জানি গ্রামের পথ ধরে অনেক দূর হাঁটতে হবে,
অপরাহ্ণ হয়ে গিয়েছে, যদিও গন্তব্য অনেক দূর!
তবু আমাকে বসতে দাও এই বটের ছায়ায়,
আরও খুশি হতাম যদি ডেফল গাছের খোঁজ পেতাম।
তরুর ছায়াহ্ন নিয়ে আমগাছ তো আছে,
আছে কাঁঠাল, বাতাবি লেবু ইত্যাদি ইত্যাদি।
হ্যাঁ আছে বটে তবু কেন তেঁতুল, তালগাছ,
নিমগাছের মতো গাছগুলো খুঁজতে যাই?
কারণ, ক্রমাগত ওইসব উদ্ভিদ দুর্লভ হয়ে পড়ছে।
মানুষ এখন হাঁটে না এ কথা ঠিক নয়,
শহরবাসী হাঁটে না বলেই হাঁটতে হয়
ডায়াবেটিসের কারণে পা দুটোকে সচল রাখতে।
গ্রামবাসীকেও হাট থেকে বাড়ি ফিরতে
ধানের আইল ধরে মাইলের পর মাইল হাঁটতে দেখেছি,
আজকাল তেমন একটা চোখে পড়ে না,
দেখি না আগের মতো হালচাষের জন্য আলাদা গরু,
বাড়ির আঙিনায় নাড়ার স্তূপ,
পৌষের শীত নিবারণে নাড়ার আগুন;
এবং ভস্মীভূত ছাইয়ের গন্ধযুক্ত ধোঁয়া
পড়ন্ত বিকেলের বাতাসে চড়ে
গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার ধূসরিত দৃশ্য।
ডিজিটাল সভ্যতায় মেনে নিলাম প্রযুক্তির সুবিধাগুলো
কিন্তু তাই বলে বটগাছ, ডেফল, তেঁতুল, নিমগাছের মতো
বনেদি বনৌষধের গাছগুলো কী অপরাধ করেছে?
যার ফলে বনের পাখিরা নিরাশ্রয় হয়ে যাবে,
সেই সাথে আমরাও মৌসুমি ফলের প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যের উপকারিতা হারাব।
প্রপিতামহের অনিবার্য মৃত্যুর সাথে কি
তাদের পরম যত্নের শিরীষ গাছটিও
মাটির বন্ধন থেকে চিরতরে উপড়ে ফেলব?
প্রতিবেশীকে নিয়ে পরিবেশ যদি তা-ই হয়
তবে সংক্রমণকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে বাধা নেই,
এমনকি তাকে গ্রহণ না করলেও
সে জীবন হরণে কারো পিছু ছাড়বে না!