Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪
আইআরএস’র আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন

অবশ্যই রেসপন্স করতে হবে

অবশ্যই রেসপন্স করতে হবে
বিভিন্ন কারণে একজন করদাতার আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হতে পারে। যেসব করদাতার আইডেন্টিটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আইআরএস চিঠি পাঠায়, তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব আইডেন্টিটি ভেরিফাই করতে হবে। কেউ যদি নির্ধারিত সময়ে চিঠির উত্তর না দেন, তাহলে জটিলতায় পড়তে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট করদাতা আইডেন্টিটি ভেরিফাই করবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত তার ট্যাক্স ফাইল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে না। তার যদি কোনো রিফান্ড পাওয়ার কথা থাকে, সেটিও পাবেন না। ফলে করদাতাদের কেউ যদি আরআরএস থেকে তার পরিচয় শনাক্তকরণ ও নিশ্চিতকরণের জন্য কোনো চিঠি পেয়ে থাকেন, তাহলে জবাব দিতে হবে। কেউ চাইলে পরিচয় যাচাই নিজে নিজেও করতে পারেন আর নিজে নিজে না পারলে সিপিএ কিংবা এনরোল এজেন্টকে দিয়েও করাতে পারেন। এসব কথা বলছিলেন সিপিএ জাকির চৌধুরী।
তিনি বলেন, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের চিঠি মনে হয় বেশি পাচ্ছেন করদাতারা। আমার কাছেও এসেছেন কয়েকজন। তারা চিঠি পাচ্ছেন, তার পরিচয় নিশ্চিত করার বিষয়ে। আইআরএস যখন কোনো ট্যাক্স ফাইল রিসিভ করে, কোনো ফাইলের বিষয়ে সন্দিহান হলে আইডেন্টিটি ভেরিফাই করার জন্য চিঠি পাঠায়। বিভিন্ন কারণে এর প্রয়োজন হতে পারে। দেখা যায়, কেউ আগে ম্যারিড ফাইলিং জয়েন্টলি করতেন। পরে দেখা গেল, এ বছর তিনি ম্যারিড ফাইলিং সেপারেটলি করছেন অথবা হেড অব হাউসহোল্ড হিসেবে ফাইল করছেন। অর্থাৎ অনেকের ফাইলিং স্ট্যাটাস চেঞ্জ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সত্যি সত্যি ওই ব্যক্তি ফাইল করছেন কি না এবং তার স্ট্যাটাস ঠিক আছে কি না, তা যাচাই করে আইআরএস। যারা ডিভোর্স হয়ে যান অথবা যার স্পাউস মারা যান অথবা যারা আলাদা থাকতে শুরু করেন, তাদের ক্ষেত্রে ফাইল স্ট্যাটাস পরিবর্তন হতে পারে। এমন হলে আইআরএস চিঠি দিতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে ফাইলিং স্ট্যাটাস পরিবর্তন হতে পারে। স্ট্যাটাস পরিবর্তন হলে এবং সন্দেহজনক কিছু মনে হলে আইআরএস আইডেন্টিটি ভেরিভিকেশন নোটিশ পাঠাতে পারে।
সিপিএ জাকির চৌধুরী আরও বলেন, কারও ইনকাম যদি আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিবর্তন হয়, তাহলেও আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন আসতে পারে। যেমন কোনো ব্যক্তি আগে আয় করতেন এক লাখ ডলার, এ বছর তার ইনকাম ১০-৩০ হাজার কিংবা একটু বেশি হলে তার ইনকাম পরিবর্তন হয়েছে বলে গণ্য হবে। আবার যারা কলেজ পাস করে নতুন চাকরিকে ঢুকেছে, তাদের ইনকাম পরিবর্তন হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা অনেক বছর ধরেই ফাইল করে আসছেন, তাদের আয় অনেক কমে যাওয়া কিংবা অনেক বেড়ে যাওয়ার ব্যবধান হলেও আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন লাগতে পারে। কারণ আইআরএস দেখতে চায়, যিনি ট্যাক্স ফাইল জমা দিয়েছেন, তিনি নিজে কি সত্যি সত্যি তার ফাইলটি করছেন নাকি অন্য কেউ তার আইডেন্টিটি চুরি করে ট্যাক্স ফাইল করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণেই আইআরএসের কাছে কোনো ফাইলের ব্যাপারে তথ্য চুরি হয়েছে এমন মনে হলেও আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন চাইতে পারে।
সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, যদি কেউ এ ধরনের চিঠি পান, তাহলে বিভিন্নভাবে তা ভেরিফাই করতে পারেন। প্রথমত, তিনি তার আইডি পাঠাতে পারেন এবং যেসব তথ্য চাইবে সেগুলো দিয়ে নথিপত্র দিতে পারেন। ফোন করেও তা করতে পারেন। ফোন করলে তারা নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, সোশ্যাল নম্বন, কে ফাইল জমা দিয়েছেন, কোথা থেকে দিয়েছেন, রিফান্ড করার জন্য কোন ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেছেন- এসব বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করবে। সব যদি মিলে যায়, তাহলে আইআরএস নিশ্চিত হবে যে ওই ব্যক্তিই করদাতা এবং তিনিই ফাইল করেছেন। ফোন করলে সব তথ্য যাতে সঠিকভাবে দিতে পারেন, এ জন্য ট্যাক্স ফাইলের যাবতীয় তথ্য নিয়ে বসতে পারেন, যাতে কোনো তথ্য ভুল না হয়। আইডেন্টিটি