দীর্ঘ পৌনে চার বছর পর গত ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতাল পালন করেছে সরকারকে হটানোর এক আরও কঠোর কর্মসূচির দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি। হরতালের পর এক দিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, টানা অবরোধ কর্মসূচি শেষে তারা আরও শক্ত কর্মসূচির দিকে যাবে। তাদের প্রথম সারি ও দ্বিতীয় সারির নেতারা আটক হবেন, এটি তারা আগেই ধরে নিয়েছে। তাই তৃতীয় সারির নেতাদের দিয়ে তারা প্রয়োজনে দল পরিচালনা করবে। সরকারকে যেভাবে ধাক্কা দেওয়া যায়, সেভাবেই তারা রাজপথে অবস্থান করবে। হামলা-মামলা-মৃত্যু সেগুলোর আশঙ্কা আগে থেকে করেই আন্দোলনের ছক তৈরি করা হয়েছে। তাই আটক নিয়ে কেউ বিচলিত নয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিস্থিতির আলোকে ধাপে ধাপে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এই কর্মসূচি চলতে থাকবে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। নভেম্বরের যেকোনো সময় ঘোষণা হতে পারে নির্বাচনের তফসিল। ফলে নভেম্বর, ডিসেম্বর পুরো দুই মাস এবং জানুয়ারির প্রথম কয়েকটি দিন বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আন্দোলন করে যেতে হবে। তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির পর আরও কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বিএনপির। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করেছিল দলটি। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় আন্দোলন সফল করতে না পারায় এর ফল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। এবারও দলটির ‘ফোকাল পয়েন্ট’ ছিল রাজধানী ঢাকা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দলের সিনিয়র নেতারাও বলেছেন, এবার আন্দোলন হবে ঢাকাকেন্দ্রিক। কিন্তু হরতাল ও তিন দিনের অবরোধের ঘোষণা দিয়ে তারা পুরোনো ছকেই ফিরল। ঢাকাকেন্দ্রিক আন্দোলনকে সারা দেশে নিয়ে গেল। যদিও দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং শরিকদের ভাষ্য, স্রেফ কৌশলের অংশ হিসেবে তারা এ পথ নিয়েছেন। তাদের নজর এখনো রাজধানীতেই। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলেছেন, বিএনপির জন্য অবরোধ কর্মসূচি নতুন নয়। আগেও দলটি টানা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। তবে সেটি আট বছরেরও বেশি সময় আগে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর ২০১৫ সালে ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ পালিত হয়েছিল। অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে সারা দেশে কর্মসূচি পালন নিয়ে তারা খুব একটা চিন্তিত নন। চিন্তা ঢাকার আন্দোলন নিয়ে। নেতারা বলেছেন, সারা দেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সরকার ঢাকায় এনে রেখেছে। তাই সারা দেশে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার কৌশলে বিএনপিকে ডেকে এনে ফায়দা তুলতে চেয়েছে, এখন বিএনপি কৌশলে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়েছে। তবে রাজধানীর আন্দোলনে সফলতাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, এবারের কর্মসূচি পালনে সচেষ্ট নেতারা। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোকে ঢাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার ওপর তারা জোর দিয়ে কাজ করছেন। বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছে সমমনা দলগুলোও। তারাও যথাসম্ভব মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছে।
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা রিপোর্ট
 ঠিকানা রিপোর্ট  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
