Thikana News
২৫ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

অনয় ও ঘাসফড়িংয়ের লুকোচুরি

অনয় ও ঘাসফড়িংয়ের লুকোচুরি
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ


মৃদু হাওয়া হেমন্তের মিষ্টি রোদে উদাস দুপুরে বাড়ির আঙিনায় অনয় ও ঘাসফড়িংয়ের লুকোচুরি খেলা। রাস্তার দু’পাশে সবুজ পাতার সোনালি ধান। ঘাসফড়িং উড়ে বেড়ায় মনের আনন্দে। কখনো সোনালি ধানের ডগায় আবার কখনো ডানা মেলে উঁচু-নিচু হয়ে ঢেউ খেলে। অনয় রোজ রোজ ধানখেতের আইলে বসে ঘাসফড়িং ধরার চেষ্টা করে। যখনই ফড়িং উড়ে এসে ধানের সবুজ পাতার ওপর বসে, তখনই অনয় চুপি চুপি ধরার চেষ্টা করে। ফড়িংও খুব চালাক, যখনই কোনো আক্রমণের আভাস পায়, তখনই উড়ে যায়। আবার ফড়িং যখন শূন্যের ওপর উড়ে বেড়ায়, তখন অনয় সবুজ পাতার নিচে চুপটি করে বসে থাকে ফাঁদ পেতে থাকে কখন আবার ঘাসের ডগায় বসবে। অনয় বারবার চেষ্টা করে ঘাসফড়িং ধরতে সক্ষম হয় না। অনয় ক্লান্ত হয়ে খেতের আইলে বসে মাথায় বুদ্ধি জোগাড় করে কীভাবে ফড়িং ধরা যায়।

অবশেষে অনয়ের মাথায় একটি বুদ্ধি এল, গায়ের গেঞ্জি খুলে মাথার উপর দিয়ে হাতে কতগুলো সবুজ ঘাস উঠিয়ে নিয়ে মূর্তি সেজে দাঁড়িয়ে থাকবে, বোকা ঘাসফড়িং খেতে সবুজ ঘাস মনে করে উড়ে এসে বসবে, তখনই তাকে সহজে ধরতে পারবে। অনয় নড়াচড়া না করে পুতুলের মতো নিঃশব্দে নীরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অবশেষে ঘাসফড়িং উড়ে এসে যখন হাতে ঘাসের ওপর বসল, তখনই অনয় আরেক হাত দিয়ে মুঠ করে ঘাস ফড়িংকে চেপে ধরল। তারপর অনয় একটু স্বস্তি নিয়ে বসে পড়ল। অনয় ঘাসফড়িংকে শক্ত হাতে চেপে ধরে বলল, এই যে ঘাসফড়িং বন্ধু, এবার কী করবে, অনেক লুকোচুরি খেলেছ, আমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে দৌড়েছ, এবার কোথায় যাবে আর তোমাকে ছাড়ব না। অনয় সুতা দিয়ে ঘাসফড়িংকে শক্ত করে বেঁধে দিল, যাতে করে আর উড়াল না দিতে পারে। তোমার পিছু অনেক ছুটছি, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছি, কখন তোমাকে ধরব। 

অনয় সুতা হাতে রেখে ঘাসফড়িংকে ওড়ার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। ফড়িং কিছুতেই উড়ে দূরে যেতে পারছে না। অনয় ফড়িংকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে চলে গেল এবং সুতা বেঁধে গাছের ডালে বসিয়ে দিল। ঘাসফড়িংয়ের খাবার কীভাবে জোগাড় করা যায়, সে ভাবনা মনে গেল অনয়ের। যদি খাবার না দেওয়া হয়, তাহলে ঘাসফড়িংকে বাঁচানো দায়। তাই অনয় বাড়ির আঙিনা থেকে কিছু ঘাস ছিঁড়ে এনে বাড়ির উঠোনের পাশে মাটিতে পুঁতে দিল, যাতে করে ফড়িং বুঝতে পারে আমি তাকে ঘাসখেতে নিয়ে এসেছি।

ঘাসফড়িং বন্দী হয়ে নিজেকে অসহায় ভাবতে লাগল। খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিল। অনয় ঘাসফড়িংয়ের পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, ভেঙে পড়ো না বন্ধু, আমি তো আছি, তোমাকে মারব না। শুধু তোমার বন্ধু হয়ে খেলা করার জন্য ধরেছি। ঘাসফড়িং, তুমি আমার বন্ধু হও, তাহলে তোমাকে ছেড়ে দেব। ঘাসফড়িং অনয়ের মানবতা দেখে চিন্তামুক্ত হলো আর যা-ই হোক আমাকে মারবে না। এক দিন, দুদিন পর ঘাসফড়িং অনয়ের বন্ধু হলো। যখনই অনয় ফড়িংয়ের কাছে আসে, তখনই ফড়িং উড়ে এসে অনয়ের হাতে বসে। অনয় ও ঘাসফড়িং ভালো বন্ধুত্বের উদাহরণ।

কমেন্ট বক্স