ভেরিফাই করার পর তারা ট্যাক্স ফাইল প্রসেস করা শুরু করবে। কেউ যদি রিফান্ড পান, তাহলে সেই রিফান্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে। যদিও একটু সময় লাগে। যে চিঠি পাবেন, ওই চিঠিতে ফ্যাক্স নম্বর দেওয়া থাকলে ফ্যাক্স করেও নথিপত্র পাঠাতে পারেন। যদি কেউ মেইল করতে চান, সেটাও করা সম্ভব। কারও যদি আইআরএসের সঙ্গে অনলাইনে অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে সেই অ্যাকাউন্টে লগইন করেও আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন করা সম্ভব। এর কোনোটি যদি কেউ করতে না পারেন, তাহলে এ ধরনের চিঠি পাওয়ার পর তারা তার সিপিএ অথবা আইআরএসের এনরোল এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আইআরএসের চিঠি পেলে সেটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং সেখানে কী কী তথ্য ও নথিপত্র চেয়েছে, তা দেখে সেভাবেই তথ্য দিতে হবে ও নথিপত্র পাঠাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোথাও প্রতারিত হতে পারেন এমন আশঙ্কা থাকলে কিংবা তথ্য চুরি হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলে সেখানে ট্যাক্স ফাইল করাতে যাবেন না। কারণ এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে। এসব তথ্য চুরি হলে সেটা খুব ভয়ানক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় অনেক তথ্য বিভিন্ন অফিস থেকে প্রকাশ হতে পারে। পাশাপাশি মৌসুমি কিছু প্রিপেয়ারার আছেন, তাদের কাছেও ফাইল করা ঠিক হবে না। ট্যাক্স ফাইল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার একটি নির্দিষ্ট অফিস রয়েছে, সারা বছর অফিস খোলা থাকে এবং বিশ^স্ত, আপনার তথ্য নিরাপদ থাকবে, সেখান থেকে অভিজ্ঞজনের মাধ্যমে ফাইল করবেন। অনেক সময় দেখা যায়, একটি অফিস থেকে কোনো স্টাফ চলে গেলে তারা ক্লায়েন্টের নাম, ফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে যায়। তিনি নতুন ট্যাক্স ফাইল করার অফিস করে তাদেরকে ফোন করেন। এটা কিন্তু ওই স্টাফ করতে পারবেন না। তার পরও কেউ কেউ করেন। এটা বেআইনি। কারণ একজনের অফিস থেকে চাকরি করে চলে যাওয়ার পর ওই অফিসের কোনো ক্লায়েন্টকে তিনি ফোন করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, অনেক ট্যাক্স প্রিপেয়ারার আছেন, তারা ফাইলকারীর রিফান্ড পাওয়ার জন্য তাদের নিজেদের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেন। সেই ব্যাংক হিসাবে তারা রিফান্ড নেন। এরপর তাদের অফিস কেটে রেখে বাকি অর্থ ফাইলকারীকে দেয়। এটা একদমই ঠিক নয়। যার ফাইল তার ব্যাংক হিসাব নম্বর দিতে হবে।
সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, কেউ বাসা বদল করেন কিংবা স্টেট চেঞ্জ করেন, তখন তিনি আর এই স্টেটে না আসার কারণে তার ট্যাক্স রিফান্ড নিতে ওই প্রিপায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। ফলে অনেকেই রিফান্ডও পান না। অসাধু ট্যাক্স প্রিপেয়ারারের কারণেও অনেক সময় ট্যাক্স ফাইলকারী সমস্যায় পড়তে পারেন। কোনো কারণে কারও যদি ট্যাক্স ফাইল করতে গিয়ে বা অন্য সময়ে আইডেন্টিটির তথ্য চুরি হয় বা তার তথ্য চুরি করে কেউ ট্যাক্স ফাইল করে, তাহলে তিনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন। যেকোনোভাবেই আইডেন্টিটি চুরি হতে পারে। এ কারণে সতর্ক থাকতে হবে। ইমেইলে ট্যাক্স-সংক্রান্ত তথ্য বা ট্যাক্স ফাইলের কপি না নেওয়াই ভালো। কারণ সেখানে ইমেইল হ্যাক হলে তথ্য চুরি হতে পারে। সে কারণেই যারা পিডিএফ কপি নিতে চান অথবা তারা কপি পেতে চান, তারা যেখানে ট্যাক্স ফাইল করবেন তাদের সিকিউরড সাইট আছে, সেখান থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে তথ্য নিতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, কারও তথ্য চুরি হয়ে থাকলে আইআরএস প্রতিবছর ট্যাক্স ফাইলকারীর জন্য একটি পিন নম্বর ইস্যু করবে। ওই পিন দিয়ে ট্যাক্স ফাইল করতে হবে। এটি ছাড়া ট্যাক্স ফাইল করা যাবে না। বলে রাখা প্রয়োজন, যার জন্য পিন ইস্যু করা হবে, তাকে নিশ্চিত করতে হবে যে তিনি তার যেখানকার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, ওই ঠিকানায়ই তিনি থাকেন অথবা মেইল গেলে তিনি পাবেন। অনেক সময় মানুষ ঠিকানা পরিবর্তন করেন কিন্তু সেটি পোস্ট অফিসে আপডেট করেন না। এ কারণে দেখা যায়, তিনি নতুন ঠিকানায় চিঠি পান না। তাই মনে রাখতে হবে, পরিবর্তিত ঠিকানা অবশ্যই ইউএসপিএসের সঙ্গে আপডেট করতে হবে। না হলে সব চিঠি তিনি নাও পেতে পারেন।

কমেন্ট বক্স