আবু সেলিম রেজা
আমি একজন সবল পুরুষ; আমি লড়ি-আমি গড়ি,
ধমনিতে আমি সাত পৃথিবীর মানচিত্রকে ধরি।
কালপুরুষের ছুড়ে দেওয়া তারা; ডান হাতে ধরে তাকে-
কপালের ভাঁজে গুঁজে ঠেলে দিই; সবগুলো একে একে।
আমি হাসলেই তারা জ্বলে ওঠে; বিজয়ী শিরস্ত্রাণে-
আমার ক্ষুব্ধ; ক্রোধ হুংকারে-মহাশূন্যের পানে,
তারা খসে ছোটে; ধূমকেতু হয়ে-মুখে আলো; লেজ পোড়ে!
কোনো মেঘ-বারি; ঝঞ্ঝা-বাতাস, তারে না নেভাতে পারে।
আমি সেই চাষি; ফাটা চৌচির মাঠে মাঠে বীজ বুনি,
ভাসমান মেঘে কান পেতে রই; বৃষ্টির গান শুনি।
যুদ্ধের মাঠে; মিনিটের ঘুমে রঙিন স্বপ্ন দেখি,
রংতুলি নেই; কয়লা আঙুলে-জীবনের ছবি আঁকি।
আমি মহারাজা-আমার ভুবন; দিগন্ত প্রসারিত,
মাটি-বায়ু-জল; ভাঙনে-দূষণে, কবলিত কলুষিত।
আমার ছিটানো বীজের ফসল-কাটা; মাড়াইয়ের পর,
মহাজনি ছালা সব নিয়ে যায়Ñআমার শূন্য ঘর!
আমি সেই জন; হে প্রিয়া! তোমার রোগের চিকিৎসায়,
দুইশত টাকা জোগাতে পারি না-এই মত অসহায়।
আমার কলজে দিয়ে দিতে পারি; নিতে পারি ঠোঁটে চুষে,
তোমার রোগের যত অণুকীট-দূষিত রক্ত বিষে।
আমার ফলানো ধান; গম, দুধ, রেশম-পশম, ফল,
অদেখা নগরে; ভাগ্যবানেরা-ভোগ ক’রে ঝলমল।
আমি খালি গায়ে; খালি পায়ে হেঁটে, আমার রাজ্যময়-
ফসলের ডাঁটা কেটে ঘরে আনিÑফসল আমার নয়।
চল্লিশে বুড়ো; পঞ্চাশে মরি-ষাট হলে বেশি বাঁচা,
মারি-খরা; রোগ, শোষণেও বাঁচিÑবাংলাদেশের চাষা।