পাঁচ মাস আগেও মেজর লীগ সকার (এমএলএস) নিয়ে আলোচনা ছিল না বিশ্ব ফুটবলে। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ের ২৯তম প্রতিযোগিতা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তলানিতে থাকার কথাই। তবে লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেয়ায় লাইমলাইটে চলে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল। দর্শক প্রিয়তা বেড়ে যায় এমএলএসের। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে বিশাল পরিবর্তন আনায় দেশটির সাময়িকী টাইমের বিবেচনায় বর্ষসেরা অ্যাথলেটও নির্বাচিত হয়েছেন মেসি। তবে নেদারল্যান্ডসের কিংবদন্তি রুদ খুলিতের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলের উন্নতিতে ‘মেসি ম্যানিয়া’ যথেষ্ট নয়।
লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে চেয়েছিল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। নিজেদের ইতিহাসের সেরা ফুটবলারকে ফেরানোর প্রচেষ্টা চালায় বার্সেলোনা। সৌদি প্রো লীগের ক্লাব আল হিলাল তো টাকার বস্তা নিয়ে নেমেছিল। ত্রিমুখী চেষ্টাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মেসি যোগ দেন ইন্টার মায়ামিতে। মেসি ম্যানিয়ায় এমএলএসে দর্শকদের ঝোঁক বেড়ে যায়।
শুরু হয় প্রতিযোগিতাটির বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার। বৈশ্বিক গণমাধ্যমগুলোতে নিয়মিত প্রকাশনা শুরু হয় এমএলএসের। তবে ডাচ্ লেজেন্ড রুদ খুলিতের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে মেসি যথেষ্ট নন। দেশটিকে নিজেদেরই তারকা খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে। ১৯৮৮ সালে নেদারল্যান্ডসকে ইউরো জেতানো অধিনায়ক খুলিত বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের নায়ক প্রয়োজন। এটাই আসল কথা। সবশেষ তারা (ক্রিস্টিয়ান) পুলিসিককে পেয়েছে। তবে (পুলিসিকের মানের খেলোয়াড়) নিয়মিত আসছে না। আরো ভালো করতে হলে স্থানীয় খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে।’
নেদারল্যান্ডসের হয়ে ৬৬ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৭ গোল করা খুলিত বলেন, ‘মেসির আগমন আকর্ষণীয় ব্যাপার। কারণ মেসি মেসিই। বিশেষ করে সেখানে (মায়ামিতে) স্প্যানিশ ভাষাভাষীর অনেকে থাকায় তাকে নিয়ে আগ্রহ আরো বেশি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থানীয় খেলোয়াড়দের তারকা বানানো। তাদের এমন একজন খেলোয়াড়ের প্রয়োজন, যে ইউরোপে সত্যিকার অর্থেই ভালো করেছে।’
শুধু লিওনেল মেসি নয়, এমএলএসের দল ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়কের সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ সার্জিও বুসকেটস এবং জর্ডি আলবারা। তবে রুদ খুলিতের মতে, মোটা অংকের টাকা খরচ করে বিশ্বসেরা খেলোয়াড় ভেড়ানোর চেয়ে স্থানীয় খেলোয়াড় তৈরির বিকল্প নেই। রুদ খুলিত বলেন, ‘এটি এমন কিছু, যা তারা প্রথমে বেকহ্যামকে আনার মাধ্যমে করেছিল।’
২০০৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে নাম লেখান সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড এবং বর্তমান ইন্টার মায়ামির মালিক ডেভিড বেকহ্যাম।
খুলিত বলেন, ‘এটা (বেকহ্যামের সংযুক্তি) যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছিল। এবার মেসিকে নিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শিশুদের বলার জন্য নিজেদের নায়ক প্রয়োজন।’
ঠিকানা/এসআর


ঠিকানা অনলাইন


