যুক্তরাষ্ট্রে আবার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে যাচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কে জিতবেন- বাইডেন নাকি ট্রাম্প? পরিসংখ্যান বলছে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। জিতে যেতে পারেন ট্রাম্পও। তবে এই দুজন আবার নির্বাচন করেন- তা চায় না দেশটির বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু এরই মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার টুইটারে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের হয়ে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন জো বাইডেন। এ নির্বাচনে জয় পেলে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন বাইডেন।
অন্যদিকে ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই রিপাবলিকানদের হয়ে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেই এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে। তিনি নিকি হ্যালি, মাইক পেন্স এবং টিম স্কটের মতো বর্তমান ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের চেয়ে ডবল ডিজিটের পোলিং ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তবে তিনি বেশ কয়েকটি বিতর্কের মুখে রয়েছেন। সাবেক পর্ন তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার একটি মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ সালের নির্বাচনের পরাজয়ের পর ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডবের ঘটনায় তাঁকে নিয়ে তদন্ত চলছে।
দুজনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এমনটাই ফুটে উঠেছে। কোনো কোনো জরিপে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্পই এগিয়ে রয়েছেন।
টুইটারে বাইডেন লিখেছেন, ‘প্রত্যেক প্রজন্মের একটি সময় আসে যখন তাদের গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়াতে হয়। তাঁদের মৌলিক স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়াতে হয়। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সময়টা এখন। এ কারণেই আমি আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। আসুন কাজটা শেষ করি।’
২০২০ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রথম দুই বছর প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনকে বড় কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি। নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে বাইডেনের বদলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার মতো কেউ আপাতত আলোচনায় নেই। তবে কিছুটা সমস্যা হয়ে উঠতে পারে তাঁর বয়স।
বাইডেনের বর্তমান বয়স ৮০ বছর। সে হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তাঁর বয়স হবে ৮৬ বছর। যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বাইডেনকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালনের জন্য ‘সক্ষম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁর নিজের ভোটের ঘাঁটি অঞ্চলসহ অনেকে মনে করেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি একটু বেশিই বয়স্ক।
সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বাইডেনের আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ঠিক হবে না। তাঁদের মধ্যে ৫১ শতাংশ ডেমোক্রেটিক দলের সমর্থক। আর জরিপে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ মানুষ বয়সের কারণে বাইডেনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার পক্ষে রায় দিয়েছেন।
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে বাইডেনের হাতে এখনো দেড় বছর সময় আছে। এ সময়টা তিনি নিজেকে আরও গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। আর তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও বেশ শক্তপোক্ত। তবে ভিন্ন চিত্র বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দলটি অতটাও গুছিয়ে উঠতে পারেনি।
এদিকে গত ২৪ এপ্রিল সোমবার এক বিবৃতিতে বাইডেনের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে এমন একটি দুর্দশাপূর্ণ ও ব্যর্থ সময় পার করার পর, এটা কল্পনাও করা যায় না যে বাইডেন আবার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা মাথায় আনবেন।’
গত ২৯ মার্চ প্রকাশিত নিবন্ধিত ভোটারদের সাম্প্রতিক কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটির পোল অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনে ৫৬ শতাংশ বাইডেনকে এবং ৫৮ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পকে চান না।
তবে ট্রাম্পের মতো প্রার্থীর বিরুদ্ধে বাইডেনের অজনপ্রিয়তা কোন ব্যাপার না। জরিপ বলছে, সাধারণ নির্বাচনে ট্রাম্পের চেয়ে দুই পয়েন্ট বেশি ভোট পাবেন বাইডেন।
এদিকে, গত ২১ এপ্রিল শুক্রবার প্রকাশিত একটি হার্ভার্ড/হ্যারিস জরিপ দেখায় যে, সম্ভাব্য সাধারণ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্প বাইডেনের চেয়ে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন।