Thikana News
২২ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

নিউইয়র্ক ছাড়তে চায় এক-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা

নিউইয়র্ক ছাড়তে চায় এক-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা
ঠিকানা রিপোর্ট : পৃথিবীর রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক ছাড়তে উদগ্রীব এর এক-তৃতীয়াংশ বাসন্দিা। বলা যায় নিউইয়র্ক থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান তারা।     অপরাধ, আকাশচুম্বী আবাসন খরচ এবং স্কুল অব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয় নিয়ে নিউইয়র্কবাসী এতটাই চিন্তিত যে তাদেও অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অন্যত্র চলে যেতে চান। গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানানো হয়, রাজ্যের ২৭ শতাংশ বাসিন্দা বলেছেন যে তারা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে অন্যত্র সরে যেতে চান।
সিয়েনা কলেজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জীবনমানের জরিপ অনুসারে, আশ্চর্যজনক হলেও ৩০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে তারা ইতিমধ্যেই অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করতে চেয়েছিলেন। রাজ্য ছেড়ে পালাতে চাওয়ার কারণ হিসেবে তারা অযোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং বর্ধিত ট্যাক্সকে দোষারোপ করেছেন।
প্রায় এক তৃতীয়াংশ (প্রায় ৩১ শতাংশ) বাসিন্দা  অবসর গ্রহণ করলে এম্পায়ার স্টেট ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এর চেয়েও বেশি সংখ্যক বাসিন্দা বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে এ রাজ্য বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ নয়।
ইস্ট হারলেমের ৩৮ বছর বয়সী অ্যাঞ্জেলা গুতেরেস নিউইয়র্কবাসীদের একজন যিনি শিগগিরই রাজ্যটি ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
হোম হেলথ এইডকর্মী এবং তিন সন্তানের মা অ্যাঞ্জেলা বলেন, ‘আমরা এ মাসের শেষেই পেনসিলভানিয়া চলে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গত ৩ বছরে দুবার সরেছি! আমরা ব্রঙ্কস থেকে এখানে চলে এসেছি। এখানে কিছুটা ভালো কিন্তু এখনো নিরাপদ নয়। তিনি জানান, ‘সব পাগল মানুষ’ তার পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেনি, ‘সবকিছুই ব্যয়বহুল। তারা আবার ভাড়া বাড়াচ্ছে এবং আমরা আর পারছি না। মাসে প্রায় ৮০০ ডলার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। তাই আমার ননদ যেখানে থাকেন সেখানে আমরা চলে যাচ্ছি।’
৪০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, নিউইয়র্ক শিশুদের লালন-পালনের জন্য ভালো জায়গা নয়। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এই  উত্তরদাতাদের মধ্যে শতকরা ৬১ ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ।  আর ২৬ শতাংশ বলেছেন যে শিক্ষার সামগ্রিক মান চলনসই বা তার চেয়েও খারাপ। কারণ আরও চার্টার স্কুল খোলার বিষয়ে রাজ্যব্যাপী বিতর্ক চলছে। 
গত ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মার্কিন আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, আমেরিকায় গত অর্থবছরে নিউইয়র্ক সিটির পাঁচটি কাউন্টির মধ্যে তিনটি - কুইন্স, ব্রুকলিন ও ব্রঙ্কসে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। শুধুমাত্র ম্যানহাটন কোভিড-পরবর্তী প্রবণতা ধরে রেখেছে।
ওয়েস্টচেস্টার, সাফোক ও নাসাউসহ অনেক শহরতলি ও আপস্টেট কাউন্টিগুলোতেও জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। 
সমীক্ষার উত্তরদাতারা জানান, তারা নিম্নলিখিত কারণে চলে যেতে চান:
ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, কুইন্সে ২০২২ সালে নাটকীয়ভাবে জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। তবে ম্যানহাটন পুনর্গঠিত হয়েছে।
৬৭ শতাংশ বাসিন্দা বলেন, নিউইয়র্ক সাশ্রয়ী মূল্যের নয়, যেখানে মাত্র ৩৩ শতাংশ বলেন যে এটি ছিল।
অপরাধ থেকে নিরাপদ বোধ করেন কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা নিউইয়র্ককে চলনসই বা কম রেট দিয়েছেন। শুধুমাত্র ৫১ শতাংশ ভালো বা চমৎকার উত্তর দিয়েছেন। তারা জানান, নিউইয়র্কের বেইল ও ডিস্কভারি আইন শিথিল করায় মহামারি চলাকালে অপরাধ বেড়েছে।
৬০ শতাংশ বলেছেন, নিউইয়র্ক অবসর নেওয়ার জন্য একটি ভালো জায়গা নয়, মাত্র ৩৮ শতাংশ এর পক্ষে মত দেন।
৫৭ শতাংশ বলেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা তাদের জন্য কাজ করে না, তবে ৩৮ শতাংশ বলেছে যে এটি কাজ করে। 
৬০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, নিউইয়র্ক সন্তানকে বড় করার জন্য একটি ভালো জায়গা, তবে ৩৯ শতাংশ এর বিপক্ষে মত দেন। 
প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা নিউইয়র্কের জীবনযাত্রার মানকে নেতিবাচকভাবে এবং ৬৭ শতাংশ ইতিবাচকভাবে রেট করেন।
প্রায় ৪০ শতাংশ বাসিন্দা নিউইয়র্কের পরিবেশগত গুণমানকে খারাপভাবে এবং ৬০ শতাংশ ইতিবাচকভাবে রেট করেন।
সামগ্রিকভাবে, নিউইয়র্ক দেশের সবচেয়ে বেশি সম্মিলিত করের বোঝার মধ্যে রয়েছে। গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেন, আবাসন খরচ বেশি হওয়ায় লোকজন অন্যত্র চলে যাচ্ছে এবং এই বহির্গমন রোধ করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
একজন নীতি বিশ্লেষক বলেছেন, নিউইয়র্কের উচ্চাভিলাসী রাজনৈতিক নেতারা রাজ্য থেকে মানুষের পালিয়ে যাওয়ার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী।

কমেন্ট বক্স