গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ বেসামরিক আর তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। গাজায় দুই মাস ধরে চলা ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় ১৭৯৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪৯২২৯ জন আহত হয়েছে, জানিয়েছে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যানের সঙ্গে এর আগে দ্বিমত পোষণ করেছিল, কিন্তু জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা ওই তথ্যকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েল প্রথমে জানিয়েছিল। এরপর নিহতের সংখ্যা ১২০০ বলে জানায় তারা। এখন হিসাব আরও সংশোধন করে তারা ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১৪৭ জন আর আহত ৮৭৩০ বলে জানিয়েছে।
৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। প্রথমে তারা গাজার উত্তরাংশে গাজা সিটি ও এর আশপাশের অন্যান্য এলাকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তখন গাজার দক্ষিণাংশকে নিরাপদ ঘোষণা করে উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণে চলে যেতে বলে।
এরপর গাজা সিটিসহ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ইসরায়েলি বাহিনী। ব্যাপক প্রাণহানির মধ্যে গাজা সিটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে স্থল অভিযান চালায়। এরপর কাতার ও মিশরের প্রচেষ্টায় এবং যুক্তেরাষ্ট্রের সমর্থনে ইসরায়েল ও হামাস এক সপ্তাহের একটি অস্থায়ী ‘মানবিক বিরতি’তে সম্মত হয়ে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে।
১ ডিসেম্বর ওই বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই দুইপক্ষের মধ্যে ফের সংঘাত শুরু হয়ে যায়। এই পর্যায়ে ইসরায়েল গাজার দক্ষিণাংশে ব্যাপক হামলা শুরু করে। এই অংশের প্রধান শহর খান ইউনিস হয় তাদের প্রধান লক্ষ্যস্থল। তবে এ সময় গাজার উত্তরাংশেও হামলা অব্যাহত রাখে তারা।
গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ বেসামরিক আর তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
সর্বশেষ সোমবার ভোররাত থেকেই খান ইউনিস ও রাফায় তীব্র বোমাবর্ষণ করে চলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেশ কয়েকটি বাড়িতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৯ ও ১০ ডিসেম্বর ইসরায়েলি সেনারা গাজার উত্তরাঞ্চলে আশ্রয়ের খোঁজে থাকা কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিন খান ইউনিসে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইরত ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকগুলো আরও পশ্চিম দিকে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু ব্যাপক প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
৭ অক্টোবর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধ দুই মাস পার করে এখন তৃতীয় মাসে গড়িয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ঠিকানা/এসআর


ঠিকানা অনলাইন


