বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গতকাল ১২ আগস্ট (সোমবার) দুপুরে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এ সংবাদ প্রচারের পরেই শিল্পকলা একাডেমির সামনে এক সমাবেশ করেন বিক্ষুব্ধ থিয়েটার কর্মীরা। লাকির বিরুদ্ধে ওঠা সব রকম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম আর দলীয় লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ তদন্ত করে তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন থিয়েটার কর্মীরা।
সমাবেশে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটার কর্মীগণ’–এর পক্ষ থেকে বিবৃতি পাঠ করেন প্রাচ্যনাটের সাহানা সুমি। এতে সাতটি দাবি তোলা হয়েছে। দাবিগুলো হলো -
১. লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ওঠা সব দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম আর দলীয় লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ তদন্ত করে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. শিল্পকলা একাডেমির অন্য যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম আর দলীয় লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ রয়েছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. লিয়াকত আলি লাকীকে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
৪. গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও পথনাটক পরিষদকে মৌলিক রূপান্তরের পথে যেতে হবে। সব লোভ, ক্ষমতা আর স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থিয়েটারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
৫. গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বদলাতে হবে। যেন তা স্বৈরাচারীর বশংবদ হয়ে না পড়ে, সে জন্য গঠনতন্ত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।
৬. জুলাই হত্যাকাণ্ডে আদেশ দেওয়া, নিপীড়নে অংশ নেওয়া, হত্যায় সমর্থন তৈরির পিআর করা মানুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যারা কেবল সমর্থন দিয়েছেন হত্যাকাণ্ডকে, তাদের যে যে মাধ্যমে সমর্থন দিয়েছেন, সেই মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
৭. ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সুসম্পর্কের ভিত্তিতে লেজুড়বৃত্তি নয়, সর্বজনের সর্বপ্রাণের শিল্পচর্চার দিকে যেতে হবে।
এ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাকার বকুল, তাড়ুয়া, কাজি রোকসানা রুমা, বটতলা, কাজি তৌফিকুল ইসলাম ইমন, প্রাচ্যনাট। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ আলী হায়দার।
সমাবেশ শেষে আন্দোলনে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে বিপ্লবকে ধরে রাখার জন্য থিয়েটারে সংস্কারের প্রত্যয় ব্যক্ত করে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাবেশটি শেষ হয়।
ঠিকানা/এএস