নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও যে মেধা-মনন ও যোগ্যতায় অন্যান্য ভাষাভাষীর যে কারও চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই, তা প্রমাণ করল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মেয়ে জেকে অরণী গুনগুন। ২০২৫ সালে সিসিএনওয়াইয়ের দ্য গ্রোভ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে আর্থ সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে ‘ভেলেডিকটরিয়ান’ উপাধি অর্জন করে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছে সে। শুধু তা-ই নয়, নিজের ডিপার্টমেন্টে সেরা শিক্ষার্থী হওয়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের সব কটি ডিপার্টমেন্ট মিলে সেরাদের সেরা হয়েছে গুনগুন। এই প্রতিষ্ঠানে এবারই প্রথম কোনো বাংলাদেশি মেয়ে এ ধরনের সাফল্য অর্জন করল। তার এই কৃতিত্ব ও সাফল্যে গর্বিত নিজ পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা। গুনগুনের এই অর্জন বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করেছে, কমিউনিটির জন্য বয়ে এনেছে সুনাম। তাই বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষজন তার এই কৃতিত্বে ভীষণ খুশি। তারা গুনগুনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেছেন।
এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি সেকেন্ড মেজর হিসেবে গুনগুন কলিন পাওয়েল স্কুল থেকে সোশিওলজি অর্থাৎ ডাবল মেজর নিয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছে। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো, তারই নেতৃত্বে এ বছর নিউইয়র্ক ওয়াটার এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের স্টুডেন্ট ক্লাব নিউইয়র্ক স্টেটে সেরা ক্লাব নির্বাচিত হয়, যা সিসিএনওয়াইয়ের ইতিহাসে এবারই প্রথম ঘটল। পেন্ডামিকের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই ক্লাবকে গুনগুন নিজ উদ্যোগে পুনরায় চালু করে, যে ক্লাবের চেয়ারপারসনও ছিল সে।
এ ছাড়া একাডেমিক প্রোগ্রামের জন্য ২০২৫ সালের সিসিএনওয়াইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যালামনাই ‘মেডেলিস্ট’ হয়েছে গুনগুন। লিডারশিপ ও রিসার্চ ওয়ার্কের জন্য অ্যানুয়াল ‘কিউনি ক্রেস্ট’ও জিতেছে সে। একই সঙ্গে সিসিএনওয়াইয়ের ২০২৫ সালের এশিয়ান অ্যালামনাই স্কলারশিপও পেয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতি সেমিস্টারে কলেজের ডিন লিস্টেও ছিল গুনগুন।
গুনগুনের বাবা খাইরুল ইসলাম পাখি একাধারে অভিনেতা, উপস্থাপক, শিক্ষক ও রিয়েলটর। আর মা জ্যাকলিন গোমেজ হিউম্যান রিসোর্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে কাজ করেন। গুনগুনের একমাত্র ভাই জেকে রণবীর রাজ্যও কৃতিত্বের সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। মেয়ের সাফল্যে অভিভূত খাইরুল ইসলাম পাখি বলেন, প্রবাসজীবনে আমাদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তিনি মেয়ের এমন সাফল্যযাত্রা অব্যাহত থাকার কামনা করে সবার দোয়া চেয়েছেন।