোহাম্মদ মজুমদার, গিয়াস উদ্দীন, ড. শফি চৌধুরী, ইমরান রন শাহ, মোহাম্মদ রানা, শামসুল ইসলাম মজনু, হানিফ চৌধুরী, আমলাক হোসেন ফয়সল, ডা. মোহাম্মদ কাশেম, মোহাম্মদ আলী, হেলাল উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ এ কাশেম, বদিউল আলম, আশরাফ হোসেন, ফেরদৌস আলম, ডা. আতাউল হক ওসমানী, কাজী জহিরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।

বিক্ষোভ করবে আওয়ামী লীগ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মষ ইউনূসের নিউইয়র্ক সফরের সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। 
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রচার সম্পাদক আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে দেশবিরোধী চক্র জোরপূর্বক জনগণের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করে অসাংবিধানিকভাবে অনির্বাচিত অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশগ্রহণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- প্রধান উপদেষ্টার আগমনের দিন ২২ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ৮টা থেকে জেএফকে বিমানন্দরের টার্মিনাল-৪ এর সামনে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার অথবা ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বেলা ১১টায় সাধারণ পরিষদে ভাষণের সময় সংবর্ধনার জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ। 
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সকল সংগঠনকে এসব কর্মসূচিতে নিজ নিজ ব্যানারসহ অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

কমেন্ট বক্স