বিএনপি এখন তাদের সঙ্গেই বৈঠক করছে যারা গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। যারা বিভিন্নভাবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ ছিল রাজপথে। এতে একপর্যায়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিকেও (এনসিপি) ‘ডাকা হতে পারে’। এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে তিনি আরো স্মরণ করিয়ে দিলেন, এনসিপি এখনো নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত কোনো দল নয়। তারা নিজেদের ইশতেহার, কর্মসূচি কিছুই ঘোষণা করেনি। দলটি এখনো সেভাবে রাজনৈতিক সংগঠন হয়ে ওঠেনি, সামাজিক শক্তি হিসেবেই আছে- এমনটি মনে করছেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক।
২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার টকশোটিতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এই অনুষ্ঠান। ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন যেখানে বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতির নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন দুই অতিথিকে।
নিবন্ধিত নয় এমন কিছু দলও বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠকে অংশ নিয়েছে বলে দাবি করলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। তার ভাষ্যমতে, ‘আমরা সব দলকেই সম্মান করি। কিন্তু বিএনপির মধ্যে এনসিপিকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা আছে। আমরা নতুন রাজনৈতিক ধারা তৈরি করতে চাই। আমরা অভিজ্ঞ দলগুলোর কাছ থেকে আরো উদারতা আশা করছি।’
বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠকের সমালোচনা করে আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বৈঠকের মাধ্যমে বিএনপি অন্যান্য দলকে নিজেদের বলয়ে নিতে চায়। যারা তাদের সুরেই ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে সরকারকে চাপ দিবে। ঐকমত্য কমিশনেও বিএনপির মতো করেই সংস্কারের কথা বলবে।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মধ্যে অনাগ্রহ আছে, এই দাবি করলেন বিএনপি নেতা আজিজুল বারী হেলাল। তিনি বলছেন, ‘সংস্কার নিয়ে এনসিপি যতটা উচ্চস্বর, নির্বাচন দ্রুত হওয়ার বিষয়ে তারা ততটাই নিরব। অথচ এখনো পর্যন্ত কোনো সংস্কারই দৃশ্যমান হলো না।’
তিনি আরো যোগ করেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কেমন যেন একটা ‘ধোঁয়াশা’ তৈরি করে রাখতে চাইছে। ড. ইউনূস সরকার কী দলগুলোর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে চাইছে? এই প্রশ্ন তুললেন আজিজুল বারী হেলাল।
রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব কম দিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক তৎপরতা কেন শুধু নির্বাচনমুখী- এ বিষয়টি সামনে এনে এনসিপি নেতা আরিফুল ইসলাম আদীব বললেন, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চাই- বিএনপি এটা ছাড়া আর কিছু নিয়ে তেমন কথা বলছে না। আর এনসিপি এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায়, যেখানে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন হবে। এজন্যই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা জরুরি।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘নির্বাচনের সময়সমীমা নিয়ে এনসিপি থেকে আমরা কোনো বক্তব্য দেইনি। তবে সরকার থেকে এই বছরের ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের জুন- যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’