জঙ্গিদের ‘হিটলিস্টে’ রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ভাতিজি মরিয়ম নওয়াজ শরিফ (৪৯)।
শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজের পাশপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর নামও আছে তালিকায়।
এ দুজনই শুধু নয়, পাকিস্তানের বড় বড় সেনা কর্মকর্তা-গোয়েন্দা এবং প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের ওপরও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে দেশটির নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও তার শাখা দল জামাত-উল-আহরার (জেইউএ)। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (এলইএএস) যানবাহন এবং চেকপোস্টগুলোতেও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
শুক্রবার জামায়াত-ই-ইসলামীর (জেআই) আমির সিরাজুল হক বেলুচিস্তানের জোবে একটি সমাবেশে যাওয়ার সময় তার গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে।
শনিবার জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দল পিএমএল-এন জোটের শরিক দলের এ নেতা কপাল জোরে বেঁচে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই চাঞ্চল্যকর এ তথ্য সামনে আসে।
পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের খবরে আরও বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেহেরিক-ই পাকিস্তানের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতারের পরপরই দেশজুড়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের প্রশংসাসহ ভাঙচুরকারীদের প্রতি তার সমর্থন ঘোষণা করেছেন টিটিপি কমান্ডার সর্বকাফ মোহমান্দ।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বেড়েছে পাকিস্তানে। নিরাপত্তা বাহিনীও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিটিপি জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে কমপক্ষে ২২টি হামলা চালিয়েছে। আর এতে নিহতের সংখ্যা ছিল কমপক্ষে ১০৭ জন। ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে জঙ্গি হামলা ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে ৮৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত অথবা আহত হওয়ারও খবর দেয় সংস্থাটি।
১২৩ পিটিআই কর্মীকে মুক্তির আদেশ : ১২৩ পিটিআই কর্মীকে আটক রাখার আদেশ বাতিল করেছেন লাহোর হাইকোর্ট। আটককৃত কর্মীদের মুক্তি চেয়ে পিটিআই নেতা ফারুখ হাবিবের করা একটি পিটিশনের শুনানিতে শনিবার এই আদেশ জারি করেন লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি আনোয়ারুল হক। ৯ মে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে কারাগারে তাদের রাখা হয়েছিল।
ফয়লাবাদ থেকে গ্রেফতার হওয়া এই কর্মীরা বর্তমানে পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলে আটক রয়েছেন। একই দিনে পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে বলেন, ৯ মে’র বিক্ষোভে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পিটিআই’র ৫০০ জনেরও বেশি নারীকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।
ভাঙচুর-নাশকতা মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ১৩৮টি মামলা রয়েছে। এদিকে ইমরান খানকে গ্রেফতারের দিন (৯ মে) সেনানিবাস-সামরিক স্থাপনায় হামলা, জিন্নাহ হাউজে আগুন লাগিয়ে দেওয়া পিটিআই কর্মীদের বিচারে ৩টি সামরিক আদলত বসাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।
শুক্রবার পাকিস্তানের নিউজ ইন্টারন্যাশনালের এক খবরে বলা হয়ে, সম্পূর্ণ সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ওই আদালতে কঠোর সামরিক আইনেই বিচার হবে অভিযুক্ত বেসামরিক অপরাধীদের। ইতোমধ্যেই এ আদালতের বিচারিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দেশটির প্রায় সব মহলেই।
এ সম্পর্কে এক বিবৃতিতে পাবলিক প্রসিকিউটর রিজওয়ান আব্বাসি জানান, ‘২০১৫ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি (এনএ) কর্তৃক অনুমোদিত হয় আর্মি অ্যাক্টের সংশোধনী বিল। এই সংশোধনী সন্ত্রাসবাদে সন্দেহভাজন বেসামরিক ব্যক্তিদের জন্য সামরিক আদালত স্থাপনের অনুমতি দেয়।’
ঠিকানা/এসআর