বাংলাদেশ বুকওয়ার্ম অ্যাসোসিয়েশনের ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘বইপড়া ও সাহিত্য কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভা, ‘লেখকের গল্প সিজন-২’ এর বিশেষ সাক্ষাৎকারের সাফল্য উদযাপন, লেখক-পাঠকদের সম্মাননা প্রদান এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরসংলগ্ন ইস্কাটন রোডের লোক প্রশাসন অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ অবদানের জন্য ৩০ জন লেখক, দেশের সক্রিয় ফেসবুক কমিউনিটি, সামাজিক সংগঠন, বইভিত্তিক সংগঠন, ইনফ্লুয়েন্সার, বুক-রিভিউয়ার ও সাহিত্যানুরাগীদেরকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি, সাহিত্যিক, উত্তর-উপনিবেশবাদী তাত্বিক ও বুদ্ধিজীবী ফয়েজ আলম বলেন, আগে সাহিত্য জিম্মি হয়ে আছিল পত্রিকার সম্পাদক-সাহিত্য সম্পাদকদের হাত। তারা ঠিক করতো কারে লেখক বানাবে, কারে বানাবে না। এখন যে কোন লেখক ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার লেখা সহজেই পড়ুয়াদের কাছে হাজির করতে পারতেছে। এখন দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য পাতার বেইল নাই। এইটা পুরাই একটা বিপ্লব। লেখকরা তাদের বাক-স্বাধীনতা ফিইরা পাইছে।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানের সম্মানিত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোশতাক আহমেদ বলেন, প্রযুক্তির একটা ভালো দিক হলো বর্তমানে পিডিএফে বই পড়তে পারছে মানুষ এবং অডিওবুকও মানুষ সহজে শুনতে পারছে, এখানে প্রযুক্তির অবদান আছে।
বাংলাদেশ বুকওয়ার্ম এসোসিয়েশনের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী নাহিদ বাদশা বলেন, শুধুমাত্র জনপ্রিয় সাহিত্যিকরাই ভালো লিখে, আর বাকিরা লিখতে পারে না এমন টেন্ড প্রচলিত আছে আমাদের সোসাইটিতে। কিন্তু আমরা বেশ ভালো করেই জানি অজনপ্রিয় সাহিত্যিকরাও বেশ ভালো লেখেন। আর সেটাই বুকওয়ার্ম দীর্ঘদিন থেকে দেখানোর চেষ্টা করেছে।
৬ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সাল গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে। সাহিত্যানুরাগীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে বইয়ের সান্নিধ্যে থাকায়। বই নিয়ে নিরন্তর কাজ করায়।
তা ছাড়া অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি মনদীপ ঘরাই বলেন, বইয়ের জগতকে সমৃদ্ধ করতে আমরা অনেকেই অনেকভাবে চেষ্টা করি। কিন্ত চেষ্টা করতে হবে সবাইকে একসঙ্গে একযোগে।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শুনবই-এর প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার হৃদয় এবং অনুষ্ঠানের টাইটেল স্পন্সরে থাকা কেন্দ্রবিন্দুর প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক ওয়াহিদ তুষার।
সুমন, সানজিদা সাফরিন, ফাহাদ হৃদয়, ও রুহির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে আনন্দমুখর। এরই মধ্যে প্রজেক্টরে স্লাইড প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ‘লেখকের গল্প সিজন-২’ ও ‘বুকওয়ার্ম উঠে আসার গল্প’ প্রদর্শন করা হয়। সাহিত্যনুরাগী সকলের উপস্থিতে মুখর হয়ে উঠে শীতের সোনালী সন্ধ্যা।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি শফিকুল ইসলাম, লেখক জোহরা পারুল, গবেষক ইমরান মহফুজ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ‘লেখকের গল্প সিজন-১ ও ২’ এর উল্লেখ্যযোগ্য সম্পাদক ও প্রকাশক নাহিদা আশরাফী, কবি পলিয়ার ওয়াহিদ, কথাসাহিত্যিক শফিক রিয়ানসহ বুক রিভিউয়ার, ইনফ্লুয়েঞ্জার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ বুকওয়ার্ম এসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন হাফিজুর রহমান মনি (কো-ফাউন্ডার), রেহান জিহাদ (সিনেমাটোগ্রাফার ও কো-ফাউন্ডার), প্লাবন কুমার (চিফ অব কন্টেন্ট রাইটিং)। বাংলাদেশ বুকওয়ার্ম এসোসিয়েশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাইমুল ইসলাম, প্রান্ত, মানিক, রাতুল, মেহেদী হাসান মিলনসহ অনেকে।
শেষে প্রহরী ব্যান্ডের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রুপ ছবি এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় এবারের আসরের।
ঠিকানা/এসআর